উপহার পেল পহেলা বৈশাখে জন্ম নেওয়া জেরিনের পরিবার
Published: 30th, April 2025 GMT
‘বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন সন্তানের জন্ম হওয়ায় আমরা একটু বেশি খুশি ছিলাম। সেই খুশি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে সমকাল। কেউ এমন উপহার নিয়ে আমাদের কাছে হাজির হবে এমনটি কল্পনাও করিনি কখনো।’ এভাবেই নিজের অনুভূতি প্রকাশ করছিলেন বাংলা নর্ববর্ষের প্রথম প্রহরে তিনি দ্বিতীয় সন্তানের মা হওয়া জেসমিন আক্তার।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর মিরপুর-১ নম্বরে অবস্থিত মা ও শিশু স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে সমকাল ‘প্রজন্ম বরণের’ উপহার গ্রহণ করেন তিনি। এরপর নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেন।
জেসমিন আক্তার বলেন, সমকালের এমন উপহার পেয়ে আমরা অনেক খুশি। এর আগে কারও থেকেই এমন উপহার পায়নি। আমরা দুই সন্তান। দুই বছর আগে আমাদের ঘর আলোকিত করে আসেন প্রথম কন্যা সন্তান। ছোট মেয়েটি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ তার।
তিনি আরও বলেন, ছোট সন্তানকে চিকিৎসক বানানোর স্বপ্ন। স্বামী অটোরিকশা চালক। তার স্বল্প আয়ে চলে আমাদের সংসার। তবে কষ্ট হলেও সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ করবো। বড় মেয়েকে মাদ্রাসায় পড়াবো। আমার ছোট মেয়ে জেরিন তাবাসসুমকে চিকিৎসক বানানোর স্বপ্ন। আল্লাহ আমাদের স্বপ্ন যেন পূরণ করেন। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন।
প্রজন্ম বরণের উপহার গ্রহণ করতে জেরিনের বাবা রাকিবুল ইসলামও আসেন হাসপাতালে। তিনি বলেন, বাংলা নববর্ষ আমাদের কাছে এমনিতেই আনন্দের দিন, এমন দিনে আমার ঘরে নতুন অতিথি এসেছে এটা আরও আনন্দের। সব চেয়ে বেশি খুশি লাগছে আমাদের মতো মানুষের জন্য পত্রিকা অফিস থেকে উপহার এসেছে।
স্ত্রীর গর্ভে থাকা অবস্থায় অনেক মা বাবার জানার আগ্রহ থাকে। স্ত্রীর গর্ভে মেয়ে না ছেলে সন্তান। তবে আমাদের এমন আগ্রহ ছিল না। আল্লাহ আমাদের যে সন্তান দিয়েছে সেটাতেই অনেক খুশি আমরা। স্ত্রী হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর একটু দুশ্চিন্তায় ছিল। সিজার করানো লাগে কী না। তবে স্বাভাবিক প্রসবে সন্তান জন্ম নিয়েছে। এই ক্ষেত্রে চিকিৎসকের অনেক সহযোগিতা পেয়েছি। হাসপাতালে চিকিৎসকরা অনেক আন্তরিক। রাকিবুলের বাড়ি সিরাজগঞ্জে। ঢাকায় থাকেন সাত বছর ধরে। কিন্তু অল্প পড়াশোনার কারণে অনেক চেষ্টা করেও চাকরি হয়নি। ২০২২ সালে পারিবারিকভাবে জেসমিনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। এখন ইজিবাইক চালিয়ে সংসার চালান রাকিবুল।
হাসপাতালের পরিচালক ডা.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উপহ র আম দ র উপহ র সমক ল
এছাড়াও পড়ুন:
যেকোনো উৎসবকে রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে রাখার আহ্বান বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের
কেবল বাংলা নববর্ষই নয়, যেকোনো উৎসবকে রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম।
মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে "বাংলা নববর্ষ: ইতিহাস, সংস্কৃতি ও উত্তরাধিকার" শীর্ষক এক সেমিনারে বাংলা নববর্ষের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, সাংস্কৃতিক তাৎপর্য ও সামাজিক প্রভাব নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অনুরোধ করেন।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, কেবল বাংলা নববর্ষই নয়, যেকোনো উৎসবকে রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে রাখা জরুরি। রাজনীতির সঙ্গে রাষ্ট্র ও সমাজের সম্পর্ক সঠিকভাবে গড়ে উঠলে কোনো উৎসবই নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত হয় না। মানুষের দৈনন্দিন জীবনে সাংস্কৃতিক চিন্তা-চেতনার যে স্বকীয়তা রয়েছে, তা অক্ষুণ্ন রাখাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত। বুদ্ধিভিত্তিক ও সচেতন উদ্যোগের মাধ্যমে ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব। বাংলা নববর্ষের প্রতি জনগণের গভীর অনুরাগ রয়েছে, তাই এটিকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে।
সেমিনারে আইআরডিসি’র সাধারণ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হকের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন
আইআরডিসি-এর সভাপতি ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন।
সেমিনারে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. নাছির আহমেদ তার মূল প্রবন্ধে বাংলা নববর্ষের ঐতিহাসিক বিবর্তন এবং নববর্ষ উদযাপনের ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকার নিয়ে দুই পর্বে বিশদ আলোচনা করেন। তিনি বলেন, বাংলা নববর্ষ কেবল বাঙালিদের উৎসব নয়, বরং এটি ধর্ম, গোত্র ও সম্প্রদায় নির্বিশেষে সকল বাংলাদেশির একটি সমন্বিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এছাড়া, বাংলা সনের উৎপত্তি, এর অর্থনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা এবং ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মাত্রা নিয়েও তিনি গভীরভাবে আলোকপাত করেন।
এছাড়াও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন এবং বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. ফজলে এলাহি চৌধুরী প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন। তাঁরা বাংলা নববর্ষের আন্তর্জাতিক ও সামাজিক সংহতি এবং সাংস্কৃতিক বিকাশে এর ভূমিকা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতামত তুলে ধরেন। একইসাথে বাংলা নববর্ষের বহুমাত্রিক তাৎপর্য ও এর প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা করেন।
এসময় সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, গবেষক উপস্থিত ছিলেন।