চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার কেন্দুয়া ঘাসুড়া এলাকার একটি রপ্তানিযোগ্য আমবাগান পরিদর্শনে এসে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন চীনে আম রপ্তানি প্রসঙ্গে বলেছেন, ইতোমধ্যে দুদেশের মধ্যে এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়েছে। এছাড়া চীনে যেকোনো খাদ্যপণ্য রপ্তানি করার ক্ষেত্রে দেশটির জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে অব কাস্টম অব চায়না (জিএসিসি) থেকে নিবন্ধন নিতে হয়। জিএসিসি গত বছরের জুলাইয়ে আম রপ্তানির নিবন্ধন দিয়েছে।
তিনি বলেছেন, এখন চীনের আমদানিকারক, ব্যবসায়ী ও রাষ্ট্রদূতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ থেকে আম রপ্তানির বিভিন্ন পর্যায় যাচাই-বাছাই চলছে। হট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট কেলিব্রেশন বা সঠিকতা, প্যাকেজিংসহ অনেক কিছুই যাচাই করা হচ্ছে। সব ঠিক থাকলে চীন মে মাসের মধ্যভাগ থেকে বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ আম নেবে।
চীন বাংলাদেশ থেকে রপ্তানিযোগ্য কমপক্ষে ১৫ লাখ টন টন আম নিতে আগ্রহী জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আম রপ্তানি নিয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সাথে তাদের দেশের সফল আলোচনা হয়েছে। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আমরা চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাগানগুলো দেখতে এসেছি। আমগুলো কতটা রপ্তানিযোগ্য তা যাচাই করতে এখানে চীনের প্রতিনিধি হিসেবে আমরা এসেছি। বাংলাদেশের উৎপাদিত সুস্বাদু মিষ্টি ফ্রেশ আম বাংলাদেশের জন্য খোলা চায়নার বাজারে। তাছাড়া অন্যান্য দেশের চাইতে বাংলাদেশের আম চাষীদের চীনে আম রপ্তানিতে খরচও কম। চীনের আগ্রহ থাকায় আম সংরক্ষণ ও সংরক্ষণাগার নির্মাণে চীন সহযোগিতা করবে।
এ সময় তিনি তার সাথে থাকা একজন রপ্তানিকারককে ইঙ্গিত করে বলেন, এ ব্যক্তি চীনে আম রপ্তানিতে আগ্রহী। এর আগে গত সপ্তাহে জেলার কয়েকটি আমবাগান এবং আম গ্রেডিং, শর্টিং ও শোধনকেন্দ্র পরিদর্শন করেন চীনের আমদানিকারকদের প্রতিনিধি। পরিদর্শন শেষে তারাও আম আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করেন। এতে খুশি বাগান মালিক ও উদ্যোক্তারা। আম রপ্তানি দেশের জন্য একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে দেবে। আগামী জুন থেকেই আশা করা যায় চীনে আম রপ্তানি শুরু হতে পারে।
এর আগে সোমবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের কেন্দুয়া ঘাসুড়া এলাকার কয়েকটি রপ্তানিযোগ্য আমের বাগান ঘুরে দেখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চায়নার রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। তিনি উত্তম কৃষি চর্চার (গ্যাপ) মাধ্যমে চাষ করা আম দেখে মুগ্ধ হয়েছেন। সেইসঙ্গে বাংলাদেশের এ উদ্যোগকে তারা প্রশংসা করেছেন। এসব আম তাদের দেশে রপ্তানির ব্যাপারে আগ্রহও প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি আম্রপালি, বারি-৪, কাটিমনসহ বিভিন্ন জাতের আমগাছগুলো ঘুরে দেখেন। আমের চাষ পদ্ধতি সর্ম্পকেও খোঁজ খবর নেন তিনি। এসময় রাষ্ট্রদূতের সাথে তার স্ত্রীসহ কয়েকজন আমদানিকারক উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড.
