নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি) শাখার দুই কর্মীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

তারা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মাসুদ রানা সরকারের অনুসারী কল্যাণ রায় শুভ এবং নাইম জিসান। তারা উভয়ই ইতিহাস বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। 

মঙ্গলবার (১৩ মে) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে কল্যাণ রায় শুভকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এবং সন্ধ্যা ৭টার দিকে নাইম জিসানকে পাবনার শালগাড়িয়ার তালবাগান এলাকা থেকে আটক করেন শিক্ষার্থীরা।

আরো পড়ুন:

পাবিপ্রবিতে জাতীয় সংগীত গেয়ে ‘অবমাননা’র প্রতিবাদ

সমাধান না পেয়ে আবারো রেলপথ অবরোধ বাকৃবি শিক্ষার্থীদের

শিক্ষার্থীরা জানান, মঙ্গলবার বিকেলে পরীক্ষা শেষ করে বের হলে কল্যাণ রায় শুভকে আটক করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে পুলিশ এসে থানায় নিয়ে যায়। কল্যাণ রায় শুভের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশ নাইম জিসানের মেসে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করেন।

শিক্ষার্থীরা আরো জানান, কল্যাণ রায় শুভ এবং নাইম জিসান দুজনেই বিগত সরকারের সময় ছাত্র নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০২৩ সালে রমজানে হলে তিন শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। মঙ্গলবার তাদের দুজনের পরীক্ষা ছিল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড.

কামরুজ্জামান খান বলেন, “বিকেলে কয়েকজন শিক্ষার্থী কল্যাণ রায় শুভ নামের এক শিক্ষার্থীকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসেন। ওরা ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আমাদের কাছে আগে নির্যাতনের অভিযোগ করেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেহেতু ফৌজদারি বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না, তাই আমরা বিষয়টা পাবনা সদর থানাকে অবগত করি। থানা থেকে পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যায়।”

এ বিষয়ে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস সালাম বলেন, “ছাত্রলীগের দুই কর্মীকে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। যে শিক্ষার্থীরা তাদের আটক করেছেন, তারা আমাদের জানিয়েছেন, ওই দুই ছাত্রলীগ কর্মী শিক্ষার্থী নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। কিন্তু আমরা এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/আতিক/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কল য ণ র য় শ ভ

এছাড়াও পড়ুন:

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি‌ বরাবর অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