কুমিল্লায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল আত্মসাৎ, ডিলার বিএনপি নেতার ৬ মাসের কারাদণ্ড
Published: 24th, April 2025 GMT
কুমিল্লার লাকসামে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এক ডিলারের বিরুদ্ধে। তিনি স্থানীয় বিএনপি নেতা। জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরের (৯৯৯) মাধ্যমে খবর পেয়ে তাঁর বাড়ি থেকে ৩৫০ কেজি চাল উদ্ধার করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এ ঘটনায় ওই বিএনপি নেতাকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সাজাপ্রাপ্ত রবিউল হোসেন (৪২) উপজেলার গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন বিএনপির সর্বশেষ কমিটির সাধারণ সম্পাদক (সদ্য বিলুপ্ত কমিটি)। তিনি বিএনপির শিল্পবিষয়ক সম্পাদক ও লাকসাম উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল কালামের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। রবিউল গোবিন্দপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়া এলাকার প্রয়াত সফিউল্লাহর ছেলে।
গতকাল বুধবার রাতে সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর বাজারের খাদ্যবান্ধব ডিলার রবিউল হোসেনের এক স্বজনের ঘর থেকে ৩৫০ কেজি চাল উদ্ধার করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউছার হামিদ। পরে রাত ১১টার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তিনি রবিউল হোসেনকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গতকাল সন্ধ্যায় গোবিন্দপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়া এলাকায় দুঃসম্পর্কের এক চাচির ঘরে চাল রেখে যান রবিউল হোসেন। বিষয়টি টের পেয়ে এলাকার লোকজন জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে (৯৯৯) ফোন করেন। এ সময় চাল পরিবহন করা রিকশাচালক সফিকুর রহমানকে আটক করেন এলাকাবাসী। পরে ইউএনও ঘটনাস্থলে গিয়ে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির স্থানীয় ডিলার রবিউলকে ডেকে আনেন। পরে জিজ্ঞাসাবাদে রবিউল চাল বিতরণ না করে অবৈধভাবে আত্মসাতের উদ্দেশ্যে বাড়িতে নিয়ে আসার বিষয়টি নিশ্চিত হন ইউএনও।
লাকসামের ইউএনও কাউছার হামিদ বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে ডিলার রবিউল হোসেন চাল বিতরণ না করে আত্মসাতের উদ্দেশ্যে নিয়ে আসার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাঁকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাঁর ডিলারের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পরিবারের কাছে ফিরে গেলেন অভিনেতা সমু চৌধুরী
অভিনেতা সমু চৌধুরী পরিবারের কাছে ফিরে গেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টার পর পুলিশ তাঁকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এর আগে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে মাজারের গাছতলায় গামছাপরিহিত সমু চৌধুরীর ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে নানা জল্পনা শুরু হয়।
গফরগাঁওয়ের পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আলম বলেন, অভিনেতা সমু চৌধুরীকে রাত ৩টা ২০ মিনিটের দিকে খালাতো ভাই অপু চৌধুরীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ সময় অভিনয়শিল্পী সংঘের লোকজনও ছিলেন। তিনি বলেন, সমু চৌধুরী এর আগে মাজারটিতে কয়েকবার এলেও কেউ তাঁকে চিনতে পারেননি। এবারও মাজারে একাকী সময় কাটাতে এসেছিলেন তিনি।
এর আগে গত বুধবার রাতে ঢাকা থেকে মোটরসাইকেলে করে গফরগাঁও উপজেলার মশাখালী ইউনিয়নে অবস্থিত মুখী শাহ্ মিসকিনের মাজারে আসেন সমু চৌধুরী। পরদিন গতকাল দুপুরে মাজারের গাবগাছের নিচে শুয়ে থাকতে দেখা যায় তাঁকে। মাজারের পাশের বাসিন্দা আল মামুন হৃদয় ফেসবুকে তাঁর গাছতলায় শুয়ে থাকার ছবি পোস্ট করেন। দ্রুত সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা সমু চৌধুরীকে মানসিকভাবে অসুস্থ বলে দাবি করেন। সমু চৌধুরীকে এমন অবস্থায় দেখতে পেয়ে সেখানে ভিড় করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিকেল গাড়িয়ে সন্ধ্যা হলে পুলিশের অনুরোধেও থানায় যাননি সমু চৌধুরী। সন্ধ্যার পর লোকজন আরও বাড়তে থাকে। এ অবস্থায় পুলিশের পাশাপাশি মাজার প্রাঙ্গণে সেনাবাহিনী অবস্থান নেয়। এ সময় সমু চৌধুরী জানান, তিনি সুস্থ আছেন। সারা রাত মাজারে ধ্যানে ছিলেন।
আরও পড়ুনঅভিনেতা সমু চৌধুরীকে উদ্ধারের চেষ্টা করেছে পুলিশ, কী হয়েছিল তাঁর২১ ঘণ্টা আগেগতকাল রাত ৯টার দিকে সমু চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেন গফরগাঁওয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন। সমু চৌধুরী সুস্থ আছেন কি না, তা জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন সেখানে উপস্থিত হন।
ইউএনও এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এক ঘণ্টার বেশি সময় অভিনেতার সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় এবং তাঁকে সুস্থ পাওয়া যায়। তাঁর বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়, পুরো ঘটনা তাঁর জবানিতে শোনা হয়। অভিনেতা মাজারভক্ত মানুষ। এ মাজারে আগেও এসেছিলেন। তাঁকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিলেও গতকাল তাঁর ভাষায় গুরুবার ও গুরুত্বপূর্ণ রাত হওয়ায় তিনি মাজারেই অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবির কারণে বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়।’
সমু চৌধুরীর বয়স ৬২ বছর। তিনি ১৯৯০ সালে একটি নাটকের মাধ্যমে অভিনয়জীবনে প্রবেশ করেন। এ ছাড়া উদীচীর সঙ্গে ছিলেন ১২ বছর। ব্যক্তিজীবনে তিনি অবিবাহিত। তাঁর বাড়ি যশোর। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে শুধু মা জীবিত আছেন। সমু চৌধুরী যশোরে থাকেন বলেও জানান ইউএনও।
আরও পড়ুনমাজার থেকে সরতে চাইছেন না সমু চৌধুরী১৮ ঘণ্টা আগে