ব্যাংককের ইএসসিএপি অধিবেশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ
Published: 21st, April 2025 GMT
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইএসসিএপি) ৮১তম অধিবেশন আজ ব্যাংককের জাতিসংঘ সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হয়েছে।
‘এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরে স্থিতিশীল এবং টেকসই নগর উন্নয়নের জন্য আঞ্চলিক সহযোগিতা’ দ্বারা পরিচালিত এই অধিবেশনে ৫৩টি সদস্য রাষ্ট্র এবং ৯টি সহযোগী সদস্য অংশ নিচ্ছে।
বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) ড.
অধ্যাপক ইউনূস তার বক্তব্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং জলবায়ু-সহনশীল নগর উন্নয়নের প্রতি বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন, দেশের সংস্কার যাত্রা এবং ‘থ্রি জিরো ভিশন’ - শূন্য সম্পদ কেন্দ্রীকরণ, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য নেট কার্বন নির্গমনের উপর জোর দেন।
অধ্যাপক ইউনূস আরো বলেন, জলবায়ু এবং নগর সমস্যাগুলো মোকাবিলা করতে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে এবং দেশগুলোকে তরুণদের সম্ভাবনা এবং উদ্ভাবনকে কাজে লাগিয়ে একটি টেকসই ভবিষ্যৎ গঠনের আহ্বান জানান। তিনি বিশ্বাস করেন, উদ্ভাবনী সমাধান এবং ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে এসডিজি অর্জন সম্ভব।
ইএসসিএপি অধিবেশনটি বাংলাদেশকে তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার, সহযোগিতা গভীর করার এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং রূপান্তরমূলক নগর সমাধানের মাধ্যমে ২০৩০ সালের টেকসই উন্নয়ন এজেন্ডা অর্জনের জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞা পুনঃব্যক্ত করার একটি কৌশলগত প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে।
সপ্তাহব্যাপী এই অনুষ্ঠানে প্রতিনিধিদলটি গুরুত্বপূর্ণ মতামত প্রদান এবং মূল্যবান অংশীদারিত্ব গড়ে তুলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ঢাকা/হাসান/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।