বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেছেন, “বিএনপি ৩১ দফা জাতির সামনে পেশ করেছে। সেখানে শিক্ষা ও ক্রীড়াকে গুরত্ব দেওয়া হয়েছে।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে ক্রিকেটে যে সমাদৃত হয়েছে তা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কনিষ্ঠ সন্তান আরাফাত রহমান কোকোর অবদান। ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও মাশরাফি বিন মুর্তুজার মতো অনেক ক্রিকেটার তৈরির পেছনে তিনি ভূমিকা রেখেছেন।” 

শুক্রবার (২ মে) বিকেলে টাঙ্গাইলে বিন্দুবাসিনী ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়।

আরো পড়ুন:

৫ মে দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া, প্রস্তুত ফিরোজা

রাজনৈতিক দলকে জনগণের আদালতে আনার উদ্যোগ নিতে হবে: তারেক রহমান

সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, “ক্রীড়াঙ্গনে টাঙ্গাইলের ঐতিহ্য রয়েছে। টাঙ্গাইলের ছেলেরা ঢাকার বুকে ক্রীড়াঙ্গনে একসময় ভূমিকা রেখেছেন। বিগত দিনে যারা ক্ষমতায় ছিলেন, তারা সন্ত্রাসকে লালন করেছেন। টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যকে নষ্ট করেছেন তারা। আগামী দিনগুলোতে আমরা টাঙ্গাইলকে এগিয়ে নিয়ে যাব। পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলা মানুষের শারীরিক ও মানসিক শক্তি বৃদ্ধি করে।”

বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন গ্রুপের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মোহাম্মদ শাহজাদা সেলিম, টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল, জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানু, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুর রহমান খান শফিক।

বিন্দুবাসিনী ক্রিকেট টুর্নামেন্টে অমর-২০২১ ব্যাচকে ১১১ রানে পরাজিত করে প্রজ্জোলন-২০১৪ ব্যাচ চ্যাম্পিয়ন হয়। ফাইনাল খেলা শেষে অতিথিরা বিজয়ী ও বিজিতদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।

এর আগে, বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শুক্রবার সকালে বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদের লাল ও সাদা দলের মধ্যে প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়।

ঢাকা/কাওছার/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ রহম ন ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

কাজের আনন্দই জীবনের সার্থকতা

জন্মদিনের অনুষ্ঠান নয়, তবে অনানুষ্ঠানিক আয়োজনটি ছিল সে উপলক্ষেই। আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগর, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষাবিদ ও সুবক্তা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের জন্মদিন ছিল গত ২৫ জুলাই। তাঁর অগণিত অনুরাগীরা চেয়েছিলেন তাঁকে নিয়ে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে মিলিত হতে। উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের যে হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে গেছে, তারপর আর জন্মদিনের অনুষ্ঠান করতে কিছুতেই সম্মত হননি তিনি।

শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ষষ্ঠতলায় কেন্দ্রের প্রাক্তনী ও তাঁর কিছু ঘনিষ্ঠজন আলাপচারিতার এক ঘরোয়া আয়োজন করেছিলেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে নিয়ে। সেখানে তিনি বললেন, কাজের মধ্য দিয়ে জীবনে যে আনন্দ পেয়েছেন, সেটিই জীবনের সার্থকতা। এই আনন্দই তাঁকে অনুপ্রাণিত করে, শক্তি জোগায়।

এ আয়োজনে অংশগ্রহণকারীরা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেছেন। তিনি তাঁর চিরপরিচিত সরস অথচ বুদ্ধিদীপ্ত গভীর তাৎপর্যময় কথায় উত্তর দিয়েছেন। কবিতা, সাহিত্য, শিল্প থেকে শিক্ষা, ইতিহাস, দর্শন, ধর্ম, রাজনীতি, অর্থনীতি, সংগঠন, প্রেম–ভালোবাসা—সবকিছু উঠে আসে প্রশ্নোত্তরভিত্তিক কথোপকথনে। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল থেকে শুরু করে বিশ্বসাহিত্যের বহু কালজয়ী লেখকের রচনা থেকে প্রচুর উদ্ধৃতি দিয়েছেন তিনি। এক অন্তরঙ্গ প্রাণবন্ত আবহ বিরাজমান ছিল সন্ধ্যা থেকে অনেকটা রাত অবধি এই আয়োজনে।

আবৃত্তিশিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় শুরুতেই আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের একটি কবিতা আবৃত্তি করে জানতে চান, তিনি কবিতার চর্চা করেননি কেন? জবাবে তিনি বলেন, কবি শামসুর রাহমান একবার তাঁকে বলেছিলেন, তাঁর মধ্যে কবিত্বের ঘাটতি আছে। তাঁর নিজেরও সে রকম মনে হয়েছে। তারপর সাহিত্য পত্রিকা কণ্ঠস্বর প্রকাশ ও অনেক রকম কাজ করতে গিয়ে আর কবিতা লেখা হয়ে ওঠেনি।

অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য প্রশ্ন করেন, এখন একটা কঠিন সময় যাচ্ছে। তরুণ প্রজন্মকে কীভাবে দেখেন, কী আশা করেন তাদের কাছে?

আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘তরুণেরা কী হবে, তা তরুণদের ওপরে নির্ভর করে না। সেটা নির্ভর করে আমরা তাদের কী বানাতে চাই, তার ওপর। দেখতে হবে তরুণদের গড়ার মতো আমাদের ক্ষমতা কতটা আছে। অর্থাৎ শিক্ষক কেমন হবে, তার ওপরে নির্ভর করে তাঁর ছাত্র কেমন হবে। সক্রেটিস শিক্ষক ছিলেন বলে ছাত্র প্লেটো হয়েছেন। প্লেটোর শিক্ষা পেয়ে ছাত্র অ্যারিস্টটল হতে পেরেছেন। বড়দের যদি বড়ত্ব না থাকে, তবে ছোটরা বড় হতে পারে না। দুর্ভাগ্য যে আমরা বড়রা তাদের সামনে আদর্শ দাঁড় করাতে পারিনি। ফলে এখন বড়দেরই ছোটদের পেছনে দাঁড়াতে হচ্ছে।’

ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্‌ফুজ আনাম জানতে চান, তিনি এত বিচিত্র ধরনের এত বিপুল কাজ করেছেন। এই প্রাণশক্তি পান কেমন করে?

উত্তর দিতে গিয়ে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘শক্তি আসে আনন্দ থেকে। কাজ করতে পারাটাই আনন্দের। আর সব সময় আশাবাদী থাকি। আশা কখনো শেষ হয় না। আশা শেষ মানে আমি শেষ।’

আলাপচারিতায় আরও অংশ নেন দুদক চেয়ারম্যান এম এ মোমেন, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ, চিকিৎসক আমজাদ হোসেন, অভিনয়শিল্পী খায়রুল আলম সবুজ, কথাশিল্পী আনিসুল হক, ছড়াকার আমিরুল ইসলাম, উপস্থাপক আবদুন নূর তুষার, অভিনয়শিল্পী আফসানা মিমি, মশিউর রহমান, আলী নকী প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রাক্তনী খাদিজা রহমান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