নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় ২৪ হাজার টাকার জাল নোটসহ মো. নুর আলম (৩৫) নামের কৃষক দলের স্থানীয় এক নেতাকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন দোকানিরা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার আবদুল্লাহ মিয়ার হাট বাজার থেকে তাঁকে আটক করা হয়।

মো. নুর আলম নোয়াখালী সদর উপজেলার ১৯ নম্বর পূর্ব চর মটুয়া ইউনিয়নের পূর্ব চর মটুয়া গ্রামের মো.

ইব্রাহিমের ছেলে। তিনি ইউনিয়ন কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক। তাঁর কৃষক দলের পদে থাকার বিষয়টি পূর্ব চর মটুয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নুরুল হুদা প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাতে আবদুল্লাহ মিয়ার হাট বাজারের একটি মুদিদোকান থেকে সুজি কিনে এক হাজার টাকার একটি নোট দেন নুর আলম। দোকানদারের কাছ থেকে অবশিষ্ট টাকা ফেরত নিয়ে তিনি দ্রুত চলে যান। দোকানদার সন্দেহবশত এক হাজার টাকার নোটটি পরীক্ষা করে দেখেন, এটি জাল। এরপর তিনি আশপাশের দোকানিদের বিষয়টি জানান। এ সময় দোকানিরা জড়ো হয়ে বাজারের একটি রাস্তা থেকে নুর আলমকে আটক করলে তিনি জাল নোট দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। তাঁর কাছে আরও ২৩ হাজার টাকার জাল নোট পাওয়া যায়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ নুর আলমকে থানায় নিয়ে যায়।

চর জব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহিন মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, রাতে নুর আলমের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। মামলাটিতে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ শুক্রবার তাঁকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। জাল নোট চক্রের সঙ্গে কারা জড়িত, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র আলম

এছাড়াও পড়ুন:

কারাবন্দী সাংবাদিক মনজুরুল আলমকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান আরএসএফের

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাবন্দী সাংবাদিক মনজুরুল আলমকে (পান্না) অবিলম্বে বিনা শর্তে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ)। সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা বৈশ্বিক সংগঠনটি বলেছে, মনজুরুল আলমের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় আনা ‘মিথ্যা অভিযোগ’ অবশ্যই প্রত্যাহার করতে হবে।

মঙ্গলবার আরএসএফের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মনজুরুল আলম ‘মানচিত্র’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা করেন। গত ২৯ আগস্ট ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধান নিয়ে আয়োজিত একটি গোলটেবিল বৈঠকে তাঁকে কথা বলার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সেখান থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আরএসএফের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণে কাজ করা ‘মঞ্চ ৭১’ নামের নাগরিক সমাজের একটি প্ল্যাটফর্ম ওই বৈঠকের আয়োজন করেছিল। হঠাৎ একদল ব্যক্তি সেখানে ঢুকলে পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ‘সহানুভূতিশীল’ বলে অভিযোগ তোলেন তাঁরা। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারের পতন ঘটেছিল ২০২৪ সালে কয়েক সপ্তাহের ব্যাপক বিক্ষোভে রক্তক্ষয়ী দমন–পীড়ন চালানোর পরে।

গোলটেবিল বৈঠক ঘিরে পরিস্থিতির অবনতি হলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য পুলিশ ডেকেছিলেন মনজুরুল আলম। সেখানে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের বদলে মনজুরুল আলমসহ গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেওয়া ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

তার পর থেকে মনজুরুল আলমসহ গ্রেপ্তার গোলটেবিলের অন্য অংশগ্রহণকারীরা বাংলাদেশের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্রের’ ভিত্তিহীন অভিযোগে কারাবন্দী রয়েছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের কাছে এ বিষয়ে বক্তব্য চেয়েছিল আরএসএফ। তবে তিনি তাতে সাড়া দেননি।

আরএসএফের দক্ষিণ এশিয়া ডেস্কের প্রধান সেলিয়া মারসিয়ে বলেছেন, ‘সাংবাদিক মনজুরুল আলমকে আটক বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের ক্রমবর্ধমান কর্তৃত্ববাদী আচরণকে তুলে ধরেছে। এই সরকার সমালোচনাকারীদের কণ্ঠ রোধের জন্য সন্ত্রাসবিরোধী আইন ব্যবহার করছে। কেবল নিজ দেশের ইতিহাস নিয়ে প্রকাশ্যে আলোচনায় অংশ নেওয়ার জন্য একজন সাংবাদিককে সন্ত্রাসী হিসেবে বিবেচনা করা হবে, এটা গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা তাঁর বিরুদ্ধে আনা মিথ্যা অভিযোগগুলো তুলে নেওয়ার এবং অবিলম্বে তাঁকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

আরএসএফের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৪ সেপ্টেম্বর জামিনের জন্য মনজুরুল ইসলামের করা আবেদন খারিজ করা হয়। এখন পর্যন্ত এ মামলার বিচারের কোনো দিনও ধার্য করা হয়নি। জামিনের আবেদন শুনানির সময় মনজুরুল আলমের সাক্ষাৎকার নিতে যাওয়া দুই সাংবাদিক একজন আইনজীবীর আক্রমণের শিকার হন। তাঁদের মধ্যে সময় টিভির আসিফ হোসাইনকে মারধর করেন ওই আইনজীবী। এ ছাড়া বাংলা আউটলুকের সাংবাদিক মুকতাদির রশিদকে হুমকি দেন তিনি।

মনজুরুল আলম ছাড়াও বাংলাদেশে আরও পাঁচ সাংবাদিককে কারাবন্দী করে রাখা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে আরএসএফের প্রতিবেদনে। তাঁরা হলেন ফারজানা রূপা, শাকিল আহমেদ, মোজাম্মেল বাবু, শাহরিয়ার কবির ও শ্যামল দত্ত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কারাবন্দী সাংবাদিক মনজুরুল আলমকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান আরএসএফের