এস আলমের সময়ে নিয়োগ পাওয়া কর্মীদের নিয়ে কী ভাবছে ইসলামী ব্যাংক
Published: 21st, October 2025 GMT
চট্টগ্রামের এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকার সময় নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তা–কর্মচারীদের নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে বেসরকারি খাতের ইসলামী ব্যাংক। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে এস আলম গ্রুপ। তখন পালিয়ে যান গ্রুপ–সংশ্লিষ্ট শীর্ষ পর্যায়ের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা। এখন এস আলমের সময়ে নিয়ম না মেনে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের নিয়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা আঁটছে ব্যাংকটির বর্তমান কর্তৃপক্ষ। শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে এরই মধ্যে প্রায় সাড়ে চার হাজার কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। একদিকে চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে, অন্যদিকে নতুন জনবল নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে ব্যাংকটি।
এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকার সময় ইসলামী ব্যাংক থেকে নামে–বেনামে প্রতিষ্ঠানটি ৮০ হাজার কোটি টাকা তুলে নেয়। এসব ঋণের সবই এখন খেলাপি হয়ে পড়েছে। ফলে ব্যাংকটির প্রায় অর্ধেক ঋণই এখন খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। বিপুল ঋণখেলাপির কারণে ব্যাংক মূলধনের ঘাটতিতে পড়েছে। গত জুন শেষে ব্যাংকটির মূলধনের ঘাটতি বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা।
কত কর্মী নিয়োগ দিয়েছে এস আলম
২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি ইসলামী ব্যাংকের দখল নেয় এস আলম গ্রুপ। ব্যাংকটির মানবসম্পদ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, তখন ব্যাংকটির কর্মীর সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার ৫১৫। ২০২৪ সালে ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ হারানোর সময় কর্মীর সংখ্যা ছিল ২১ হাজার ৭০৬। এই সময়ের মধ্যে ২ হাজারের মতো কর্মী নিয়মিত অবসের যান। সেই হিসাবে দেখা যায়, এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর ব্যাংকটিতে প্রায় ১০ হাজার ৮৩৪ কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়। কোনো ধরনের নিয়োগ পরীক্ষা ছাড়াই এসব কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। এস আলমের সময়ে নিয়োগ পাওয়া কর্মীদের মধ্যে শুধু চট্টগ্রাম জেলার কর্মী ছিলেন ৭ হাজার ২২৪ জন। চট্টগ্রামের সাত হাজারের বেশি কর্মীর মধ্যে আবার এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের নিজ উপজেলা পটিয়ার বাসিন্দা ৪ হাজার ৫২৪ জন। কোনো ধরনের নিয়মনীতি ছাড়া নিয়োগ পাওয়া কর্মীদের নিয়েই এখন বেকায়দায় রয়েছে ব্যাংকটি।
ব্যাংক–সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এস আলমের সময়ে ব্যাংকটি চার ধাপে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছিল। এর মাধ্যমে ৬৩৮ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়। পাশাপাশি ট্রেইনি সহকারী কর্মকর্তার দুই পদে ৩০০ কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়। তবে এক পরীক্ষায় শুধু চট্টগ্রামের বাসিন্দাদের আবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।
ব্যাংকটি এখন কী ভাবছে
গত বছরের আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়। নতুন পরিচালনা পর্ষদ একাধিক নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান দিয়ে ব্যাংকটির ঋণ, বিনিয়োগ ও জনবল পরীক্ষা করে। তাতে উঠে আসে এস আলমের দখলে থাকার সময় নিয়োগ পাওয়া কর্মীদের অযোগ্যতা ও সনদ জালিয়াতিসহ নানা বিষয়। ওই নিরীক্ষার পর চাকরিবিধি লঙ্ঘনের দায়ে ২০০ জনকে ছাঁটাই করে ব্যাংকটি।
কোনো রকম নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও পরীক্ষা ছাড়া চাকরি পাওয়া কর্মীদের মধ্যে ৫ হাজার ৩৮৫ জনের যোগ্যতা মূল্যায়ন পরীক্ষার উদ্যোগ নেয় ব্যাংকটির পুনর্গঠিত পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। সেই পরীক্ষায় ৪ হাজার ৯৫৩ জন অংশ নেননি। তাই তাঁদের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা ওএসডি করে ব্যাংকটি। পরে ধারাবাহিক অনুপস্থিতি, শৃঙ্খলাভঙ্গ ও ব্যাংকের শাখা ক্ষতিগ্রস্ত করার দায়ে সাড়ে চার হাজার কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
