পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) নতুন ১০ তলা ছাত্রহল-২ দ্রুত খুলে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (১৭ মে) সকাল ১১টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন শেষে তারা ‘লং মার্চ টু হল’ কর্মসূচি পালন করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ মে নতুন হলের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অধ্যাপক ড.

মো. কামরুজ্জামানকে হল প্রাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেয় প্রশাসন। তবে নিয়োগের পরও হলে শিক্ষার্থী তোলার ব্যাপারে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ না নেওয়ায় শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

আরো পড়ুন:

জবিতে ৪ বছর পর নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি, ক্লাস শুরু ২২ জুন

চবির অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতা চেয়েছে শিবির

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে হল চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের ঘুরানো হচ্ছে। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পরও হ্যামার টেস্টসহ নানা অজুহাতে হল খোলা হচ্ছে না। এতে তারা চরমভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমাদের পড়াশোনা প্রায় শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। অথচ এখনো হলে উঠতে পারছি না, এটা আমাদের জন্য মানসিকভাবে কষ্টদায়ক। আমরা বাইরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে বাধ্য হচ্ছি। সেখানে বাড়িওয়ালাদের দুর্ব্যবহার ও অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।”

আন্দোলনের এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা নতুন ছাত্রহল-২ এর সামনে অবস্থান নিলে সহকারী প্রাধ্যক্ষরা উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন।

সহকারী প্রাধ্যক্ষ রেদওয়ান আহমেদ বলেন, “হলটি এতদিন আমাদের অধীনে ছিল না। সম্প্রতি আমরা দায়িত্ব পেয়েছি। তবে এ সময়ের মধ্যে ভর্তি পরীক্ষার কারণে হল সংক্রান্ত কোনো নোটিশ দেওয়া সম্ভব হয়নি।”

তিনি বলেন, “ইতোমধ্যে প্রাধ্যক্ষ টিম সব অফিসিয়াল আনুষঙ্গিক কাজ সম্পন্ন করেছে। বিষয়টি উপাচার্য, উপ-উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্ট সবার অবগতিতে রয়েছে। আজ অথবা আগামীকাল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। দ্রুত আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং আগামী ১ জুলাই শিক্ষার্থীদের সিট বরাদ্দ দেওয়া হবে।”

ঢাকা/আতিক/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

রাজস্ব ব্যবস্থা নির্বাহী বিভাগের করায়ত্ত হওয়ার ঝুঁকিতে

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির সরকারি সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি বলেছে, এনবিআর থেকে রাজস্বনীতি ও ব্যবস্থাপনা– দুটি বিভাগ তৈরি করে তড়িঘড়ি অধ্যাদেশ জারির ফলে রাজস্ব ব্যবস্থা নির্বাহী বিভাগের করায়ত্ত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে।

শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি অধ্যাদেশটি স্থগিত করে বিশেষজ্ঞ ও অংশীজনের মাধ্যমে স্বাধীনভাবে সম্ভাবনা এবং ঝুঁকি বিশ্লেষণ করে এনবিআর ঢেলে সাজানোর আহ্বান জানিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নীতির স্বাধীনতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি, কর-জিডিপির অনুপাত বাড়ানো ও রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে যে যৌক্তিক ভিত্তির ওপর এনবিআরকে বিভক্ত করা হয়েছে, তাতে রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় নির্বাহী বিভাগ থেকে যে ন্যূনতম স্বাধীনতা ভোগ করার কথা, সে সুযোগ থাকল না।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, রাজস্ব খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা করতে নীতি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের কাজ আলাদা করার দাবি বহুদিনের। বিভিন্ন অংশীজন, বিশেষজ্ঞসহ সর্বশেষ রাজস্ববিষয়ক পরামর্শক কমিটির রাজস্ব ব্যবস্থা বিকেন্দ্রীকরণে পরামর্শ দিয়েছিল। তাহলে পরামর্শক কমিটির সুপারিশ পাশ কাটিয়ে অধ্যাদেশ জারির উদ্দেশ্য কী? কার স্বার্থে কমিটির সুপারিশ উপেক্ষা করা হলো? রাজস্ব ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার নামে যে বিকেন্দ্রীকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেটি স্বচ্ছ কিনা– প্রশ্ন ওঠা অমূলক নয়। তুঘলকি এ পরিবর্তনের ফলে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি কতটুকু বাস্তবায়িত হবে, সে বিষয়ে জ্ঞানভিত্তিক বিশ্লেষণ কী করা হয়েছে?

তিনি বলেন, এনবিআরকে বিকেন্দ্রীকরণের নামে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্তৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক চর্চা অনুযায়ী, দেশের রাজস্বনীতি ও ব্যবস্থাপনার জন্য আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করে স্বতন্ত্র সংস্থা, বোর্ড বা এজেন্সি করা প্রয়োজন। এটি হলে এনবিআর রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রভাবের আওতামুক্ত থাকত। অথচ পরামর্শক কমিটির মূল সুপারিশ উপেক্ষা করে রাজস্ব ব্যবস্থাকে নির্বাহী বিভাগের অধীন দুটি বিভাগে পরিণত করা হয়েছে। ফলে দুর্নীতি ও স্বার্থের সংঘাতসহ নানা অনিয়মের সুযোগ শুধু থেকে যাচ্ছে না, আরও বাড়তে পারে। এ সিদ্ধান্ত চলমান আন্তঃক্যাডার উত্তেজনায় নতুন ইন্ধন জুগিয়েছে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, রাজস্ব নিরূপণ ও আদায়ে অনিয়ম এবং যোগসাজশমূলক জালিয়াতি বাংলাদেশে কর ফাঁকির অন্যতম মাধ্যম, তা অজানা নয়। নানা উদ্যোগের পরও আয়কর রিটার্ন দাখিল ও ভ্যাট আদায় প্রক্রিয়া পুরোপুরি অনলাইন করা যায়নি। হয়রানি ও দুর্নীতি কমেনি। নতুন অধ্যাদেশের মাধ্যমে সরকার সিএজির রাজস্ব নিরূপণ নিরীক্ষার এখতিয়ার কেড়ে নিয়ে অনিয়মকে জবাবদিহির বাইরে রাখার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এর পেছনে আমলাতন্ত্রের ভেতরে থাকা সংস্কার প্রতিরোধক স্বার্থান্বেষী মহলের ইন্ধন রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