কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) শুধু কোড লেখার কাজেই নয়, প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনাগত বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণেও কার্যকরভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সম্প্রতি এক পডকাস্টে গুগলের সহপ্রতিষ্ঠাতা সের্গেই ব্রিন জানিয়েছেন, কর্মীদের কাজ বিশ্লেষণ, দায়িত্ব বণ্টন এবং চোখে না পড়া মেধাবী কর্মীদের চিহ্নিত করতে এআই ব্যবহার করছেন তিনি।

পডকাস্টে সের্গেই ব্রিন জানিয়েছেন, তিনি গুগলের ‘জেমিনি’ উন্নয়ন দলের কর্মীদের পরিচালনা করতে নিয়মিত এআই ব্যবহার করেন। এআই টুলটি কর্মীদের আদান-প্রদান করা দীর্ঘ আলোচনা বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন জটিল প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে। এমনকি কোন সদস্য কী নিয়ে কাজ করছেন, কে ভালো করছেন বা কোন কাজ কার হাতে দেওয়া উপযুক্ত হবে—এসব বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা দিতে পারে। এসব তথ্যের মাধ্যমে কে কোন বিষয়ে এগিয়ে আছে এবং কীভাবে কর্মীদের মধ্যে কাজ ভাগ করতে হবে, তা জানা যায়।

এআই ব্যবহারের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সের্গেই ব্রিন বলেন, ‘একবার এআই এমন একজন তরুণী প্রকৌশলীকে চিহ্নিত করে, যিনি খুব বেশি কথা বলেন না বলে আমার চোখে পড়েননি। পরে যখন তার ব্যবস্থাপকের সঙ্গে কথা বলি, তখন তিনিও স্বীকার করেন, হ্যাঁ, সে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছে। এআইয়ের বিশ্লেষণের ভিত্তিতে ওই কর্মীকে পরে পুরস্কৃত করা হয়। গণিত, প্রোগ্রামিং বা নির্দিষ্ট কিছু জটিল কাজের ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অনেক সময় মানুষের চেয়ে বেশি কার্যকর হতে পারে।’

গুগলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সুন্দর পিচাই বেশ কিছুদিন আগে জানিয়েছিলেন, গুগলের তৈরি নতুন কোডের এক-চতুর্থাংশের বেশি কোড বর্তমানে এআইয়ের মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, গুগলে এআই ব্যবহারের পরিধি কেবল প্রযুক্তিগত উন্নয়নে সীমাবদ্ধ নেই।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এআই ব যবহ র কর ম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

এআইয়ের নকশা করা ক্যানসারের ওষুধ পরীক্ষা করা হবে মানবদেহে

গুগল ডিপমাইন্ডের ‘আলফাফোল্ড৩’ এআই টুল ব্যবহার করে ক্যানসারের ওষুধ তৈরি করেছে অ্যালফাবেটের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান আইসোমরফিক ল্যাবস। গুগল ডিপমাইন্ডের সহযোগিতায় ক্যানসার আক্রান্ত ব্যক্তিদের দেহে ওষুধটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালও শুরু করতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

আইসোমরফিক ল্যাবসের প্রেসিডেন্ট কলিন মারডোক জানিয়েছেন, এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি ক্যানসারের ওষুধ রোগীদের দেহে প্রয়োগের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আলফাফোল্ড৩ এআই টুল জটিল প্রোটিন কাঠামো ও আণবিক মিথস্ক্রিয়ার পূর্বাভাস দিতে পারে। ফলে টুলটির মাধ্যমে ক্যানসারের ওষুধ তৈরিতে বড় ধরনের অগ্রগতি অর্জন করেছে আইসোমরফিক ল্যাবস। নতুন এ ওষুধ ক্যানসার কোষকে ধ্বংস করতে পারে।

২০২৪ সালে গবেষণার জন্য আইসোমরফিক ল্যাবস ৬০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি তহবিল গঠন করে। এ বিষয়ে গুগল ডিপমাইন্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ডেমিস হাসাবিস জানিয়েছেন, তহবিলের অর্থ খরচ করে পরবর্তী প্রজন্মের এআই–নির্ভর ওষুধের নকশা তৈরি করা হচ্ছে। এআইয়ের মাধ্যমে একদিন সব রোগের সমাধানের লক্ষ্যে এটি একটি বড় পদক্ষেপ।

বর্তমানে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনেক প্রতিষ্ঠান ওষুধ তৈরির জন্য কাজ করছে। বিভিন্ন বায়োটেক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এনিমা বায়োটেক, ইকটোস ও নভো নরডিস্কের মতো প্রতিষ্ঠান এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। পরিসংখ্যান বলছে, এখন পর্যন্ত প্রায় তিন হাজারের বেশি ওষুধ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। তবে বেশির ভাগ ওষুধই বর্তমানে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এআইয়ের নকশা করা ক্যানসারের ওষুধ পরীক্ষা করা হবে মানবদেহে