যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন গতকাল বুধবার একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তির পেছনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বড় ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করা হয়। এই চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের খনিজ খাতে বিশেষ সুবিধা পাবে। এখান থেকে ইউক্রেনের যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতি পুনর্গঠনে বিনিয়োগ করবে যুক্তরাষ্ট্র।

বিরল খনিজসহ ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদ ও চুক্তির বিস্তারিত বিষয়ে পর্যালোচনা করা যাক:

গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ও এগুলো কিসে ব্যবহৃত হয়

রেয়ার আর্থ বা বিরল খনিজ হলো ১৭টি ধাতুর একটি সমষ্টি, যেগুলো বৈদ্যুতিক গাড়ি (ইভি), মোবাইল ফোন, ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক যন্ত্র তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এসব ধাতুর কোনো কার্যকর বিকল্প নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ৫০টি খনিজকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে বিরল খনিজ, নিকেল ও লিথিয়াম। এসব গুরুত্বপূর্ণ খনিজ প্রতিরক্ষা, আধুনিক প্রযুক্তি, মহাকাশ গবেষণা এবং পরিবেশবান্ধব শক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রে খুব দরকারি।

বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম বলেছে, লিথিয়াম, বেরিলিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, গ্যালিয়াম, জিরকোনিয়াম, গ্রাফাইট, অ্যাপাটাইট, ফ্লুরাইট ও নিকেল সরবরাহের ক্ষেত্রেও সম্ভাবনাময় দেশ ইউক্রেন।ইউক্রেনে কী ধরনের খনিজ আছে

ইউক্রেনের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ইউরোপীয় ইউনিয়নের চিহ্নিত ৩৪টি গুরুত্বপূর্ণ খনিজের মধ্যে ২২টি খনিজ রয়েছে ইউক্রেনে। এর মধ্যে রয়েছে শিল্প ও নির্মাণসামগ্রী, মূল্যবান ধাতু, ইস্পাতশিল্পের প্রয়োজনীয় উপকরণ ও কিছু বিরল খনিজ।

ইউক্রেনের ভূতত্ত্ব ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে, দেশটিতে ল্যান্থানাম ও সেরিয়াম নামের বিরল খনিজ রয়েছে—যেগুলো টেলিভিশন ও বাতি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। আছে নিয়োডিমিয়াম, যা উইন্ড টারবাইন ও বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারিতে ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া ইরবিয়াম ও ইট্রিয়াম রয়েছে—যেগুলো পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও লেজার প্রযুক্তিতে দরকার হয়।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় পরিচালিত গবেষণা বলছে, ইউক্রেনে স্ক্যান্ডিয়ামের মজুতও রয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য গোপন রাখা হয়েছে।

বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম বলেছে, ইউক্রেন ভবিষ্যতে লিথিয়াম, বেরিলিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, গ্যালিয়াম, জিরকোনিয়াম, গ্রাফাইট, অ্যাপাটাইট, ফ্লোরাইট এবং নিকেলের অন্যতম সম্ভাবনাময় সরবরাহকারী দেশ হতে পারে।

ইউক্রেনের ভূতাত্ত্বিক সংস্থা জানিয়েছে, সে দেশে ইউরোপের অন্যতম বৃহৎ লিথিয়াম মজুত রয়েছে, যার পরিমাণ আনুমানিক পরিমাণ পাঁচ লাখ মেট্রিক টন। এই লিথিয়াম ব্যাটারি, সিরামিক ও কাচ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।

ইউক্রেনে টাইটানিয়ামেরও মজুত রয়েছে। এই খনিজ প্রধানত দেশটির উত্তর-পশ্চিম ও মধ্যাঞ্চলে মজুত রয়েছে। লিথিয়াম পাওয়া যায় মধ্য, পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে।

ইউক্রেনে প্রচুর পরিমাণে গ্রাফাইট রয়েছে, যা বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি ও পারমাণবিক চুল্লিতে ব্যবহৃত হয়। বিশ্বে গ্রাফাইটের মোট মজুতের প্রায় ২০ শতাংশ রয়েছে ইউক্রেনে। এই খনিজের মজুত দেশটির মধ্য ও পশ্চিমাঞ্চলে।

ইউক্রেনে কয়লারও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ মজুত রয়েছে। তবে দেশটির কয়লার বড় অংশ এখন রাশিয়ার দখলে চলে গেছে।

খনিজ বিশ্লেষক ও অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, ইউক্রেনে বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে কোনো বিরল খনি চালু নেই। চীন এখন বিশ্বে এই খাতের এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজের শীর্ষস্থানীয় উৎপাদক।

গ্রাফাইটের বৈশ্বিক ভূগর্ভস্থ মজুতের ২০ শতাংশই আছে ইউক্রেনে। বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি উৎপাদন ও পারমাণবিক চুল্লিতে এ খনিজ ব্যবহৃত হয়।চুক্তি সম্পর্কে কী জানা গেল

