পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, মন্ত্রী-এমপিদের জন্য জমি ধ্বংস করে হাউজিং প্রকল্প বাস্তবায়নের কোনো যৌক্তিকতা নেই। তিনি বলেন, রাজউকের মূল দায়িত্ব হওয়া উচিত পরিবেশবান্ধব নগর উন্নয়ন এবং জাতীয় ও নির্মিত ঐতিহ্য রক্ষা করা।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)-এর কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, রাজউককে জনবান্ধব ও যুগোপযোগী করতে ‘টাউন ইমপ্রুভমেন্ট অ্যাক্ট’ ও ‘বিল্ডিং কন্সট্রাকশন অ্যাক্ট’ নতুনভাবে প্রণয়ন করতে হবে। কেবল অল্প পরিবর্তনে কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যাবে না।

তিনি জানান, রাজউকের বোর্ডে কেবল আমলাদের রাখলে চলবে না, বরং নগর পরিকল্পনায় দক্ষ বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। পাশাপাশি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করে পরিকল্পিতভাবে কাজ চালিয়ে যেতে হবে।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “রাজউক কী রেগুলেটর নাকি ডেভেলপার—তা স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করতে হবে। গৃহহীনদের জন্য ঘর হতে পারে, ধনীদের জন্য নয়। রাজউককে আর হাউজিং করতে দেওয়া উচিত নয়।”

তিনি আরো বলেন, পূর্বাচলের মতো এলাকার জমি ধ্বংস করে প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিবর্তে টেকসই উন্নয়ন ও পরিবেশ সংরক্ষণে গুরুত্ব দিতে হবে।

রাজউকের ভবন আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব হওয়া উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, “প্রতিটি প্রকল্পের এক্সিট প্ল্যান থাকতে হবে। রাজউক ও এস্টেট ডিপার্টমেন্টকে জনসেবামুখী হতে হবে, ডিজিটাল পদ্ধতিতে সেবা নিশ্চিত করতে হবে, এবং অভিযোগ নিষ্পত্তির কার্যকর ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।”

তিনি জলাশয় পুনঃখননের ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, “হাউজিং প্রকল্প শেষ হওয়ার পরও মনিটরিং চালু রাখতে হবে। এলাকা না বাড়িয়ে সুপারভিশন বাড়াতে হবে, গাছ লাগাতে হবে এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের সুযোগ দিতে হবে।”

মতবিনিময় সভায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.

নজরুল ইসলাম এবং রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুল ইসলামসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ র জন য প রকল প মন ত র পর ব শ র জউক

এছাড়াও পড়ুন:

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।

জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’

জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