ফরিদপুরে দুর্নীতিবিরোধী নানা প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত
Published: 28th, May 2025 GMT
ফরিদপুর ও রাজবাড়ী জেলার শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হলো দুর্নীতিবিরোধী রচনা, বিতর্ক ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। বুধবার দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পর্বে সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতিকে না বলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন বক্তারা।
ফরিদপুর শহরের অম্বিকা মেমোরিয়াল হলে বিকেলে প্রতিযোগিতার বিভিন্ন পর্বের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান মোল্লা। সেখানে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় ফরিদপুরের উপ-পরিচালক রতন কুমার দাসের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা শিক্ষা অফিসার বিষ্ণুপদ ঘোষাল ও জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি প্রফেসর সুলতান মাহমুদ হীরক।
দুদক ফরিদপুর ও জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির আয়োজনে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালায় দুর্নীতি বিরোধী বিভিন্ন বিষয়কে প্রতিপাদ্য করে রচনা প্রতিযোগিতা, চিত্রাঙ্কন ও বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
রাজবাড়ী ও ফরিদপুর দলের মধ্যে অনুষ্ঠিত বিতর্কে বিজয়ী হন ফরিদপুর জেলা দল। সেরা বক্তা নির্বাচিত হন ফরিদপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সারিয়া সপ্তর্ষি। নয় রাউন্ড বিতর্কে পর্যায়ক্রমে মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাসানউজ্জামান, ফরিদপুর ডিবেট ফোরামের তাহসিনা রহমান দিনা ও মেহজাবিন হাসান দিবা।
দুর্নীতিবিরোধী রচনা প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেন ফরিদপুরের সারদা সুন্দরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের তাসমিয়া বিনতে জামান। চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় প্রথম হন ফরিদপুরের ঈশান ইনস্টিটিউশনের শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান।
বিকেলে আলোচনা ও সমাপনী পর্বে প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান মোল্লা তার বক্তব্যে বলেন, দুর্নীতি হচ্ছে মাদকের মত, এক বার এতে অভ্যস্ত হলে সারা জীবনই এটার প্রতি আসক্তি থেকে যায়।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ছোট কর্মচারীরা না হয় বেতন কম পান তাই ঘুষ খান, কিন্তু বড় বড় রাঘব বোয়ালরা যে দুর্নীতি করছে, অর্থ-পাচার করছে, তার কারণ কী? তাদের তো কোনো অভাব নেই। এ জন্য পরিবার থেকে শিক্ষা দিতে হবে যাতে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে আমাদের সন্তানরা বেড়ে উঠতে পারে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’
জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’