কয়েক মাস ধরে কঠিন আলোচনার পর শেষ মুহূর্তের অনিশ্চয়তার মধ্যেই ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে খনিজ চুক্তি সই হয়েছে।

এ চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনকে পুনর্গঠনের জন্য একটি যৌথ বিনিয়োগ তহবিল গঠিত হবে। এমন সময় চুক্তিটি সই হলো, যখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে একটি শান্তিপূর্ণ চুক্তির প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের পোস্ট করা এক ছবিতে দেখা গেছে, মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ও ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী (প্রথম) ইউলিয়া সভিরিদেনকো চুক্তিতে স্বাক্ষর করছেন।

সভিরিদেনকো এক্সে লেখেন, যুক্তরাষ্ট্র (ইউক্রেন পুনর্গঠন) তহবিলে আর্থিক সহায়তা দেবে। চুক্তিতে ইউক্রেনের জন্য নতুন সহায়তার সুযোগ রাখা হয়েছে, যেমন বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। যদিও যুক্তরাষ্ট্র এই দাবি নিয়ে সরাসরি কিছু বলেনি।

সভিরিদেনকো বলেন, কোথায় ও কী খনিজ উত্তোলন হবে, সে সিদ্ধান্ত নেবে ইউক্রেন। দেশের ভূগর্ভস্থ সম্পদ ইউক্রেনের মালিকানায় থাকবে।

এই চুক্তির অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ইউক্রেনের কোনো ঋণের বাধ্যবাধকতা নেই। আর এ বিষয়টি দীর্ঘ আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল।

তবে খসড়া চুক্তিতে ইউক্রেনের জন্য নির্দিষ্ট কোনো মার্কিন নিরাপত্তার নিশ্চয়তা রাখা হয়নি, যদিও সেটিই ছিল ইউক্রেনের প্রাথমিক চাওয়া।

ইউক্রেনের কোন কোন খনিজের মজুত এখন কিয়েভের নিয়ন্ত্রণে

রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেন ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এখন দেশটির প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ড রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে।

যুদ্ধের আগে ইউক্রেনের কয়লার মূল ভান্ডার ছিল পূর্বাঞ্চল, যা এখন রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে।

ইউক্রেনের থিঙ্কট্যাংক উই বিল্ড ইউক্রেন ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ গত বছরের প্রথমার্ধের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, দেশটির প্রায় ৪০ শতাংশ ধাতব সম্পদের মজুত এখন রাশিয়ার দখলে। যদিও এর বেশি কোনো তথ্য দেয়নি প্রতিষ্ঠান দুটি।

রুশ বাহিনী ধীরে ধীরে দোনেৎস্ক অঞ্চলে অগ্রসর হয়েছে। অঞ্চলটির পোকরোভস্ক শহরের কাছে অবস্থিত একমাত্র কোকিং কয়লা খনিটি জানুয়ারিতে ইউক্রেন বন্ধ করে দেয়। বর্তমানে শহরটি দখলের চেষ্টা করছে মস্কো।

যুদ্ধের মধ্যে রাশিয়া অন্তত দুটি লিথিয়াম খনি দখল করেছে। এর মধ্যে একটি দোনেৎস্কে এবং অন্যটি দক্ষিণ-পূর্বের জাপোরিঝঝিয়া অঞ্চলে অবস্থিত। তবে কিয়েভ এখনো কেন্দ্রীয় কিরোভোহ্রাদ অঞ্চলের খনিজ সম্পদের মজুত নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।

মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ও ইউক্রেনের প্রথম উপপ্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া সভিরিদেনকো গতকাল বুধবার খনিজ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ ত হয় ইউক র ন র ও ইউক র ন গ র ফ ইট পর ম ণ

এছাড়াও পড়ুন:

সকালের সবচেয়ে বরকতময় সময় ব্যবহারের ৭ কৌশল

সকাল মানুষের জীবনের একটি মূল্যবান সময়, যা দিনের বাকি অংশের জন্য সুর নির্ধারণ করে। সকাল আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করার, শরীর ও মনকে প্রস্তুত করার এবং দিনের লক্ষ্য অর্জনের একটি সুবর্ণ সুযোগ।

সামাজিক মাধ্যম, কাজের চাপ এবং পারিবারিক দায়িত্ব আমাদের অনেক সময় কেড়ে নেয়, তাই সকালকে সঠিকভাবে ব্যবহার করে আমরা জীবনকে আরও উৎপাদনশীল করতে পারি।

