ভারতে মুসলিম নিধনের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে একের পর এক আইন বাস্তবায়ন করছে মোদি সরকার: মামুনুল হক
Published: 23rd, April 2025 GMT
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, ভারতে মুসলিম নিধনের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে একের পর এক আইন বাস্তবায়ন করছে মোদি সরকার।
আজ বুধবার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে এই আহ্বান জানান মামুনুল হক।
ভারতের সংসদে সদ্য পাস হওয়া বিতর্কিত ওয়াক্ফ সংশোধনী বিল ২০২৫ বাতিল এবং চলমান মুসলিম নিধন বন্ধের দাবিতে বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে বিক্ষোভ সমাবেশ করে খেলাফত মজলিস। পরে ভারতীয় হাইকমিশন অভিমুখে গণমিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালন করা হয়।
ভারতীয় মুসলিমদের উদ্দেশে মামুনুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে যেকোনো কর্মসূচি গ্রহণ করুন। দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলুন। বাংলাদেশের মুসলিমরা আপনাদের কর্মসূচিতে অংশ নেবে। প্রয়োজনে ভারত অভিমুখে লংমার্চ ঘোষণা করবে খেলাফত মজলিস।’
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, পৃথিবীজুড়ে ফিলিস্তিন এবং ভারতের মুসলিমরা বিশেষভাবে আলোচিত। ফিলিস্তিনের মুসলিমদের ওপর বর্বর নির্যাতন চালাচ্ছে সেখানকার সরকার। আর ভারতে মোদি সরকার মুসলিম নিধনের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে একের পর এক আইন বাস্তবায়ন করছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে মামুনুল হক বলেন, ভারত সরকার মুসলিমবিরোধী নীতি অব্যাহত রাখলে উপমহাদেশজুড়ে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, ভারতের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক এবং কূটনৈতিক সব পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
অন্তর্বর্তী সরকারের নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সমালোচনা করে মামুনুল হক বলেন, ‘নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনে যাঁরা আছেন, তাঁদের পরিচয় নিয়ে আমরা সন্দিহান। সরকার ইসলামের বিপক্ষে অবস্থান নিলে এক দিনের জন্যও তাঁরা ক্ষমতায় টিকতে পারবেন না। অবিলম্বে এই কমিশন বাতিল করে গণমানুষের পক্ষে অবস্থান নিন।’
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, ভারত সরকার মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিতর্কিত ওয়াক্ফ বিল পাস করে মুসলিমদের সম্পত্তি জোর দখলের পাঁয়তারা করছে। অবিলম্বে মুসলমানদের সম্পদের নিরাপত্তা না দিলে বাংলাদেশ থেকে বড় আন্দোলন গড়ে তুলবে খেলাফত মজলিস।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, নায়েবে আমির মাওলানা শাহীনুর পাশা, সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, সভাপতি মোহাম্মদ আবদুল আজিজ, খেলাফত যুব মজলিসের সভাপতি জাহিদুজ্জামান, খেলাফত শ্রমিক মজলিসের সদস্যসচিব আবু সাইদ নোমান, খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি আনোয়ার হোসেন রাজি, খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সানাউল্লাহ আমিনি।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন মাওলানা নুর হোসাইন, তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী, মহিউদ্দিন রাব্বানিসহ খেলাফত মজলিসের বিভিন্ন জেলা ও মহানগরের নেতারা।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কারিগরি শিক্ষার্থীদের অবরোধের ঘোষণা সহিংস আন্দোলনের উসকানি: সংবাদ সম্মেলনে বুয়েট শিক্ষার্থীরা
কারিগরি শিক্ষার্থীদের গাজীপুরে রেলপথ অবরোধের ঘোষণাকে ‘সহিংস আন্দোলনের উসকানি ও গভীর ষড়যন্ত্র’ হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। তাঁরা বলছেন, আলোচনার টেবিল ছেড়ে অবরোধ কোনো যৌক্তিক সমাধান হতে পারে না।
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পরে বুয়েট ক্যাফেটেরিয়া প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। ‘প্রকৌশল অধিকার আন্দোলন’ ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বুয়েট শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন আলোচনায় বসে। দাবির যৌক্তিকতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তারা প্রকৌশলী ও ডিপ্লোমাধারী—উভয় পক্ষকে আলোচনার টেবিলে ডাকে। সবার যুক্তিতর্ক সমানভাবে উপস্থাপনের সুযোগ করে দেয়, যাতে কারও প্রতি কোনোরূপ বৈষম্য না হয়।
লিখিত বক্তব্যে বুয়েট শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, আলোচনার টেবিলে সমাধানের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আজ গাজীপুরে রেলপথ অবরোধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে কারিগরি শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে। ডিপ্লোমাধারীদের পক্ষ থেকে যে প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন, তাঁরাই অবরোধ ডেকে সহিংস আন্দোলনের জন্য ক্রমাগত উসকানি দিয়ে যাচ্ছেন।
আলোচনার টেবিল ছেড়ে কেন জনদুর্ভোগ করে অবরোধের উসকানি দেওয়া হচ্ছে—এমন প্রশ্ন রাখেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা।
আলোচনার টেবিল ছেড়ে অবরোধ কোনো যৌক্তিক সমাধান হতে পারে না বলে উল্লেখ করা হয় লিখিত বক্তব্যে। এতে বলা হয়, এগুলো শুধুই বিশৃঙ্খলা তৈরির পাঁয়তারা ও গভীর ষড়যন্ত্র, যা প্রথাগত আন্দোলনকে ভিন্ন পথে নিয়ে যাচ্ছে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আলোচনার টেবিল ছেড়ে যাঁরা অবরোধ করে দেশে নৈরাজ্য তৈরির উসকানি দিচ্ছেন, তাঁদের আসল উদ্দেশ্য ও এজেন্ডা খতিয়ে দেখা দরকার।
বুয়েট শিক্ষার্থীরা বলেন, যৌক্তিক দাবি আদায়ের জন্য গায়ের জোর খাটিয়ে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে অবরোধের প্রয়োজন নেই। যৌক্তিক দাবি জানালে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিজ উদ্যোগে তা আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নেবে।