নিজ গ্রামের কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ঢাবি শিক্ষার্থী সাম্য
Published: 14th, May 2025 GMT
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্যকে নিজ গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। আজ বুধবার রাত ১০টার দিকে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার ধুকুরিয়াবেড়া ইউনিয়নের সড়াতৈল হাফিজিয়া মাদ্রাসা মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে সড়াতৈল জান্নাতুল বাকি কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
এর আগে সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে শাহরিয়ার আলমের মরদেহ বহনকারী গাড়ি গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছায়। এ সময় সেখানে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। স্বজন, প্রতিবেশীসহ নানা শ্রেণি–পেশার মানুষ তাঁকে শেষবারের মতো একনজর দেখতে সেখানে ভিড় করেন। কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনেরা। এরপর রাত ১০টার পর সড়াতৈল হাফিজিয়া মাদ্রাসা মাঠে সাম্যর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুনঢাবি ছাত্র শাহরিয়ার হত্যা: গ্রেপ্তার আসামি তামিমের মাদারীপুরের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ৩৯ মিনিট আগেজানাজার আগে শাহরিয়ার আলমের ছোট চাচা মাহবুবুল আলম বলেন, ‘আমি মনে করি, মেধাবী শিক্ষার্থী সাম্য হত্যাকাণ্ড একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। কারণ, আমাদের কাছে সেই ছোটবেলা থেকেই সাম্যরা চার ভাই বড় হয়েছে। আমি জানি, কোনো সময় কোনো কারণে নিজে আঘাত পেলেও সাম্য কাউকে আঘাত দিত না।’
জানাজায় অংশ নেওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন বলেন, ছত্রদল নেতা শাহরিয়ার মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, অন্তর্বর্তী সরকার ও পুলিশ প্রশাসন তাঁকে নিরাপত্তা দিতে পারেনি। তাঁরা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি করছেন। প্রশাসন এতে ব্যর্থ হলে আন্দোলনের মাধ্যমে তা আদায় করতে বাধ্য হবেন।
জানাজায় আরও উপস্থিত ছিলেন সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক আমিরুল ইসলাম খান, ঢাবি শাখা ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি আবুবক্কার সিদ্দিক, সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা মোস্তফা জামান, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি জুনায়েদ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সেরাজুল ইসলাম, বেলকুচি উপজেলা জামায়াতের আমির আরিফুল ইসলাম প্রমুখ।
আরও পড়ুন‘নম্র-ভদ্র ছেলের এমন পরিণতি কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না’১০ ঘণ্টা আগেউল্লেখ্য, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় ছুরিকাঘাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহরিয়ার নিহত হন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ছিলেন। এ ঘটনায় শাহরিয়ারের বড় ভাই এস এ এম শরিফুল আলম শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেন।
ডিএমপি বলছে, থানা-পুলিশ দ্রুততম সময়ের মধ্যে হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালায়। ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত তিন আসামি তামিম, সম্রাট ও পলাশের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। বুধবার সকালে শেরেবাংলা নগর থানা এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুনশাহরিয়ার ও তাঁর দুই বন্ধুর ওপর হামলা চালায় ১০–১২ জনের একটি দল৩ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ ছ ত রদল ব এনপ র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
রাজধানীর হোটেলে দম্পতি ও সন্তানের মৃত্যু: লক্ষ্মীপুরে দাফন
রাজধানীর মগবাজারের একটি আবাসিক হোটেলে এক দম্পতি ও তাদের সন্তানের রহস্যজনক মৃত্যুর পর লাশের ময়নাতদন্ত শেষে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
নিহতরা হলেন, রামগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা মনির হোসেন, তার স্ত্রী স্বপ্না আক্তার ও তাদের শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী ছেলে নাঈম হোসেন। মঙ্গলবার (১ জুলাই) দুপুরে তাদের দাফন সম্পন্ন হয়।
হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায়, গত শনিবার (২৮ জুন) বিকালে মনির হোসেন তার প্রতিবন্ধী ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে ১০৩ নম্বর রুমে ওঠেন। মনির হোসেনের সঙ্গে এনআইডি কার্ড না থাকায় তার চাচা রফিকুল ইসলামের এনআইডি দিয়ে হোটেল বুকিং দেয়া হয়। পরে রফিকুল বাইরে থেকে খাবার নিয়ে এসে চলে যায়। রাতেই পরিবারটি অসুস্থ হয়ে পড়লেও হোটেল কর্তৃপক্ষকে কিছু জানানো হয়নি। রোববার (২৯ জুন) সকাল ১১টার দিকে রফিকুল তার মেয়েকে নিয়ে হোটেলে আসেন এবং প্রথমে স্বপ্না আক্তারকে হাসপাতালে নিয়ে যান। এরপর মনির হোসেনকে এবং পরে চিৎকার শুনে হোটেল কর্মীরা নাইমকে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
আরো পড়ুন:
বরগুনায় ডেঙ্গুতে ব্যবসায়ীর মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ৯৩
এক শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে মারা গেল ২ জনই
পরে ময়নাতদন্ত শেষে তাদের লাশ রামগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের নিজ বাড়িতে পৌঁছায়। মঙ্গলবার (১ জুলাই) জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
পুলিশ ধারণা করছে, বিষক্রিয়া অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে এই মৃত্যু হতে পারে। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ও তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে বলে জানিয়েছে থানা পুলিশ।
ঢাকা/জাহাঙ্গীর/বকুল