১. আল্লাহর সঙ্গে দিনের শুরু

ফজরের নামাজের ১৫-২০ মিনিট আগে উঠে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া এবং দোয়া করা জীবনকে আমূল বদলে দিতে পারে। এই সময়টি শান্ত ও পবিত্র, যখন আল্লাহর সঙ্গে কোনো বাধা থাকে না।

কে আছে আমাকে ডাকার, আমি সাড়া দেব? কে আছে আমার কাছে চাওয়ার, আমি দান করব? কে আছে ক্ষমা প্রার্থনা করার, আমি ক্ষমা করব?সহিহ বুখারি, হাদিস: ১,১৪৫

নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘প্রতি রাতে, যখন রাতের শেষ তৃতীয়াংশ বাকি থাকে, তখন আমাদের রব নিকটতম আসমানে নেমে আসেন এবং বলেন, ‘কে আছে আমাকে ডাকার, আমি সাড়া দেব? কে আছে আমার কাছে চাওয়ার, আমি দান করব? কে আছে ক্ষমা প্রার্থনা করার, আমি ক্ষমা করব?”’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১,১৪৫)।

তাহাজ্জুদের সময় আপনার হৃদয়ের কথা আল্লাহর কাছে প্রকাশ করুন। এতে মানসিক শান্তি বাড়বে এবং দিনের জন্য ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে। যদি আপনি নতুন হন, সপ্তাহে এক দিন থেকে শুরু করুন এবং ধীরে ধীরে এটি অভ্যাসে পরিণত করুন।

ফজরের আগে অবশিষ্ট সময়ে কোরআন তিলাওয়াত করুন, কারণ কোরআনে বলা হয়েছে, ‘ভোরে কোরআন পড়া (ফেরেশতাদের) দ্বারা প্রত্যক্ষ করা হয়।’ (সুরা ইসরা. আয়াত: ৭৮)।

আরও পড়ুনইশরাকের নামাজ: সকালের আলোয় আল্লাহর নৈকট্য ০৪ জুলাই ২০২৫২. ফজরের পর ঘুম থেকে দূরে থাকুন

ফজরের নামাজের পর ঘুমিয়ে পড়া অনেকের অভ্যাস, কিন্তু এটি সকালের বরকতময় সময় নষ্ট করে। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ আমার উম্মতের জন্য সকালের সময়কে বরকতময় করেছেন।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ২৬,৪৮১)।

এই সময়ে বড় বড় কাজ সহজে সম্পন্ন করা যায়, কারণ এতে আল্লাহর বিশেষ বরকত রয়েছে।

আল্লাহ আমার উম্মতের জন্য সকালের সময়কে বরকতময় করেছেন। মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ২৬,৪৮১

ফজরের পর ঘুমের প্রলোভন এড়াতে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। এই সময়ে পড়াশোনা, কোরআন মুখস্থ করা বা কোনো ব্যক্তিগত প্রকল্পে কাজ করা যায়। এটি দিনের বাকি সময়ে অবসরের জন্য সময় বাঁচায় এবং আগামী দিনে আরও তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস তৈরি করে।

বিশ্বের সফল ব্যক্তিরাও ভোর চারটা বা পাঁচটায় উঠে কাজ শুরু করার কথা বলেন, যা তাদের সাফল্যের একটি রহস্য।

৩. করণীয় তালিকা তৈরি করুন

একটি করণীয় তালিকা তৈরি করা দিনের পরিকল্পনাকে সুসংগঠিত করে। আমরা প্রায়ই মনে মনে কাজের পরিকল্পনা করি, কিন্তু মস্তিষ্কের ধারণক্ষমতা সীমিত। একটি ডায়েরি বা ফোনের নোট অ্যাপে কাজের তালিকা লিখে রাখলে সময় ও শক্তি সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়। সম্পন্ন হওয়া কাজগুলো তালিকা থেকে কেটে দেওয়ার একটা আলাদা আনন্দ আছে।

এই তালিকায় দৈনন্দিন কাজের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যও অন্তর্ভুক্ত করুন। যেমন কোরআনের একটি নির্দিষ্ট অংশ মুখস্থ করা বা একটি নতুন দক্ষতা শেখার পরিকল্পনা। এটি আপনাকে দিনের শুরুতে ফোকাসড রাখবে এবং উৎপাদনশীলতা বাড়াবে।

আরও পড়ুনযে ৪টি পরীক্ষা নবীজি (সা.)–এর জীবনকে দৃঢ়তা দিয়েছে২২ জুলাই ২০২৫বিশ্বের সফল ব্যক্তিরাও ভোর চারটা বা পাঁচটায় উঠে কাজ শুরু করার কথা বলেন, যা তাদের সাফল্যের একটি রহস্য।৪. সকালে স্ক্রিন থেকে দূরে থাকুন

