২ / ৭পার্কে এখনো টিকে রয়েছে সুবিশাল কিছু গাছ
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কুষ্টিয়ায় প্রতারণার অভিযোগে নারী চিকিৎসককে মারধর
কুষ্টিয়ায় শারমিন সুলতানা নামে এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে সরকারি চাকরি, সরকারি ঘর ও জমি, ভাতা দেওয়াসহ বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় ৫০ জনের কাছে থেকে ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। পাওনা টাকা না পেয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করেছেন ভুক্তভোগীরা।
সোমবার (৫ মে) দুপুর ১টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের লাইফ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তাকে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ। ওই নারী একজন এমবিবিএস চিকিৎসক। তিনি বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে রোগী দেখেন বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন।
মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর এলাকার সুমি খাতুন বলেন, ‘‘আমি অসুস্থ হয়ে কুষ্টিযায় ডা. শারমিন সুলতানা কাছে এসেছিলাম। তার কাছে চিকিৎসা নিয়েছিলাম। তার সঙ্গে বেশ কয়েক বছরের পরিচয়। হঠাৎ করে ৭-৮ মাস আগে সরকারি চাকরি, জায়গা-জমি, ঘরবাড়ি ও ভাতার ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা বলে আমাদের কাছে থেকে টাকা নিয়েছেন ডা. শারমিন। তার প্রলোভনে পড়ে আমি, আমার আত্মীয়-স্বজনসহ ৩০ থেকে ৪০ জন তাকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা দিয়েছি। তিনি আমাদের টাকাও ফেরত দেন না, চাকরিও দেন না, জমিও দেন না, ভাতার ব্যবস্থা করেও দেন না।’’
আরো পড়ুন:
ঈদের ছুটিতে হাসপাতালে সেবা নিশ্চিত করতে সরকারের ১৬ নির্দেশনা
সংকট নিরসনে বিশেষ বিসিএসে নিয়োগ হবে ২ হাজার চিকিৎসক
তিনি আরো বলেন, ‘‘তাই আজকে আমরা কুষ্টিয়ায় এসেছি। আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আমরা আমাদের টাকা ফেরত চাই। আমরা গরিব মানুষ, ধারদেনা করে বিভিন্নভাবে কষ্ট করে টাকা ম্যানেজ করে তাকে দিয়েছে। আমরা আমাদের টাকা ফেরত চাই।’’
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গার দর্শনার সালমা খাতুন বলেন, ‘‘ডা. শারমিন সুলতানা সরকারি চাকরি, জমি, ঘরবাড়ি ও ভাতার ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে আমাদের ৫০ থেকে ৬০ জনের কাছে থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। জমি দেওয়ার কথা বলে আমার কাছে থেকে ৩০ হাজার টাকা নিয়েছেন। আর আমার স্বামীর কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা নিয়েছেন। আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আমরা আমাদের টাকা ফেরত পেতে চাই।’’
চুয়াডাঙ্গার দর্শনা এলাকার খাদিজা খাতুন বলেন, ‘‘জমি দেওয়ার নাম করে আমার কাছ থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা নিয়েছেন ডা. শারমিন। প্রলোভন দিয়ে টাকা নিয়েছেন তিনি। এখন টাকাও ফেরত দেন না, জমিও দেন না। আমার মতো অনেকের কাছ থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন এই ডাক্তার। টাকা আদায়ের জন্য আমরা কুষ্টিয়ায় এসেছি। আমরা আমাদের টাকা ফেরত চাই। আমরা এই ডাক্তারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’’
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা এলাকার জাহিরা খাতুন বলেন, ‘‘আমার কেউ নেই। আমি খুব গরিব মানুষ। আমার দুইটা ছাগল ছিল। সেই ছাগল বিক্রি করে শারমিন ডাক্তারকে টাকা দিয়েছি। প্রলোভন দেখিয়ে ঘর দেওয়ার নাম করে আমার কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা নিয়েছেন। পরে টাকাও দেন না, ঘরও দেন না। আমরা তার শাস্তি চাই। আমার টাকা ফেরত চাই।’’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ডা. শারমিন সুলতানা বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি তাদের কাছ থেকে কোনো টাকা নিইনি। তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন। দুপুরে আমি একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যাই। এ সময় তারা আমাকে মারধর করেন এবং আমার গহনা ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেন।’’
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘‘খবর পেয়ে আমরা ওই চিকিৎসককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছি। চিকিৎসকের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলেছেন বেশ কয়েকজন নারী। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল