রূপগঞ্জে গভীর রাতে সন্ত্রাসী হামলা, ভাংচুর ও লাটপাট : নারী-শিশু সহ আহত ৯
Published: 21st, April 2025 GMT
রূপগঞ্জের ডাক্তারখালী এলাকায় জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বাড়ি-ঘরে হামলা, ভাংচুর, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। রবিবার গভীর রাতে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা এ হামলা চালায়।
এসময় বাড়ির মালিক হাসিবুর রহমান (৫৫), স্ত্রী রিনা আক্তার (৪৭), ছেলে সাফওয়ান (১৩), মেয়ে মোহাইমিনা আক্তার (১৭) সহ নারী ও শিশু সহ ৯জনকে কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করা হয়েছে।
পরে আহতদের উদ্ধার করে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে হাসিবুর রহমান বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।
ভুক্তভোগী হাসিবুর রহমান জানান, আমার বাড়ির পাশের একটি জমি নিয়ে পাশের বাড়ির লোকজনের সাথে আদালতে মামলা চলছে। ওই মামলার সূত্রধরে গতরাতে একই এলাকার আবুল কাশেম, আবুল হাশেম, আব্দুল জব্বার, আব্দুস সাত্তার, উজ্জল, আব্দুল গফুর, নাসির, জাফর, মফিদুল ইসলাম সহ ২০/২৫জনের একটি সস্ত্রাসী বাহিনী ধারালো অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে রাত ২টার দিকে বাড়িতে হামলা চালায়।
এসময় আমার বসত ঘরের দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে সবাইকে এলোপাথালী কোপাতে থাকে পরে আমাদের চিৎকারে আসপাশের লোকজন ছুটে এসে সন্ত্রসীরা তাদেরকেও এলাকাথারী কোপাতে থাকে।
এসময় ঘটনা সামলাতে না পেরে স্থানীয়রা আশপাশের কয়েকটি মসজিদের মাইকে এলাকায় ডাকাত পড়েছে ঘোষণা দিলে পরে গ্রামবাসী সবাই এগিয়ে আসলে সন্ত্রসীরা আমার পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকী দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সহ প্রধান উপদেষ্টরা কাছে আমি এ ঘটনার সঠিক বিচার চাইা।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রূপগঞ্জ থানার ওসি লিয়াকত আলী জানান, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বাড়ি ঘরে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট সহ ৯জনকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ র পগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস