সোনারগাঁয়ে তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে কৃষকদের নিয়ে কর্মশালা
Published: 28th, April 2025 GMT
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের রাষ্ট্র পরিচালনার কর্মসূচি ৩১ দফা নিয়ে সোনারগাঁ উপজেলাধীন বারদী ইউনিয়নের নুনেরটেক ইউনিয়নের কৃষকদের নিয়ে এক ব্যতিক্রমী কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকালে নুনেরটেকের চরের ধানখেত কৃষকদের নিয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এসময়ে কৃষকদের মাঝে লিফলেট বিতরণ এবং গামছা, কাস্তে, মাথাল উপহার দেয়া হয়।
কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব বলেন, বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে পারলে দেশের কৃষকদের জন্য ‘ফার্মার্স কার্ড’ চালু করার ঘোষণা দিয়েছেন আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
কৃষকরা যাতে সরকার ঘোষিত নানা সুযোগ-সুবিধা পেতে পারেন, তার জন্য ‘ফার্মার্স কার্ড’ চালু করা হবে। যা প্রতি মৌসুমে কৃষকের সার-বীজ বা আর্থিক সহযোগিতা প্রাপ্তিতে কাজে লাগবে। আর প্রকৃত কৃষকদের হাতে তুলে দেওয়া হবে ওই কার্ড। ইনশাল্লাহ আগামী নির্বাচনে জনগণের ম্যানডেট নিয়ে যদি বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসে তাহলে এগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে সেই জিনিসটা উপস্থাপন করতে চাই যেটা আমাদের নেতা তারেক রহমান আপনাদেরকে বলেছেন। আমাদের নেতা চায় কৃষক, শ্রমিক সকলে মিলেই বাংলাদেশকে গড়তে হলে সকলের আন্তরিকতা প্রয়োজন।
আমি রাজনীতিবিদ হিসেবে যেমন আমার দায়িত্ব রয়েছে ঠিক একইভাবে আপনি একজন রাষ্ট্রের সুনাগরিক হিসেবে আপনারও দায়িত্ব রয়েছে। সুতরাং আমরা সকলে সকলের জায়গা থেকে সেই দায়িত্বটা পালন করতে হবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সেলিম হোসেন দিপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব। এসময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সদস্য বি এম ডালিম, বিএনপি নেতা মাসুম রানা, সোনারগাঁ পৌরসভা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক আবুল হোসেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক রুবেল হোসাইন, সদস্য জামাল হোসেন, সোনারগাঁ উপজেলা জাসাসের সভাপতি আমির হোসেন, জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সুমন মোল্লা, রোকন মিয়া, বারদী ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি তোফায়েল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম, কাঁচপুর ইউনিয়ন শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক বাচ্চু মিয়া, বারদী ইউনিয়ন কৃষক দলনেতা বিল্লাল হোসেন, আক্তার, ইউসুফ, আলমগীর, সোলেমান, সালাউদ্দিনসহ অনেকেই।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ন র য়ণগঞ জ ত র ক রহম ন ন র য়ণগঞ জ জ ল ত র ক রহম ন ক ষকদ র ব এনপ র ক দল র স ন রগ
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি খাল দখল করে চাঁদাবাজি!
