দুই ম্যাচ হাতে রেখেই বার্সেলোনা চ্যাম্পিয়ন
Published: 16th, May 2025 GMT
স্প্যানিশ লা লিগার ‘২০২৪-২৫ মৌসুমে’ চ্যাম্পিয়ন হলো এফসি বার্সেলোনা। নগর প্রতিদ্বন্দ্বী এস্পানিওলের মাঠে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ২-০ গোলের জয় তুলে নিয়ে দুই ম্যাচ হাতে রেখেই লিগ শিরোপা নিশ্চিত করেছে কাতালান ক্লাবটি।
এই জয়ে ৩৬ ম্যাচে বার্সার সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ৮৫ পয়েন্টে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা রিয়াল মাদ্রিদের পয়েন্ট ৭৮। ফলে লিগের বাকি দুই ম্যাচে রিয়াল জিতলেও পয়েন্ট ব্যবধান ঘোচানো তাদের জন্য আর সম্ভব নয়। ফলে মৌসুমের শেষ প্রান্তে এসেই নিশ্চিত হলো হ্যান্সি ফ্লিকের প্রথম মৌসুমেই ঘরোয়া সাফল্যের ‘ট্রেবল’।
এদিন অবশ্য শুরুতে গোল পায়নি বার্সা। প্রথম গোলের দেখা পেতে তাদের অপেক্ষা করতে হয় ম্যাচের ৫৩ মিনিট পর্যন্ত। এ সময় ডানদিক থেকে একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ে দারুণ এক শটে গোল করেন তরুণ ফরোয়ার্ড লামিনে ইয়ামাল। এটি ছিল চলতি লিগে তার অষ্টম গোল। ম্যাচের যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে ইয়ামালের অ্যাসিস্ট থেকেই দ্বিতীয় গোলটি করেন মিডফিল্ডার ফারমিন লোপেজ।
আরো পড়ুন:
বার্সার অপেক্ষা বাড়িয়ে আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখলো রিয়াল
কোচ হিসেবে রিয়ালে ফিরলেন জাবি আলোনসো
প্রথমার্ধে বার্সেলোনা বলের দখলে এগিয়ে থাকলেও খুব বেশি গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। তবে দ্বিতীয়ার্ধে কৌশলগত পরিবর্তনে আক্রমণে ধার বাড়ায় ফ্লিকের দল। ৭৯ মিনিটে ইয়ামালকে ফাউল করায় এস্পানিওলের ডিফেন্ডার লিয়ান্দ্রো কাবরেড়া সরাসরি লাল কার্ড দেখেন। এতে ১০ জনের দলে পরিণত হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলা কঠিন হয়ে পড়ে স্বাগতিকদের জন্য।
এই জয়ে বার্সেলোনা তাদের ইতিহাসে ২৮তম লা লিগা শিরোপা ঘরে তুললো। একবিংশ শতাব্দীতে এটি তাদের ১২তম লিগ শিরোপা, যা স্পেনের শীর্ষ লিগে কোনো দলের সর্বোচ্চ অর্জন। এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ (৯টি)। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগ বিবেচনায় একবিংশ শতাব্দীতে বার্সার চেয়ে বেশি লিগ শিরোপা জিতেছে কেবল জার্মান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখ (১৮টি)।
এর আগে জানুয়ারিতে স্প্যানিশ সুপার কাপ এবং চলতি মাসের শুরুতে কোপা দেল রে জিতে নেয় বার্সেলোনা। লা লিগার শিরোপা নিশ্চিত করে তারা মৌসুমের ঘরোয়া ট্রেবল জয় পূর্ণ করলো।
শিরোপা উদযাপন উপলক্ষে আজ শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকেলে বার্সেলোনা শহরে বিজয় মিছিল করবে ক্লাবটি। এছাড়া আগামী রোববার ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে মৌসুমের শেষ হোম ম্যাচে বার্সা খেলোয়াড়দের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রফি তুলে দেওয়া হবে।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।