কুমিল্লার লাকসামে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এক ডিলারের বিরুদ্ধে। তিনি স্থানীয় বিএনপি নেতা। জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরের (৯৯৯) মাধ্যমে খবর পেয়ে তাঁর বাড়ি থেকে ৩৫০ কেজি চাল উদ্ধার করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এ ঘটনায় ওই বিএনপি নেতাকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সাজাপ্রাপ্ত রবিউল হোসেন (৪২) উপজেলার গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন বিএনপির সর্বশেষ কমিটির সাধারণ সম্পাদক (সদ্য বিলুপ্ত কমিটি)। তিনি বিএনপির শিল্পবিষয়ক সম্পাদক ও লাকসাম উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল কালামের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। রবিউল গোবিন্দপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়া এলাকার প্রয়াত সফিউল্লাহর ছেলে।

গতকাল বুধবার রাতে সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর বাজারের খাদ্যবান্ধব ডিলার রবিউল হোসেনের এক স্বজনের ঘর থেকে ৩৫০ কেজি চাল উদ্ধার করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউছার হামিদ। পরে রাত ১১টার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তিনি রবিউল হোসেনকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গতকাল সন্ধ্যায় গোবিন্দপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়া এলাকায় দুঃসম্পর্কের এক চাচির ঘরে চাল রেখে যান রবিউল হোসেন। বিষয়টি টের পেয়ে এলাকার লোকজন জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে (৯৯৯) ফোন করেন। এ সময় চাল পরিবহন করা রিকশাচালক সফিকুর রহমানকে আটক করেন এলাকাবাসী। পরে ইউএনও ঘটনাস্থলে গিয়ে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির স্থানীয় ডিলার রবিউলকে ডেকে আনেন। পরে জিজ্ঞাসাবাদে রবিউল চাল বিতরণ না করে অবৈধভাবে আত্মসাতের উদ্দেশ্যে বাড়িতে নিয়ে আসার বিষয়টি নিশ্চিত হন ইউএনও।

লাকসামের ইউএনও কাউছার হামিদ বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে ডিলার রবিউল হোসেন চাল বিতরণ না করে আত্মসাতের উদ্দেশ্যে নিয়ে আসার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাঁকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাঁর ডিলারের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার হরিতলা মোড়ে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে ইউএনওর অপসারণের দাবি জানানো হয়।

এলাকার সচেতন নাগরিক, ব্যবসায়ী মহল, অভিভাবক, ছাত্রছাত্রী, কর্মচারী-শিক্ষকমণ্ডলীর ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়। এতে এলাকাবাসী ছাড়া তাহেরপুর কলেজের অধিকাংশ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন থেকে কলেজের সম্পত্তি অন্যত্র ইজারা দেওয়ার চেষ্টার প্রতিবাদ জানানো হয়।

তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়। পৌরসভার নির্মিত দোকানঘর থেকে তাহেরপুর কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ায় এ কর্মসূচি পালন করা হয় বলে অভিযোগ। আওয়ামী লীগের নেতার দাবি, তিনি দলীয় পরিচয়ে নয়, কলেজশিক্ষক হিসেবে মানববন্ধনে যোগ দিয়েছেন। তবে ব্যানারে ফ্যাসিবাদ শব্দটি প্রথমে দেখেননি। পরে দেখেছেন।

মানববন্ধনে তাহেরপুর কলেজের শিক্ষক রইচ আহমেদ, সুরাইয়া আক্তার, তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন। বক্তারা বাগমারার ইউএনওকে ফ্যাসিবাদের দোসর ও চব্বিশের চেতনাবিরোধী অভিযোগ তুলে তাঁদের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ার নিন্দা জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাহেরপুর কলেজ–সংলগ্ন স্থানে পৌর কর্তৃপক্ষ দোকানঘর নির্মাণ করেছে। পৌরসভার পক্ষে নিয়মিত ভাড়া আদায় করা হয় ওই প্রতিষ্ঠান থেকে। ৫ আগস্টের পর থেকে কলেজের পক্ষ থেকে ৪১টি দোকানঘর নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করা হয়।

পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে বাগমারার ইউএনও দোকানঘর থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেন। দোকানঘরগুলো পৌরসভার হওয়ায় তারাই সেখান থেকে ভাড়া আদায় করবে বলে জানানো হয়। সেখান থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ আর ভাডা আদায় করবে না জানিয়ে ২২ এপ্রিল পৌরসভার প্রশাসককে লিখিতভাবে জানান কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম। এর পর থেকে কর্তৃপক্ষ ইউএনওর ওপর ক্ষুব্ধ হয়।

তাহেরপুর কলেজের সহকারী অধ্যাপক সুরাইয়া আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, কলেজের জায়গায় তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়ব ও সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ দোকানঘর নির্মাণ করে মোটা অঙ্কের টাকায় ভাড়া দেন। ৫ আগস্টের পর তাঁরা (কলেজ কর্তৃপক্ষ) সেগুলো নিয়ন্ত্রণে নেন। তবে ২২ এপ্রিল ইউএনও সাদা কাগজে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছ থেকে ভাড়া আদায় বিষয়ে একটি লিখিত নিয়েছেন। এর প্রতিবাদে মূলত তাঁদের এই কর্মসূচি।

পৌরসভার দোকানঘর থেকে কেন পৌরসভা ভাড়া আদায় করবে না জানতে চাইলে সুরাইয়া আক্তার বলেন, ‘জায়গাগুলো কলেজের ছিল।’ ব্যানারে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখা হলেও কেন আওয়ামী লীগের নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করলেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কলেজের স্বার্থে আমরা এক।’

জানতে চাইলে ইউএনও মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, দোকানগুলো তাহেরপুর পৌরসভার। সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করে পৌরসভার কোষাগারে জমা করা হয়। তিনি প্রশাসক হিসেবে ভাড়া আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছেন। কলেজের অধ্যক্ষ নিজেই জানিয়েছেন, এখন থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ ভাড়া আদায় করবে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা
  • নারায়ণগঞ্জে ৩০ স্কুলে চালু হলো ‌‘মিড ডে মিল’
  • গাজীপুরে ১০ মাটি খেকোকে কারাদণ্ড
  • পাঠাগার থেকে লুট হওয়া বই ফেরত পেলো কর্তৃপক্ষ
  • দমদমিয়া আলোর পাঠশালায় গিয়ে শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নিলেন ইউএনও
  • রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশ, লুট হওয়া বই ফেরত পেল পাঠাগার কর্তৃপক্ষ
  • মুদি দোকানে যৌন উত্তেজক ঔষধ, জরিমানা