জানা যায়, চাকরিচ্যুত সাড়ে চার হাজার কর্মকর্তার অবসর–সুবিধা দিতে ব্যাংকটির খরচ হবে প্রায় ৪৫ কোটি টাকা। এদিকে পরীক্ষায় অংশ না নেওয়া কর্মীদের মধ্যে ৭০০ কর্মকর্তা এরই মধ্যে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার আগ্রহ দেখিয়ে ব্যাংকে আবেদন করেছেন। যাঁদের আবারও পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়ার কথা ভাবছে ব্যাংকটি।
জানা গেছে, আট হাজার কর্মীর মধ্যে অন্যরা নিম্ন পদে নিয়োগ পাওয়া। এ জন্য তাঁদের মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়মিত করার পরিকল্পনা করছে ব্যাংকটি।
এসব বিষয়ে ইসলামী ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) এম কামাল উদ্দীন জসীম প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০১৭ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে যেসব নিয়োগ হয়েছে, তা প্রক্রিয়া মেনে হয়নি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কোনো বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আবার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হলেও অনেক পরীক্ষা স্বচ্ছ হয়নি। তাই অবৈধ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তারা পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়মিত হয়ে ব্যাংকে থাকবেন, এমনটা আমরা চেয়েছিলাম। কিন্তু বেশির ভাগ কর্মী পরীক্ষায় অংশ নেননি। পাশাপাশি তাঁরা শৃঙ্খলাভঙ্গের মাধ্যমে ব্যাংকের ক্ষতি করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তাই বাধ্য হয়ে তাঁদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।’
কামাল উদ্দীন আরও জানান, যাঁরা পরীক্ষা দেওয়ার জন্য নতুন করে আবেদন করেছেন, তাঁদের বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখা হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এস আলম র সময় চ কর চ য ত কর এস আলম গ র প হ জ র কর ম কর মকর ত পর ক ষ য় কর ম দ র কর ম র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
বেসরকারি ব্যাংকে ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি, বেতন ৬৯,৪০০ টাকা
বেসরকারি আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি জনবল নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকটি ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি পদে জনবল নিয়োগে এ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। ১৭ অক্টোবর আবেদন শুরু হয়েছে। আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। নির্বাচিত প্রার্থীরা মাসিক বেতন ছাড়া প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী নানা সুযোগ–সুবিধা পাবেন।
চাকরির বিবরণ
ব্যাংকের নাম: আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি
পদের নাম: ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি
পদসংখ্যা: নির্ধারিত নয়
আবেদনে শিক্ষাগত যোগ্যতা: যেকোনো বিষয়ে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি
অভিজ্ঞতা: প্রয়োজন নেই
কর্মক্ষেত্র: অফিসে
আরও পড়ুনএ সপ্তাহে (১০ থেকে ১৬ অক্টোবর) দেখে নিন সেরা ১০ সরকারি চাকরি১৭ অক্টোবর ২০২৫বয়সসীমা: ৩০ অক্টোবর ২০২৫ সালে আবেদনকারীর সর্বোচ্চ বয়স ৩২ বছর
কর্মস্থল: যেকোনো স্থানে
বেতন: ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি পদের শুরুর বেতন ৬৯ হাজার ৪০০ টাকা। এ পদে চাকরি কনফার্ম হলে মাসিক বেতন হবে ৮৫ হাজার ২০০ টাকা।
অন্যান্য সুবিধা: ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী
আবেদন যেভাবে: আগ্রহী প্রার্থীরা আবেদন ও বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
আবেদনের শেষ সময়: ৩০ অক্টোবর ২০২৫
আরও পড়ুনইউএনডিপিতে ইন্টার্নশিপ, যুক্তরাষ্ট্রে কাজের সুযোগ৯ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনবেসরকারি ব্যাংকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ, বেতন মাসে ১ লাখ টাকা৬ ঘণ্টা আগে