চীনের শেকু বন্দর থেকে রওনা হওয়ার আট দিন পর ১৯ মে বন্দর জলসীমায় পৌঁছে এমভি সান পেদ্রো নামের ছোট্ট কনটেইনার জাহাজ। ছয় দিন ধরে সাগরে ভাসার পরও জাহাজটি জেটিতে ভিড়তে পারেনি। কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কলমবিরতির কারণে আমদানিতে যে অচলাবস্থা তৈরি হচ্ছে, তার শিকার এই জাহাজ।

জাহাজটিতে রয়েছে রপ্তানিমুখী পোশাকশিল্প প্রতিষ্ঠান এশিয়ান গ্রুপের ‘চিটাগাং এশিয়ান অ্যাপারেলসের’ আমদানি করা কাপড়। এ কাপড় দিয়ে পোশাক তৈরি করে রপ্তানি হবে ইউরোপ-আমেরিকায়। কিন্তু কখন পণ্য হাতে পাওয়া যাবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

জানতে চাইলে এশিয়ান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ সালাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘পোশাক তৈরিতে হাতে সময় থাকে বড়জোর ২০-২৫ দিন। সেখানে কাঁচামাল খালাসে এখন ১০-১২ দিন চলে যাচ্ছে। তাহলে কীভাবে এই পোশাক নির্ধারিত সময়ে যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপের ক্রেতার কাছে পৌঁছাব। নির্ধারিত সময়ে রপ্তানি করা না গেলে উড়োজাহাজে পাঠাতে হবে। সে ক্ষেত্রে উড়োজাহাজের ভাড়া দিতে হবে আমাদের।’

জাহাজটিতে দেশের ২৯৮ প্রতিষ্ঠানের আমদানি পণ্য রয়েছে, যার সিংহভাগই পোশাকশিল্পের কাঁচামাল। এই জাহাজের মতো ১৫টি জাহাজ বেশ কিছুদিন ধরে জেটিতে ভিড়তে না পেরে সাগরে ভাসছে। এসব জাহাজে রপ্তানিমুখী শিল্পের কাঁচামাল, মূলধনি যন্ত্রপাতিসহ নানা সরঞ্জাম রয়েছে। সব মিলিয়ে এসব জাহাজে চার হাজারের বেশি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান পণ্য আমদানি করেছে। এনবিআরের কর্মকর্তাদের কর্মসূচির কারণে এসব প্রতিষ্ঠান ভুক্তভোগী হচ্ছে। সর্বশেষ গত রাতে এনবিআরের আন্দোলনকারী কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। তবে ব্যবসায়ী ও বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, কর্মসূচি স্থগিত হলেও বন্দরে তার প্রভাব কাটতে কিছুটা সময় লাগবে।

এনবিআর ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামে দুটি বিভাগ করে ১২ মে অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এর প্রতিবাদে ১৪ মে আন্দোলন শুরু করেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এর মধ্যে গত শনিবার থেকে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি পালন করছেন তাঁরা। কর্মসূচির সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি হওয়া পণ্যের ৯৫ শতাংশ এই কাস্টম হাউসে শুল্কায়নের মাধ্যমে খালাস হয়। আবার সারা দেশের আমদানি-রপ্তানি পণ্যের প্রায় ৭৯ শতাংশই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আনা-নেওয়া হয়। ফলে কাস্টমস কর্মকর্তাদের কর্মবিরতির কারণে বন্দরেও অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত ব যবস আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘দেশটা তোমার বাপের নাকি’ গাওয়ার পর পালিয়ে থাকতে হয়েছিল

শিল্পীর সৌজন্যে

সম্পর্কিত নিবন্ধ