সিদ্ধিরগঞ্জের হীরার্ঝিল আবাসিক এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি (ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা) খাল দখল করে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে। এর ফলে ডিএনডি খালটি ফের সংকুচিত হতে শুরু করেছে। পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।
এদিকে এই এলাকাটি শিমরাইল পাম্প স্টেশনের নিকটবর্তী এলাকা হওয়ায় দোকানগুলোর কারণে ঠিকমতোন পানি সরবরাহ হতে পারছে না। তবে প্রশাসনের ভাষ্য, খুব শিগগিরই এখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে নাসিক ১নং ওয়ার্ডের হীরাঝিল আবাসিক এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বালু খালপাড় দখল করে হরেক রকমের ছোট-বড় প্রায় ২৫টি দোকান বসানো হয়েছে। হাবিবুল্লাহ হবুলের মালিকানাধীন হাবিবুল্লাহ টাওয়ার থেকে শুরু করে মোক্তার হোসেন সরকারের মালিকানাধীন বিএম ভবন, সিদ্দিকুর রহমানের মালিকানাধীন মমতাজ ভিলা, নূর মোহাম্মদ টাওয়ার, নুরুল হুদা’র বাড়ির সামনে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।
এর বিনিময়ে প্রতি দোকান থেকে টাকা তুলছেন স্ব স্ব বাড়ির মালিকরা। চাঁদা তোলার বিষয়টি কয়েকজন বাড়িওয়ালা অকপটে স্বীকারও করেছেন।
এদিকে, দোকানগুলোর কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নির্মিত ওয়াকওয়ে দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে পথচারীদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। পাশাপাশি হীরাঝিল এলাকাবাসীকেও ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, হীরাঝিল আবাসিক এলাকা একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। যানবাহন ও মানুষের চাপ বেশি থাকায় এই এলাকায় সবসময় যানজট লেগেই থাকে। চলাচলের সুবিধার্তে এলাকাবাসী ডিএনডি খালের পাড় দিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যস্থলে যেতেন। কিন্তু কয়েকজন বাড়িওয়ালা এহেন কর্মকান্ডের কারণে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন।
এসব দোকানের কারণে খালের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পানি নিষ্কাশন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং চাঁদাবাজি প্রশাসন বন্ধ করতে না পারলে আগামীতে ফের বন্যা হওয়ার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত প্রদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ‘কাবাব বাড়ি’ ভবনের মালিক মো. রফিক বলেন, আমার বাড়ির সামনে ডিএনডি খাল দখল করে আমি কোনো দোকান বসাই নি। আমি নিজেও চাই এখানে কোনো দোকান না বসুক। কিন্তু আমি যতটুকু শুনেছি টিএইচ তোফা নামের এক ব্যক্তি এই দোকানগুলো বসিয়েছেন। আমি অনেক চেষ্টা করেছে দোকানগুলো সরিয়ে দেওয়ার। আর এখানে দোকান বসিয়ে টাকা তোলার প্রশ্নই উঠে না।
একই অভিযোগ স্বীকার করে মমতাজ ভিলার মালিক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, অন্যসবাই দোকান বসিয়েছে। আমি তা দেখাদেখি ২টি দোকান বসিয়েছি। এটা আমার অপরাধ হয়েছে তা আমি নিজেও বুঝি। আমি মূলত সবার দেখাদেখি দোকান বসিয়েছি।
নুরুল হুদা নামের আরেক বাড়িওয়ালা বলেন, আমি দোকান বসিয়েছি। কিন্তু ওইখান থেকে কোনো অর্থ আদায় করি না। চাইলে এ বিষয়ে তদন্ত করা হতে পারে। আর এখানে দীর্ঘদিন ধরেই দোকান ছিল।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনূর আলম বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টি আমাদের জানা নেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুভ আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। তবে অভিযোগ যেহেতু পেয়েছি তাহলে অবশ্যই ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হবে। ডিএনডি খালপাড় থেকে স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রথমে আমরা একাধিকবার তাদের নোটিশ পাঠাবো।
যদি তারা কথা না শোনেন তাহলে আইন অনুযায়ী উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। খাল দখলের বিরুদ্ধে আমরা সবসময় জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন খাল পরিষ্কার করা শুরু করেছি। ডিএনডি খালসহ যেকোনো খাল এভাবে দখল হয়ে থাকলে দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি শিগগিরই এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ৮ ডিসেম্বর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নে ডিএনডি প্রকল্প হাতে নেয় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শুরুতে প্রকল্পের বাজেট ৫৫৮ কোটি টাকা ধরা হলেও তা বাস্তবায়নে সবমোট ১৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়।
২০২৫ সালের জুন মাসে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর প্রকল্প বাস্তবায়ন করাকালে তখন খালটি দখল না হলেও প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর পরই হীরাঝিল এলাকার কয়েকজন বাড়িওয়ালা ডিএনডি খাল দখল করে দোকান বসানো শুরু করে।