দিনাজপুরে চালকলের গুদামে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৫ হাজার কেজি চাল জব্দ
Published: 27th, April 2025 GMT
দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলায় একটি চালকলের গুদাম থেকে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির প্রায় পাঁচ হাজার কেজি চাল জব্দ করেছে উপজেলা প্রশাসন।
গতকাল শনিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে উপজেলার আলিহাট ইউনিয়ন পরিষদের পাশে আসাদুজ্জামান ওরফে আসাদের চালকলের গুদামে এ অভিযান চালানো হয়।
অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিত রায়। এ সময় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক খালেদা বানু, ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ইমরান আলী, থানা-পুলিশ ও গ্রাম পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, চালকলের গুদাম থেকে খাদ্য অধিদপ্তরের সিলযুক্ত ৩০ কেজি ওজনের ১৮০টি ভর্তি বস্তা ও ১০৪টি খালি বস্তা জব্দ করা হয়। অভিযানকালে চালকলের মালিক, তত্ত্বাবধায়ক বা পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। জব্দ করা চাল উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে।
আলিহাট ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ইমরান আলী বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সরাসরি সুবিধাভোগীদের হাতে চাল দেওয়া হয়। বিতরণের পর গুদামে চাল পাওয়া দুঃখজনক। দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক খালেদা বানু বলেন, খাদ্য অধিদপ্তরের সিলযুক্ত চাল ব্যক্তিমালিকানাধীন গুদামে মজুত বেআইনি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইউএনও অমিত রায় বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বিতরণের পর চালকলের গুদামে চাল মজুত করা বেআইনি। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তর নিয়মিত মামলা দায়েরসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ লকল র গ দ ম উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার হরিতলা মোড়ে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে ইউএনওর অপসারণের দাবি জানানো হয়।
এলাকার সচেতন নাগরিক, ব্যবসায়ী মহল, অভিভাবক, ছাত্রছাত্রী, কর্মচারী-শিক্ষকমণ্ডলীর ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়। এতে এলাকাবাসী ছাড়া তাহেরপুর কলেজের অধিকাংশ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন থেকে কলেজের সম্পত্তি অন্যত্র ইজারা দেওয়ার চেষ্টার প্রতিবাদ জানানো হয়।
তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়। পৌরসভার নির্মিত দোকানঘর থেকে তাহেরপুর কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ায় এ কর্মসূচি পালন করা হয় বলে অভিযোগ। আওয়ামী লীগের নেতার দাবি, তিনি দলীয় পরিচয়ে নয়, কলেজশিক্ষক হিসেবে মানববন্ধনে যোগ দিয়েছেন। তবে ব্যানারে ফ্যাসিবাদ শব্দটি প্রথমে দেখেননি। পরে দেখেছেন।
মানববন্ধনে তাহেরপুর কলেজের শিক্ষক রইচ আহমেদ, সুরাইয়া আক্তার, তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন। বক্তারা বাগমারার ইউএনওকে ফ্যাসিবাদের দোসর ও চব্বিশের চেতনাবিরোধী অভিযোগ তুলে তাঁদের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ার নিন্দা জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাহেরপুর কলেজ–সংলগ্ন স্থানে পৌর কর্তৃপক্ষ দোকানঘর নির্মাণ করেছে। পৌরসভার পক্ষে নিয়মিত ভাড়া আদায় করা হয় ওই প্রতিষ্ঠান থেকে। ৫ আগস্টের পর থেকে কলেজের পক্ষ থেকে ৪১টি দোকানঘর নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করা হয়।
পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে বাগমারার ইউএনও দোকানঘর থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেন। দোকানঘরগুলো পৌরসভার হওয়ায় তারাই সেখান থেকে ভাড়া আদায় করবে বলে জানানো হয়। সেখান থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ আর ভাডা আদায় করবে না জানিয়ে ২২ এপ্রিল পৌরসভার প্রশাসককে লিখিতভাবে জানান কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম। এর পর থেকে কর্তৃপক্ষ ইউএনওর ওপর ক্ষুব্ধ হয়।
তাহেরপুর কলেজের সহকারী অধ্যাপক সুরাইয়া আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, কলেজের জায়গায় তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়ব ও সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ দোকানঘর নির্মাণ করে মোটা অঙ্কের টাকায় ভাড়া দেন। ৫ আগস্টের পর তাঁরা (কলেজ কর্তৃপক্ষ) সেগুলো নিয়ন্ত্রণে নেন। তবে ২২ এপ্রিল ইউএনও সাদা কাগজে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছ থেকে ভাড়া আদায় বিষয়ে একটি লিখিত নিয়েছেন। এর প্রতিবাদে মূলত তাঁদের এই কর্মসূচি।
পৌরসভার দোকানঘর থেকে কেন পৌরসভা ভাড়া আদায় করবে না জানতে চাইলে সুরাইয়া আক্তার বলেন, ‘জায়গাগুলো কলেজের ছিল।’ ব্যানারে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখা হলেও কেন আওয়ামী লীগের নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করলেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কলেজের স্বার্থে আমরা এক।’
জানতে চাইলে ইউএনও মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, দোকানগুলো তাহেরপুর পৌরসভার। সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করে পৌরসভার কোষাগারে জমা করা হয়। তিনি প্রশাসক হিসেবে ভাড়া আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছেন। কলেজের অধ্যক্ষ নিজেই জানিয়েছেন, এখন থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ ভাড়া আদায় করবে না।