নতুন ও পুরোনো দুটি ছাত্র হল খুলে দেওয়ার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন সরকারি তিতুমীর কলেজের ১০ থেকে ১৫ শিক্ষার্থী। পাশাপাশি হল চালু না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতা দেওয়ার দাবি তাঁদের।

আজ সোমবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ছয় শিক্ষার্থী কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনের সিঁড়িতে অবস্থান নিয়ে এ কর্মসূচি শুরু করেন। পরে তাঁদের সঙ্গে অন্য শিক্ষার্থীরা যোগ দেন।

এই শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, হলে তোলার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের একটি মৌখিক সাক্ষাৎকার নিয়েছিল। সেই সাক্ষাৎকার অনুযায়ী হলে সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থীদের তালিকা কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ ওই তালিকাও প্রকাশ করছে না।

পূর্বঘোষিত সময় অনুযায়ী অবস্থান কর্মসূচি বেলা দুইটায় শুরুর কথা ছিল। তবে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীরা প্রথম আলোকে জানান, কর্মসূচি শুরুর আগে হল খুলে দেওয়ার বিষয়ে তাঁরা অধ্যক্ষের কাছে গিয়েছিলেন। কিন্তু অধ্যক্ষের কাছ থেকে তাঁরা কোনো ইতিবাচক প্রতিশ্রুতি পাননি।

শুরুতে আলী আহমেদ, বেলাল হোসেন, আল আমিন, মনসুর আহমেদ, নায়েক নূর মোহাম্মদ ও ফাহিম—এই ছয় শিক্ষার্থী প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। তাঁদের মধ্যে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নায়েক নূর মোহাম্মদ প্রথম আলোকে মুঠোফোনে বলেন, তিতুমীর কলেজের দুটি ছাত্র হল রয়েছে। এর একটি নতুন শহীদ মামুন হল। আরেকটি আক্কাসুর রহমান আঁখি হল। এই হল জুলাই–আগস্ট আন্দোলনের সময় থেকে বন্ধ রয়েছে। ওই সময় হলটি নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের দখলে ছিল।

নায়েক নূর আরও বলেন, নতুন হলের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ। শুধু বৈদ্যুতিক সংযোগ দিলেই হলটি শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করতে পারবেন। এ ছাড়া পুরোনো হলটিও বন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ হল দুটি দ্রুত চালু করে দিতে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ফলে শিক্ষার্থীদের বাইরে বাসা–মেস ভাড়া দিয়ে থাকতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে হল দুটি দ্রুত খুলে দেওয়ার দাবিতেই তাঁরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। আর যত দিন হল চালু না হবে, তত দিন পর্যন্ত কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতা দেবে, এটা তাঁদের আরেকটি দাবি।

জানা যায়, কলেজটিতে ২৫ হাজারের মতো শিক্ষার্থী রয়েছেন। এখানে ছাত্রীদের জন্য তিনটি হল রয়েছে। ছেলেদের জন্য নতুন হলটি ১০ তলাবিশিষ্ট ও পুরোনো হলটি চারতলাবিশিষ্ট।

কলেজের অধ্যক্ষ ছদরুদ্দীন আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, নতুন হলটিতে কিছু আসবাব দেওয়া হয়েছে মাত্র। এখনো বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সংযোগ দেওয়া হয়নি। এই হলে প্রতিটি কক্ষে চারজন করে থাকলে ৪১০ জনের মতো ছাত্র থাকতে পারবে। আর পুরোনো হলটি জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়েছে। দরজা, জানালা ও আসবাব বলতে গেলে কিছুই নেই। তবে এরই মধ্যে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ক্ষয়ক্ষতি পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে। তারা জানিয়েছে, চলতি অর্থবছর শেষ হওয়ার আগেই জুনের মধ্যেই কাজ শেষ করার চেষ্টা করবে। এসব বিষয় শিক্ষার্থীদের বলা হয়েছে।

বিকেল পাঁচটার পরে আরও কিছু শিক্ষার্থী ওই অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কল জ র

এছাড়াও পড়ুন:

চাকসু নির্বাচন: চার হলের ভিপি-জিএস হলেন যারা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে সমাপ্ত হয়েছে।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) বিকেল সোয়া ৫টার দিকে এ গণনার কার্যক্রম শুরু হয়। গণনার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ হচ্ছে সিসি ক্যামেরায়, প্রদর্শন করা হচ্ছে সব কেন্দ্রের এলইডি স্কিনে।

আরো পড়ুন:

প্রাণ ফিরে পেতে যাচ্ছে রাকসু, রাত পোহালেই ভোট

চাকসুর ফল: এক কেন্দ্রে ভিপি-এজিএসে এগিয়ে ছাত্রদল, জিএসে বাম

নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ি, পাঁচটি কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসার তথা ডিন কার্যালয়ে ভোট গণনা শেষে সেখান থেকেই আলাদাভাবে হল সংসদের ফলাফল ঘোষণা করা হবে। আর চাকসুর ফল ঘোষণা হবে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ মিলনায়তনে।

নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেন বলেছিলেন, “ভোট গণনার পুরো বিষয়টি সিসি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতিটি কেন্দ্রের এলইডি স্কিনে প্রদর্শন করা হচ্ছে। কোনো কারণে স্কিন বন্ধ হয়ে গেলে ভোট গণনাও বন্ধ রাখা হবে।”

তিনি বলেন, “ওএমআর পদ্ধতিতে ভেন্ডর মেশিন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেল- এই দুই প্রক্রিয়ায় ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করা হবে। পুরোদমে ভোট গণনার কাজ চলছে। যত দ্রুত সম্ভব ফলাফল ঘোষণা করা হবে।”

ইতোমধ্যে হল সংসদের ভোটের ফলাফল ঘোষণা শুরু হয়েছে।

মাস্টার দ্য সূর্যসেন হল

চাকসু নির্বাচনে মাস্টার দ্য সূর্যসেন হল সংসদের ফলাফল রাত পৌনে ১টায় ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
ফলাফলে ১৮২ ভোট পেয়ে সহ-সভাপতি (ভিপি) হয়েছেন তাজিন ইবনে হাবিব, ১৪৪ ভোট পেয়ে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) হয়েছেন সাদমান আল-তাছিন এবং ২৯০ ভোট পেয়ে সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) হয়েছেন শাখাওয়াত হোসেন।

হলটিতে মোট ভোটার ছিলেন ৫১৬ জন। হলটির কেন্দ্র ছিল বিজ্ঞান অনুষদে।

সোহরাওয়ার্দী হল

সোহরাওয়ার্দী হল সংসদের ফলাফল রাত ১টার পর ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

ঘোষিত ফলাফলে ভিপি হয়েছেন নেয়ামত উল্লাহ ফারাবি, জিএস হয়েছেন নুরন্নবী সোহান এবং এজিএস হয়েছেন রেসালাতুর রহমান।

এ হলে ছাত্রশিবিরের পুরো প্যানেল বিজয়ী হয়েছে।

এফ রহমান হল

এরপর এফ রহমান হল সংসদের ফলাফল ঘোষণা করা হয়।

ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, ৩৬৯ ভোট পেয়ে ভিপি হয়েছেন শাহরিয়ার সোহাগ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রবিউল পেয়েছেন ৩৪৩ ভোট।

৩৭৯ ভোট পেয়ে জিএস হয়েছেন মো. তামিন চৌধুরী। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. জাবের আহমদ পেয়েছেন ৩২ ভোট।

এছাড়া ২৯৮ ভোট পেয়ে এজিএস হয়েছেন সাইদুল ইসলাম। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাইফুর রহমান পেয়েছেন ২৬০ ভোট।

শাহজালাল হল

শাহজালাল হল সংসদের ফলাফল রাত দেড়টার দিকে ঘোষণা করা হয়েছে।

ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, হলটিতে ভিপি পদে ৯৩৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন আলাউদ্দিন। তার নিকতম প্রতিদ্বন্দ্বী মামুনুর রশিদ পেয়েছেন ৭৩৪ ভোট।

৬৯৭ ভোট পেয়ে জিএস হয়েছেন রায়হান চৌধুরী। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ওয়াহিদুল ইসলাম পেয়েছেন ৬৭৩ ভোট।

এছাড়া ১১০১ ভোট পেয়ে এজিএস হয়েছেন ইমতিয়াজ জাবের। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুল্লাহ আল নোমান পেয়েছেন ৫৯১ ভোট।

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