রিয়ামণির মতো স্মার্ট মেয়ে কী কারণে হিরো আলমকে বিয়ে করেছিল
Published: 21st, April 2025 GMT
কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলমের বাবার মৃত্যুর পর স্ত্রী রিয়া মনিকে বয়কটের ঘোষণা দেন। এরপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে নেটিজেনরা নানা আলোচনা সমালোচনা করছেন। এই বিষয় নিয়ে ফেসবুকে এক পোস্টে তসলিমা নাসরিন স্ত্রীর সঙ্গে হিরো আলমের ভুল বোঝাবুঝিকে ‘পুরুষতান্ত্রিকতা’ অ্যাখ্যা দিয়ে কটাক্ষ করেছেন।
রাইজিংবিডির পাঠকদের জন্য তসলিমা নাসরিনের পোস্টটি হুবহু পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
“মাঝে মাঝে ভাবি রিয়ামণির মতো স্মার্ট মেয়ে কী কারণে হিরো আলমের মতো একটা লোককে বিয়ে করেছিল! হিরো আলমের টাকা আছে বলে? ভেবেছিলাম অন্য কোনও গুণ না থাকলেও একটি গুণ হিরো আলমের হয়তো আছে, মেয়েদের হয়তো ব্যক্তি হিসেবে সম্মান করে সে। প্রচুর মানুষের সঙ্গে মিশেছে সে, তার নাম হয়েছে, তার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। হয়তো জীবন সম্পর্কে ধারণা এখন আগের চেয়ে স্পষ্ট হয়েছে, হয়তো যতটা উদার ছিল, সংবেদনশীল ছিল, তার চেয়ে আরও বেশি হয়েছে।”
আরো পড়ুন:
হিরো আলমকে মারধর, ৫ আসামি পেলেন জামিন
আদালত চত্বরে মারধর: থানায় অভিযোগ দিলেন হিরো আলম
“কিন্তু দেখলাম আমি ভুল ভেবেছিলাম। রিয়ামণির বিরুদ্ধে যেভাবে সে নোংরা ভাষায় কথা বলছে, যেভাবে তাকে হেয় করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে, যেভাবে তাকে হিংস্র আক্রমণ করছে, কট্টর পুরুষতান্ত্রিক না হলে করা যায় না। রিয়ামণি যেহেতু স্বামীর অনুমতি ছাড়া ঘরের বাইরে গিয়েছে, যেহেতু স্বামীর অনুমতি ছাড়া অন্য কারও সঙ্গে ভিডিও বানিয়েছে, যেহেতু হাসপাতালে গিয়ে স্বামীর বাবার সেবাযত্ন করেনি, যেহেতু তার বাবার পাশে বসে থাকেনি রাত দিন, যেহেতু বাবার মৃত্যু হলে শিয়রে বসে অঝোরে কাঁদেনি, সেহেতু হিরো আলম জানিয়ে দিয়েছে রিয়ামণির মতো স্ত্রী সে চায় না। এমন চরম নারীবিদ্বেষী চরিত্রকে লোকে বাহবা দেবে, তার কাছ থেকে শিখবে যে স্ত্রী মানেই চাকরানী, স্ত্রী মানেই দাসি। শিখবে, স্ত্রীর দায়িত্ব স্বামী এবং স্বামীর আত্মীয় স্বজনকে সেবা করা, স্বামীর অনুমতি ছাড়া ঘরের বাইরে না বেরোনো, নিজের ইচ্ছে ছুড়ে ফেলা, নিজের কাজ পণ্ড করা, নিজের জীবন বিসর্জন দেওয়া। হিরো আলম জনগণকে শেখাচ্ছে যে স্বামী পরকীয়া করলেও স্ত্রীকে পতিব্রতা স্ত্রী হিসেবে স্বামীর আদেশ নির্দেশ পালন করতে হবে, কারণ স্বামী হলো প্রভু, আর স্ত্রী জিনিসটি দাসি শুধু নয়, ক্রীতদাসী।”
“রিয়ামণি, আমার বিশ্বাস, এই নোংরা নারীবিদ্বেষী সমাজে পাছে লোকে কিছু বলের তোয়াক্কা না করে নিজের পরিচয় নিয়ে, নিজের যোগ্যতায় মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।”
তসলিমা নাসরিনের ফেসবুক পোস্ট
এর আগে বাবার মৃত্যুর সময় পাশে না থাকার অভিযোগ তুলে স্ত্রী রিয়ামণির সঙ্গে সংসার না করার ঘোষণা দেন হিরো আলম। তার অভিযোগ, মুমূর্ষু বাবাকে নিয়ে তিনি হাসপাতালে প্রায় এক মাস অবস্থান করলেও স্ত্রী রিয়ামণি বাবাকে দেখতে আসেননি, বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে লাশও দেখতে আসেননি।
গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর একটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলমের পালক বাবা আবদুর রাজ্জাক মারা যান। গত বুধবার বগুড়ার এরুলিয়ায় জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়। এরপর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে স্ত্রী রিয়ামণিকে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বয়কটের ঘোষণা দেন। এ নিয়ে রিয়ামণি গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হিরো আলমকে পাল্টা দোষারোপ করায় বৃহস্পতিবার দুপুরে বগুড়ার নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে স্ত্রী রিয়ামণির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলেন হিরো আলম।
ঢাকা/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হ র আলম র য় মণ র আলম র
এছাড়াও পড়ুন:
পেশায় বাসচালক, আড়ালে করেন ইয়াবার কারবার
আট বছর ধরে গাড়ি চালানোর পেশায় আছেন মো. শাহীন। প্রথমে চালাতেন ট্রাক, এখন যাত্রীবাহী বাস। তবে এটা তার মূল কারবারের আড়াল মাত্র। বাস চালানোর আড়ালে তিনি কক্সবাজার থেকে ঢাকায় আনেন ইয়াবার বড় চালান। প্রতি চালানে ১০–২০ হাজার পিস ইয়াবা থাকে। এগুলো পৌঁছানোর বিনিময়ে তিনি পান মোটা অঙ্কের টাকা। প্রতি মাসে গড়ে ছয়টি চালান এনে তিনি অন্তত ছয় লাখ টাকা পান। ফলে লাভজনক এ কারবারে তিনি আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গেছেন।
সম্প্রতি রাজধানীর পূর্ব রামপুরা এলাকা থেকে বাসচালক শাহীন ও সুপারভাইজার সঞ্জিত রাজবংশীকে গ্রেপ্তার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। ওই সময় বাসটিতে তল্লাশি চালিয়ে ১৫ হাজার ৬০০ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়। এই চালানটি ঢাকার গাবতলী এলাকায় পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল বলে জানা গেছে।
ডিএনসি ঢাকা মহানগর উত্তরের উপপরিচালক শামীম আহম্মেদ জানান, আন্তঃজেলা বাসের চালক–হেলপারদের একটি অংশ মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়েছে। এ কারণে বিভিন্ন রুটের পরিবহনকর্মীদের মাদকসংশ্লিষ্টতার তথ্য পেতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়। এরপর গোপন তথ্যের ভিত্তিতে কক্সবাজার থেকে আসা শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস পূর্ব রামপুরার মোল্লা টাওয়ারের সামনে থামানো হয়। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদে চালক ও সুপারভাইজার স্বীকার করেন, তাদের কাছে মাদকদ্রব্য আছে। এরপর তাদের দেখানো অনুযায়ী চালকের আসনের নিচ থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছেন ডিএনসি ধানমন্ডি সার্কেলের পরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুন।
ডিএনসি ঢাকা মহানগর উত্তরের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, শাহীনের ভাষ্য অনুযায়ী, দুই বছর ধরে তিনি বাসে মাদক পরিবহনের কাজ করেন। এর আগে ট্রাক চালানোর সময় অন্য চালকদের মাধ্যমে এ কারবারের বিষয়ে জানতে পারেন। পরে টেকনাফের মাদক কারবারিদের সঙ্গে তার যোগাযোগ ও সখ্য গড়ে ওঠে। তিনি প্রতি ১০ হাজার পিস ইয়াবা ঢাকায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য আনুমানিক এক লাখ টাকা করে পান। এবারের চালানের জন্য পেতেন দেড় লাখের কিছু বেশি। তবে পৌঁছানোর আগেই তিনি ও তার সহযোগী ধরা পড়েন।
অভিযান সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইয়াবার চালানের প্রেরক ও প্রাপকসহ আরও কয়েকজনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। তাদের গ্রেপ্তার করা গেলে পুরো চক্রটিকে শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।