সকালের মূল্যবান সময় সামাজিক মাধ্যমে বা ফোনে অযথা স্ক্রল করে নষ্ট করা উচিত নয়। অনেকে সকালে ফোন হাতে নিয়ে ‘শুধু একটু দেখে নিই’ ভেবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা হারিয়ে ফেলেন। এটি মানসিক চাপ বাড়ায় এবং সকালের শান্তি নষ্ট করে।

নিয়ম করুন, সকালের নাশতা বা কিছু কাজ শুরু না করা পর্যন্ত ফোন বা সামাজিক মাধ্যমে যাবেন না। সকালে খবর পড়া এড়িয়ে চলুন। কারণ, এটি নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করতে পারে। যখন ফোন ব্যবহার করবেন, তখন ইতিবাচক ও প্রেরণাদায়ক কনটেন্ট দেখুন, যা আপনার দিনকে উজ্জ্বল করবে।

৫. শরীরচর্চা করুন

শরীরচর্চার উপকারিতা আমরা সবাই জানি। বিশেষ করে এই সময়ে, যখন অনেকে বাড়ি থেকে কাজ করছেন, শরীরচর্চা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। বাড়িতে কাজ করার ফলে ঘাড়ে ও পিঠে ব্যথা, পেশির সমস্যা বাড়ছে।

সকালে মাত্র ৩০ মিনিট শরীরচর্চা, যেমন যোগ, পাইলেটস, হাই-ইনটেনসিটি ইন্টারভাল ট্রেনিং বা ব্রিস্ক ওয়াক, আপনার শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়াবে এবং মনকে সতেজ করবে।

ইউটিউবে হাজারো ধরনের ব্যায়ামের ভিডিও পাওয়া যায়, যা বাড়িতে সামান্য জায়গায় করা যায়। যদি বাইরে যাওয়ার সুযোগ থাকে, তবে সকালে ৩০ মিনিট হাঁটুন। লক্ষ্য হলো শরীরকে সচল রাখা এবং শক্তি বৃদ্ধি করা।

আরও পড়ুনসুস্থ জীবন যাপনে মহানবী (সা.)-এর ৯ অভ্যাস২৪ জুলাই ২০২৫সকালে মাত্র ৩০ মিনিট শরীরচর্চা, যেমন যোগ, পাইলেটস, হাই-ইনটেনসিটি ইন্টারভাল ট্রেনিং বা ব্রিস্ক ওয়াক, আপনার শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়াবে এবং মনকে সতেজ করবে।৬. পুষ্টিকর নাশতা গ্রহণ

ব্যস্ততার কারণে অনেকে সকালের নাশতা বাদ দেন, কিন্তু গবেষণা বলছে, পুষ্টিকর নাশতা দিনভর মনোযোগ বাড়ায়, অপ্রয়োজনীয় চিনির লোভ কমায় এবং শক্তি জোগায়। নাশতায় উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার, যেমন ওটস বা মাল্টিগ্রেইন রুটি, স্বাস্থ্যকর চর্বি যেমন অ্যাভোকাডো বা বাদাম, গ্রিক ইয়োগার্ট এবং ফল অন্তর্ভুক্ত করুন।

সময় কম থাকলে একটি স্মুদি তৈরি করুন—পালংশাক, আপেল এবং হিমায়িত কলা ব্লেন্ড করে সুস্বাদু ও পুষ্টিকর নাশতা তৈরি করা যায়। এটি দিনের শুরুতে সবুজ শাকসবজি গ্রহণের একটি সহজ উপায়।

৭. নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন

বাড়ি থেকে কাজ করার সময় অনেকে ক্যাজুয়াল পোশাকে থাকেন। বরং সকালে সুন্দর পোশাক পরুন, যা আপনার মেজাজ উজ্জ্বল করবে। একটু পছন্দের সুগন্ধি ব্যবহার করলে আত্মবিশ্বাস বাড়বে।

আল্লাহ সুন্দর এবং তিনি সৌন্দর্য পছন্দ করেন।সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯১

নবীজি (সা) বলেছেন, ‘আল্লাহ সুন্দর এবং তিনি সৌন্দর্য পছন্দ করেন।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯১)। নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা শুধু বাহ্যিক নয়, বরং এটি আপনার মানসিক প্রস্তুতি ও দিনের জন্য উৎসাহ বাড়ায়।

সকাল আমাদের দিনের ভিত্তি। ইসলাম আমাদের শেখায় যে সকাল আল্লাহর বরকত নিয়ে আসে। তাহাজ্জুদ, ফজরের পর জাগ্রত থাকা, করণীয় তালিকা তৈরি, স্ক্রিন থেকে দূরে থাকা, শরীরচর্চা, পুষ্টিকর নাশতা এবং নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন—এই সাতটি অভ্যাস আমাদের সকালকে উৎপাদনশীল করবে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

সূত্র: দ্য মুসলিম ভাইব ডট কম

আরও পড়ুনরহমতের দুয়ারে হাজিরা১৫ জুন ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