সেখানকার বাগান মালিক রফিকুল ইসলাম, মানিক, বাবুসহ কয়েকজন কৃষক তাদের বাগানের বিভিন্ন জাতের আম সম্পর্কে ধারণা দেন । সেইসাথে চীনের আমদানি করা ফ্রুট ব্যাগগুলো দিয়ে আমগুলো মুড়িয়ে রাখার কারণ অবহিত করেন রাষ্ট্রদূত ও তার সফরসঙ্গীদের।
কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে যুক্তরাজ্য, ইতালি, ফ্রান্স, কানাডা, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যসহ অন্তত ৩৮টি দেশে বাংলাদেশের আম রপ্তানি হয়ে থাকে। যার বেশিরভাগ আম চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রপ্তানি হয়। তবে এ বছরই প্রথম চীনের বাজারে দেশের আম রপ্তানির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। পশ্চিমা দেশে ও মধ্যপ্রাচ্যসহ অন্যান্য দেশে পরিবহন খরচ ৪৮০-৫২০ টাকা হলেও চীনে এ খরচ মাত্র ৮০/৯০ টাকা। এতে করে আমরা আমচাষীরা অনেক লাভবান হবে।
অপর চাষী মানিক বলেন, বাংলাদেশ থেকে আম কিনতে আগ্রহী চীন। এটা উদ্যোক্তাদের জন্য খুশির খবর। কোনো তৃতীয়পক্ষ ছাড়া সরাসরি বাগান থেকে চীনে আম রপ্তানি করতে পারলে আমাদের মতো চাষীদের নিশ্চিত হবে ন্যায্যমূল্য।
এদিকে চীনের রাষ্ট্রদূতের আম কেনার আগ্রহে রপ্তানির পরিমাণ বাড়াতে সর্বাত্মক উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস কৃষি বিভাগের উপস্থিত কর্মকর্তাদের।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা সলেহ্ আকরাম বলেন, কৃষকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত আম রপ্তানিতে কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। উত্তম কৃষিচর্চা (গ্যাপ) অনুসরণ করে নিরাপদ আমের উৎপাদন কার্যক্রম ঢাকায় নিযুক্ত চায়না রাষ্ট্রদূত নাচোলের কেন্দুয়াতে রফিকুলের আমবাগানটি পরিদর্শন করেছেন। তিনি আম বাগানটি পরিদর্শন করে সন্তুষ্ট হয়েছেন। চায়না রাষ্ট্রদূত নাচোলের আম কিনতে সম্মতির কথা জানিয়েছেন। আম রপ্তানি বাড়াতে নাচোলের রপ্তানিযোগ্য আমবাগান গুলো রাষ্ট্রদূতকে ঘুরিয়ে দেখানো হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. মো. ইয়াছিন আলী বলেন, রপ্তানির ক্ষেত্রে যে ধরনের বাধা-বিঘ্ন রয়েছে, সেগুলো দূর করে রপ্তানি বাড়াতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের সুস্বাদু ও সম্ভাবনাময় আম রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে উত্তম কৃষিচর্চা (গ্যাপ) অনুসরণ করে নিরাপদ আমের উৎপাদন কার্যক্রম ঢাকায় নিযুক্ত চায়না রাষ্ট্রদূতের কাছে তুলে ধরতে আমবাগান পরিদর্শনের এই আয়োজন। চায়না এবছর বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন আম কিনতে আগ্রহী প্রকাশ করেছেন।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় ৩৭ হাজার ৫০৪ হেক্টর জমির আম বাগান থেকে ৩ লাখ ৮৬ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আমের বাম্পার উৎপাদন ও রপ্তানিতে এ বছর রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ। চলতি মৌসুমে প্রায় ২ লাখ ৫ হাজার ৩৪ হেক্টর জমিতে প্রায় ২৭ লাখ মেট্রিক টন আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। অন্যদিকে দেশ থেকে ৫ হাজার মেট্রিক টন আম রপ্তানির আশা প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প ইনব বগঞ জ র ন চ ল উপজ ল কর মকর ত আমব গ ন র উৎপ দ ল ইসল ম অফ স র আম ক ন লক ষ য আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
সংস্কারের একাল-সেকাল
ওয়ান-ইলেভেনকালে জরুরি অবস্থার গর্ভে জন্ম নেওয়া সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায়ও দেশের রাজনৈতিক দলগুলোতে ‘সংস্কারের জিগির’ তোলা হয়েছিল। সে সংস্কারের মূল লক্ষ্যবস্তু ছিলেন দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক নেত্রী খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনা, যা ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’ হিসেবে চিহ্নিত।
দল দুটির যেসব নেতা ওই তৎপরতার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছিলেন, পরবর্তী সময়ে তারা ‘সংস্কারপন্থি’ হিসেবে কালো তালিকাভুক্ত হন। এক পর্যায়ে ‘সংস্কারপন্থি’ শব্দটিই রাজনৈতিক গালিতে পরিণত হয়।
সময়ের বিবর্তনে অনেক কিছুরই পরিবর্তন ঘটে। ২০০৭ সালের নিন্দিত ‘সংস্কার’ ২০২৪ সালে এসে নন্দিত ‘সংস্কার’ হয়েছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার বলছে, লন্ডভন্ড নির্বাচন ব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে আর যাতে কোনো দল সরকারে গিয়ে আওয়ামী লীগের মতো ফ্যাসিবাদী হয়ে উঠতে না পারে, সে জন্য রাষ্ট্রব্যবস্থার ‘প্রয়োজনীয়’ সংস্কার শেষে নির্বাচন দেওয়া হবে। সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের দাবিতে দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের এ সিদ্ধান্তকে স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন জানায় এবং এ জন্য পর্যাপ্ত সময় ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়ে আসছে।
