সৈকতে ছবি তুলতে গিয়ে জোয়ারে ভেসে নিখোঁজ কিশোরের মরদেহ উদ্ধার
Published: 18th, May 2025 GMT
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সমুদ্রসৈকতে ছবি তুলতে গিয়ে জোয়ারে ভেসে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া সিফাতের (১৭) মরদেহ ২০ ঘণ্টা পর উদ্ধার করেছে ডুবুরি দল। আজ রোববার সকাল ১১টার সময় নিখোঁজ হওয়া স্থান থেকে ৫০০ গজ উত্তরে পানিতে সিফাতের মরদেহ ভেসে উঠে। পরে ডুবুরিরা তাকে উদ্ধার করে।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, সিফাত বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র উপকূলে বেঁড়িবাধ সংস্কারে জেনেসিস ইন্টারন্যাশনাল নামক একটি প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। শনিবার কাজ না করে দুই বন্ধু মিলে সমুদ্রে গোসল করতে যান। এ সময় তার সঙ্গে থাকা মোবাইল সহপাঠীকে দিয়ে ছবি তুলতে বলে জোয়ারের পানিতে ঝাঁপ দেন। জোয়ারের পানিতে ঝাঁপ দেওয়ার পর দীর্ঘক্ষণ হয়ে গেলেও সিফাতকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন তার সহপাঠী। পরে বিষয়টি কুমিরা ফায়ার সার্ভিসকে জানানো হয়।
কুমিরা ফায়ার সার্ভিসে ঘটনাস্থলে গেলেও ডুবুরি দল না থাকাতে তাৎক্ষণিক উদ্ধারকাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। প্রায় ৪ ঘণ্টা পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে নগরীর আগ্রাবাদ থেকে ডুবুরি দল এসে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে। রাত ৯টার পর উদ্ধার অভিযান বন্ধ রেখে আজ রোববার সকাল থেকে আবার উদ্ধার অভিযানে নামে ডুবুরি দল। বেলা ১১ টার দিকে সিফাতের মরদেহ উদ্ধার করে তারা।
কুমিরের ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা ফিরোজ মিয়া বলেন, শনিবার নিখোঁজ কিশোরের সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে আসি। ডুবুরি দল সাড়ে ৬টায় এসে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে। কিন্তু আবহাওয়া খারাপ হওয়ার কারণে উদ্ধার কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। আজ রোববার সকালের দিকে পুনরায় উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু সকাল ১০টার দিকে নিখোঁজ হওয়া স্থান থেকে প্রায় ৫০০ গজ দূরে মরদেহ ভেসে উঠে। ময়নাতদন্ত ছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আদেশে পরিবারকে নিহতের মৃতদেহ বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মধ্যপাড়া খনিতে শ্রমিকদের ধর্মঘটে পাথর উত্তোলন বন্ধ
চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের কাজে বহালের দাবিতে দেশের একমাত্র উৎপাদনশীল দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার মধ্যপাড়া খনিতে পাথর উত্তোলন বন্ধ রেখে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেছেন খনি শ্রমিকরা।
বুধবার (২ জুলাই) সকাল ৭টা থেকে খনির প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি পালন করছেন তারা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শ্রমিকরা।
মধ্যপাড়া কঠিন শীলা খনিতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি) দীর্ঘদিন ধরে প্রতিদিন তিন শিফটে শ্রমিকদের মাধ্যমে পাথর উত্তোলনের কাজ পরিচালনা করে আসছে। চলতি বছরের মে মাসে কর্তৃপক্ষের দেয়া লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পাথর উত্তোলন করেন শ্রমিকরা। তবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলেও ‘প্রোডাকশন প্রফিট বোনাস' না দেয়ায় শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হলেও কোনো সমাধান না হওয়ায় শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ে। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করায় খনির ব্লাস্টার শফিকুল ইসলাম, লং ড্রিল অপারেটর রফিকুল ইসলাম, অপারেটর ওমর আলী এবং জুনিয়র হেলপার হাসান আলীকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এরই প্রতিবাদে এবং প্রোডাকশন প্রফিট বোনাসের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন শ্রমিকরা।
আরো পড়ুন:
৩৪ কোটি টাকার কষ্টিপাথর উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৪
কষ্টি পাথরের শিবলিঙ্গ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরে হস্তান্তর
আন্দোলনরত খনি শ্রমিক সোলাইমান ইসলামসহ চাকরিচ্যুত খনি শ্রমিকরা বলেন, ‘‘আমরা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক পাথর উত্তোলন করেছি। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমাদের 'প্রোডাকশন প্রফিট বোনাস' দিচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করায় আমাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।’’
তারা বলেন, ‘‘আমরা এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেইসঙ্গে চাকরি থেকে অব্যাহতি পাওয়া শ্রমিকদের পুনরায় চাকরিতে বহালের দাবি জানাচ্ছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।’’
মধ্যপাড়া পাথর খনির উপ-মহাব্যবস্থাপক সৈয়দ রফিজুল ইসলাম জানান, শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে সকাল থেকে খনির পাথর উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে পাথর বিক্রিসহ অন্যান্য কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।
তিনি আরো জানান, শ্রমিকরা সরাসরি পেট্রোবাংলার অধীনে নয়। তারা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অধীনে কাজ করেন। কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি সমাধানের চেষ্টা করছে।
ঢাকা/মোসলেম/বকুল