দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলায় একটি চালকলের গুদাম থেকে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির প্রায় পাঁচ হাজার কেজি চাল জব্দ করেছে উপজেলা প্রশাসন।

গতকাল শনিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে উপজেলার আলিহাট ইউনিয়ন পরিষদের পাশে আসাদুজ্জামান ওরফে আসাদের চালকলের গুদামে এ অভিযান চালানো হয়।

অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিত রায়। এ সময় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক খালেদা বানু, ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ইমরান আলী, থানা-পুলিশ ও গ্রাম পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, চালকলের গুদাম থেকে খাদ্য অধিদপ্তরের সিলযুক্ত ৩০ কেজি ওজনের ১৮০টি ভর্তি বস্তা ও ১০৪টি খালি বস্তা জব্দ করা হয়। অভিযানকালে চালকলের মালিক, তত্ত্বাবধায়ক বা পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। জব্দ করা চাল উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে।

আলিহাট ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ইমরান আলী বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সরাসরি সুবিধাভোগীদের হাতে চাল দেওয়া হয়। বিতরণের পর গুদামে চাল পাওয়া দুঃখজনক। দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক খালেদা বানু বলেন, খাদ্য অধিদপ্তরের সিলযুক্ত চাল ব্যক্তিমালিকানাধীন গুদামে মজুত বেআইনি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইউএনও অমিত রায় বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বিতরণের পর চালকলের গুদামে চাল মজুত করা বেআইনি। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তর নিয়মিত মামলা দায়েরসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ লকল র গ দ ম উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

‘লাল পরি’ হয়ে ঘরে ফিরল হারিয়ে যাওয়া শিশুটি

ঠিকমতো চোখে দেখে না আট বছরের শিশু মরিয়ম। মাদ্রাসা থেকে ঘরে ফেরার পথে নিখোঁজ হয় সে। নানা ঘটনাচক্রে একসময় পৌঁছায় কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার ( ইউএনও) কার্যালয়ে। পরে ইউএনওর সহায়তায় ঘরে ফিরেছে শিশুটি। ঘরে ফেরার আগে তার ‘লাল পরি’ সাজার ইচ্ছাপূরণও হয়েছে।

শিশু মরিয়মের বাড়ি কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় পূর্ব পোকখালী চরপাড়া গ্রামে তার বাড়ি। সেখানেই একটি মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। গত বুধবার মাদ্রাসা ছুটির পর মায়ের জন্য অপেক্ষায় ছিল সে। তবে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে এক ব্যক্তি তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় কক্সবাজার সদরে।

ইউএনও কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মরিয়ম কক্সবাজার পৌরসভার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় চোখেমুখে ভয় আর আতঙ্কের ছাপ নিয়ে হাঁটাহাঁটি করছিল। কৌতূহলী এক পথচারী কথা বলে তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। ওই পথচারী মরিয়মকে নিয়ে যান তিন কিলোমিটার দূরে উপজেলা পরিষদের কার্যালয়ে। সেখান থেকে এক আনসার সদস্য মরিয়মকে ইউএনও কার্যালয়ে নিয়ে আসেন।

ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী এ সময় শিশু মরিয়মের সঙ্গে কথা বলে তার বিস্তারিত ঠিকানা জানার চেষ্টা করেন। শিশুটি কেবল তার বাড়ি ঈদগাঁওয়ের পোকখালী এতটুকুই বলতে পারছিল। পরে ঈদগাঁওয়ের ইউএনওর মাধ্যমে শিশুটির বাড়ির ঠিকানা নিশ্চিত হওয়া যায়।

কাপড় কিনে দেওয়ার সময় মরিয়ম বলল, সে লাল পরি সেজে বাড়ি ফিরবে। তাকে লাল জামা, লাল চুড়ি, লাল লিপস্টিক ও লাল ওড়না দিয়ে লাল পরি সাজানো হয়। নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী, ইউএনও, কক্সবাজার সদর উপজেলা

শিশুটি প্রথমে পাচারকারীদের খপ্পরে পড়েছিল বলে সন্দেহ ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিনের। তিনি বলেন, আলাপে শিশুটি জানায়, সে তার তিন-চার বছর বয়স পর্যন্ত ভালোভাবেই চোখে দেখত। এরপর থেকে ক্রমে তাঁর চোখের আলো ঝাপসা হতে শুরু করে। এখন সে তেমন দেখতে পায় না। তার বাবা মারা গেছেন। মা ও বড় ভাই অন্ধ। পরিবারে অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া একটি বোন আছে, সে–ই কেবল চোখে দেখতে পায়। ঘরের কাজ সব বোনই সামলায়। তাদের পরিবার থাকে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে।

শিশুটির কাছ থেকে চোখের বিষয়টি জেনে তাকে কক্সবাজার শহরের পানবাজার এলাকার কমিউনিটি চক্ষু হাসপাতালে নেওয়া হয় বলে জানান ইউএনও। তিনি বলেন, ‘শিশুটির সঙ্গে কথা বলে মনে হলো তার চোখের সমস্যা এত জটিল না। হাসপাতালে নেওয়ার পর চক্ষুবিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিমল চৌধুরী তার চোখের পরীক্ষা করেন। এরপর বিনা মূল্যে শিশু মরিয়মকে চশমা ও এক মাসের ওষুধ কিনে দেওয়া হয়। চশমা চোখে দিয়ে সে জানিয়েছে, আগের চেয়ে অনেক ভালো দেখতে পাচ্ছে।’

শিশুটিকে মায়ের হাতে তুলে দেন কক্সবাজার সদরের ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘লাল পরি’ হয়ে ঘরে ফিরল হারিয়ে যাওয়া শিশুটি