চার কর্মদিবসের মধ্যে শেষ তিন দিনে বেশির ভাগ শেয়ার দর হারানোয় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৭৭ পয়েন্ট হারায় গত সপ্তাহে। যদিও এপ্রিলের শেষ ওই সপ্তাহের শুরুটা হয়েছিল সূচকের ২২ পয়েন্ট বৃদ্ধি দিয়ে।
বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানের বড় কর্মকর্তারা বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চেয়ারম্যান পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন বা সরকার তাঁকে সরিয়ে দিতে যাচ্ছে– এমন একটি গুজবের কারণে গত সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে বেশির ভাগ শেয়ার দর ও সূচক বেড়েছিল। গতকাল একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছে। অখ্যাত অনলাইন পোর্টালের পাশাপাশি সামাজিক গণমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে– বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদকে সরিয়ে নতুন একজনকে নিয়োগ দিতে যাচ্ছে সরকার। এমন গুজবের পর হঠাৎ করে শেয়ার দর ও সূচক বেড়েছে। যদিও শেষ পর্যন্ত এর সত্যতা মেলেনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বড় ব্রোকারেজ হাউসের সিইও সমকালকে বলেন, লাগাতার দর পতনের জন্য বিএসইসির দুর্বল নেতৃত্বকে দায়ী করছেন বিনিয়োগকারীরা। কিছুদিন ধরে গুঞ্জন আছে, সরকার তাঁকে সরিয়ে দেবে। এ নিয়ে গুজব ছড়ানোর প্রভাব ছিল শেয়ারবাজারে।
ধারাবাহিক পতনের পর গতকাল বেশির ভাগ শেয়ারের দর বৃদ্ধি দিয়ে লেনদেন শুরু হয়। বেশির ভাগ বিনিয়োগকারী সতর্ক বিনিয়োগ কৌশলে থাকায় প্রথম ঘণ্টায় আড়াই শতাধিক শেয়ারের দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৮০টিরও কম শেয়ারের দর হ্রাসের পরও সূচক বেড়েছিল সর্বোচ্চ ২০ পয়েন্ট। মাঝের দুই ঘণ্টায় বেশির ভাগ শেয়ার দর হারালে সূচক উল্টো ৭ পয়েন্ট হারিয়ে নেমেছিল ৪৯১০ পয়েন্টে।
শেষ দেড় ঘণ্টায় স্বাভাবিক লেনদেন শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত ক্রমাগত শেয়ার দর ও সূচক বৃদ্ধির গতি বাড়ে। দিনের সর্বনিম্ন অবস্থান থেকে টানা ৫৯ পয়েন্ট বেড়ে ৪৯৬৯ পয়েন্ট ছাড়িয়েছিল ডিএসইএক্স। শেয়ারদরের সমাপনী মূল্যের হিসাবে ৩৮ পয়েন্ট বেড়ে সূচক থামে ৪৯৫৬ পয়েন্টে।
দিন শেষের তথ্য অনুযায়ী, এদিন ডিএসইতে ২৯০ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর বৃদ্ধির বিপরীতে ৬৫টি দর হারিয়েছে, অপরিবর্তিত ৩৮টির দর। পুরো দিনে কেনাবেচা হয়েছে ৩৯৯ কোটি টাকার শেয়ার, যা আগের কর্মদিবসের তুলনায় পৌনে ৭৩ কোটি টাকা বেশি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র দর হ র
এছাড়াও পড়ুন:
৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি কোম্পানির সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও তা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন না করায় সাত নিরীক্ষক (অডিটর) প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ বছরের জন্য অডিট এবং অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
সেইসঙ্গে ওই নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষকদের কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে তাদের শুনানিতে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
আরো পড়ুন:
সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি: ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা
পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ সভা
গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৭৩তম কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক এ হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; রিংসাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক যথাক্রমে: আহমেদ অ্যান্ড আক্তার, মাহফেল হক অ্যান্ড কোং, আতা খান অ্যান্ড কোং এবং সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; আমান কটন ফাইব্রাস লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক ইসলাম কাজী শফিক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস এবং ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৮ ও ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক মাহফেল হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন করেনি।
এ সকল নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষককে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানি, সকল ধরনের বিনিয়োগ স্কিম (যথা- মিউচ্যুয়াল ফান্ড, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) এবং পুঁজিবাজারে মধ্যস্থতাকারী সকল প্রতিষ্ঠানের অডিট ও অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রম পরিচালনার উপর নিষেধাজ্ঞা তথা পাঁচ বছরের জন্য অডিট ও অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণে কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে শুনানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/এনটি/বকুল