ধারণা ছিল, অন্তর্বর্তী সরকার সংবিধানকে গণমুখী করা এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে অধিকতর শক্তিশালী করতে বিধিবিধান পরিবর্তনের মধ্যেই সংস্কার কার্যক্রম সীমিত রাখবে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে অস্ত্রোপচার করে রাষ্ট্রের আকার-আকৃতি, চেহারা-সুরত পাল্টে দেওয়ার এক মহাযজ্ঞের সূচনা করেছে। গঠন করেছে ছোট-বড় ১১টি সংস্কার কমিশন: সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন, পুলিশ, জনপ্রশাসন, গণমাধ্যম, স্বাস্থ্য খাত, শ্রম, নারীবিষয়ক, স্থানীয় সরকার এবং গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন। আবার এসব বিষয়ে যাতে ‘জাতীয় ঐকমত্য’ প্রতিষ্ঠিত হয় সে জন্য গঠন করা হয় ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’।
সন্দেহ নেই, জাতীয় স্বার্থে দেশের সব রাজনৈতিক দল ও নাগরিকদের মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি। সাধারণত প্রয়োজনের নিরিখে সে ঐক্য স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকে। যেমন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার প্রয়োজনে। এবারও দেশকে আক্ষরিক অর্থে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হলে এমনিতেই জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবে। সে জন্য আলাদা কমিশন গঠন করার প্রয়োজন কেন হলো, বোধগম্য নয়।
গঠিত ১১টি কমিশনের বেশ কয়েকটি তাদের সুপারিশ জমা দিয়েছে সরকারের কাছে। সেসব প্রস্তাব নিয়ে এখন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে। প্রস্তাবগুলোর কিছু বিষয়ে সবাই একমত হলেও অধিকাংশ বিষয়ে দ্বিমত রয়েছে। বিশেষত একই ব্যক্তি দু’বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না বা একই ব্যক্তি দলীয় প্রধান, প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা না হওয়ার যে প্রস্তাব সংস্কার কমিশন করেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অনেকেই বলছেন, এসব সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর হাত-পায়ে বেড়ি পরিয়ে দেওয়ার চেষ্টার শামিল। কেননা, একটি দল সরকারে গেলে সরকারপ্রধান, সংসদ নেতা ও দলীয় প্রধান কে হবেন বা থাকবেন, সেটা সংশ্লিষ্ট দলের গঠনতান্ত্রিক বিষয়। রাষ্ট্র সেখানে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। তা ছাড়া নির্বাচন কমিশন প্রণীত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ দ্বারা রাজনৈতিক দলগুলো এখন নিয়ন্ত্রিত। নতুন করে রাজনৈতিক বিধিবিধান গণতন্ত্র বিকাশে প্রতিবন্ধক হয়ে উঠতে পারে।
এদিকে গত ১৯ এপ্রিল নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন যে রিপোর্ট প্রধান উপদেষ্টা বরাবর পেশ করেছে, তা নিয়ে আপত্তি তুলেছে কয়েকটি সংগঠন। ১৫টি মূল বিষয়সহ ৪৩৩টি প্রস্তাবনার একটিতে জাতীয় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর জন্য মোট আসন ৬০০ করে ৩০০ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত করার সুপারিশ করা হয়েছে। নারীদের জন্য সংসদে আসন সংরক্ষিত রাখার সুপারিশকে ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মূল চেতনার সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক মনে করছেন অনেকে। কেননা, সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বিলোপের দাবিতে গড়ে ওঠা ছাত্র আন্দোলনই পরবর্তী সময়ে রূপ নিয়েছিল গণঅভ্যুত্থানে।
এটা বলা অসমীচীন নয়, ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থান রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে, সর্বস্তরে কোটা পদ্ধতিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। সে প্রত্যাখ্যাত কোটা পদ্ধতি পুনর্বহালের সুপারিশ নারী কমিশন কেন করল, বোধগম্য নয়। তা ছাড়া এ ধরনের কোটা নারীদের জন্য অবমাননাকর নয় কি? জাতীয় সংসদে নারীদের কোটায় আবদ্ধ রাখার অর্থ তাদের অনগ্রসর হিসেবে চিহ্নিত করা। অথচ আমাদের দেশের নারীরা এখন রাষ্ট্র ও সমাজের নানা ক্ষেত্রে পুরুষের সঙ্গে পাল্লা দিতে সক্ষম।
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে আমাদের গ্রামের মাথার বাস স্টপেজকে কেন্দ্র করে একটি ছোট্ট বাজার গড়ে উঠেছে। সেখানে আজিমের চায়ের দোকানে প্রায়ই আড্ডা জমে। ঢাকা থেকে গেলে আমিও অংশীজন হই। সেদিনও সে আড্ডায় অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার নিয়ে কথা হচ্ছিল। কবে সংস্কার শেষ হবে, কবে নির্বাচন হবে– তা নিয়ে একেকজন তাদের জ্ঞানগর্ভ অভিমত ব্যক্ত করছিলেন। এরই মধ্যে কলেজপড়ুয়া এক কিশোর ফোড়ন কেটে বলল, এর পর হয়তো সরকার ‘জাতিসংঘ সংস্কার কমিশন’ গঠন করে বলবে, নির্বাচন ওই সংস্কারের পর। ছেলেটির কথায় হাসির ফোয়ারা ছুটল আসরে। কারও কারও কাপ থেকে ছলকে পড়ে গেল কিছুটা চা।
মহিউদ্দিন খান মোহন: সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক