পাবনায় চরে চাষে যাওয়া ৮ কৃষককে পিটিয়ে আহত
Published: 25th, May 2025 GMT
পাবনার ঈশ্বরদীতে পদ্মানদীতে বালু মহাল দখলকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যকার উত্তেজনা ও গোলাগুলির ঘটনার পর অশান্ত হয়ে উঠেছে চরাঞ্চল। এবার সেই চরে চাষাবাদ করতে গেলে আট কৃষককে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে। একইসঙ্গে চর থেকে কৃষকের দুটি গরু লুট করে নিয়ে জবাই করে পিকনিক করেছে বালু দস্যুরা।
রবিবার (২৫ মে) দুপুরে ঈশ্বরদীর সাঁড়া ইউনিয়নের আড়মবাড়ী এলাকার পদ্মার চরে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে চরে কেউ গেলে তাদের উপর হামলা চালিয়ে মারধর, রক্তাক্ত জখম করছেন ওই সকল বালু খেকোরা।
আহতরা হলেন, উপজেলার সাঁড়া ঝাউদিয়া এলাকার আনছার আলী মাঝি (৬৭), আনছার মাঝির ছেলে মজনু হোসেন ( ৩৫), একই উপজেলার মাঝদিয়া এলাকার সাদেক আলীর ছেলে মাছিদুল ইসলাম (৩৬) ও মজিদুল ইসলাম (৪০), দুলাল খাঁর ছেলে লিটন খাঁ (৪০), সোহান, আরাফাত ও এজাজুল।
আরো পড়ুন:
রংপুরে বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে ফসলের ক্ষেত, শঙ্কায় চাষি
কালো জাতের আখ চাষে সফল মাসুদ
আহতদের মধ্যে আহত লিটনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ( রামেক) ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা সবাই প্রান্তিক কৃষক। তারা পদ্মানদীতে জেগে উঠা নিজস্ব ও লিজ নেয়া জমিতে দীর্ঘদিন ধরে চাষাবাদ করে আসছেন।
আহত আনছার মাঝি, মজনু, মাছিদুল, সোহান ও আরাফাত অভিযোগ করে বলেন, ‘‘পদ্মানদীর চরে ও নদী থেকে বালু উত্তোলন করাকে কেন্দ্র করে ঈশ্বরদী উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক সুলতান আলী বিশ্বাস টনির সঙ্গে বালুদস্যু কাকনের মধ্যে কয়েকদিন আগে হামলা, গোলাগুলি হয়েছে। আমরা কৃষক। আমরা তো কারও পক্ষের লোক না। পদ্মানদীতে জেগে ওঠা আমাদের পৈত্রিক জমিতে চাষাবাদ করি। রবিবার সকালে আমরা নৌকা যোগে চাষাবাদ করার জন্য চরে যাই। সেই সময় কাকনের লোকজন আমাদের উপর হামলা চালিয়ে বেদম মারধর করে আহত করেছেন। তারা আমাদের দুটি গরু ছিনিয়ে নিয়ে জবাই করে পিকনিক করে খেয়েছেন।’’
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক সাহিদুল ইসলাম শিশির জানান, আহতদের মধ্যে লিটনের অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) পাঠানো হয়েছে। অন্যদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে লক্ষ্মীকুন্ডা নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ওসি) এমরান মাহমুদ তুহিন জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করেনি।
অভিযুক্ত কাকনের সঙ্গে রবিবার সন্ধ্যার পর থেকে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
ঈশ্বরদীর একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, কাকন ও তার লোকজন ২০ বছরের বেশি সময় ধরে চরাঞ্চলের বালু, জমি দখল করে চাষাবাদ করে। বালু মহাল দখল করে বাণিজ্য করে। তারা সারাদিন রাত পদ্মা নদীতে অবস্থান করে। নদীতে খায়, সেখানেই ঘুমায়। তাদের কাছে অবৈধ অস্ত্র রয়েছে। কাকন কোনো দলীয় নেতা নয়। যখন যে দল ক্ষমতায় আসে, তার পক্ষে অবস্থান নিয়ে প্রভাব বিস্তার করে।
ঢাকা/শাহীন/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ ষ ব দ কর অবস থ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
মায়ের সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিল কিশোরী, সাপের কামড়ে মৃত্যু
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় সাপের কামড়ে এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের সরেঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরিবারের সদস্যরা জানান, রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় ওই কিশোরীকে একটি বিষধর সাপ ছোবল দেয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যু হয় তার।
নিহত কিশোরীর নাম নাঈমা আকতার (১৩)। সে আনোয়ারার রায়পুর ইউনিয়নের সরেঙ্গা গ্রামের বক্সি মিয়াজিবাড়ির মোহাম্মদ হাসানের মেয়ে। স্থানীয় একটি মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল সে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, রাতে খাওয়াদাওয়া সেরে মা ও ছোট বোনের সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিল নাঈমা। রাত তিনটার দিকে সাপের ছোবলে তার ঘুম ভাঙে। বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের জানালে তাকে উদ্ধার করে রাতেই আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। তবে ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক নাঈমাকে মৃত ঘোষণা করেন। জানতে চাইলে নাঈমার চাচা কফিল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন বলেন, ‘সাপে কামড় দিয়েছে জানার পর আমরা নাঈমাকে হাসপাতালে নিয়েছিলাম। কিন্তু তাকে বাঁচানো যায়নি।’
আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, সাপে কামড় দেওয়া এক কিশোরীকে হাসপাতালে আনা হয়ছিল। তবে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।