মাগুরায় ৫ জনকে জিম্মি করে নির্যাতন ও মুক্তিপণ দাবির অভিযোগ, যুবক আটক
Published: 29th, May 2025 GMT
মাগুরায় ৫ ব্যক্তিকে জিম্মি করে নির্যাতন ও ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে একজনকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মাগুরা পৌরসভার সাজিয়াড়া এলাকার একটি মেসবাড়ি থেকে ওই পাঁচজনকে উদ্ধার করা হয়।
আটক ব্যক্তির নাম ইশতিয়াক আহমেদ (২৭)। তিনি সাজিয়াড়া এলাকার বাসিন্দা।
জিম্মি অবস্থা থেকে উদ্ধার যুবকেরা হলেন গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বড়ফা গ্রামের রাজীব সরদার (২৪), হৃদয় সরদার (২১), বাবু শেখ (২৪), ওসমান শেখ (২৪) ও রিয়াদ ইসলাম (২৩)। তাঁরা বলেন, সেনাবাহিনী ও পুলিশের একটি যৌথ দল অভিযান চালিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে। মামলা হলে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।
ভুক্তভোগীদের ভাষ্য, ২১ মে বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক সামগ্রী বিক্রির জন্য মাগুরায় আসেন ওই পাঁচ যুবক। এ জন্য তাঁরা সাজিয়াড়া এলাকায় ‘এম এস ছাত্রাবাস’ নামের একটি মেসে দুটি কক্ষ ভাড়া নেন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় স্থানীয় বাসিন্দা ইশতিয়াক আহমেদসহ ৮-১০ জন সেই মেসে ঢুকে তাঁদের জিম্মি করে নির্যাতন চালান। এ সময় তাঁদের মারধরের পাশাপাশি হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। তাঁদের বাড়িতে কল করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিতে বলা হয়।
উদ্ধার যুবকদের একজন রাজীব সরদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাতে জোরে গান বাজিয়ে আমাদের মারধর করে ও ভিডিও ধারণ করা হয়। আমাদের দুজনকে রাতে একটি শ্মশানে নিয়ে হত্যার হুমকি দেয় ওরা। সকালে আলাদা আলাদা ঘরে আমাদের বন্দী করে রাখে। পরে সেনাবাহিনী এসে আমাদের উদ্ধার করেছে।’
মাগুরা সেনাক্যাম্প সূত্রে জানা গেছে, ওই যুবকদের আটকের পর মারধরের একটি ভিডিও চিত্র তাঁদের হাতে এসেছে। সেখানে দেখা যায়, চার যুবককে পাশাপাশি দেয়ালের দিকে দুই হাত উঁচু করে দাঁড় করিয়ে এক ব্যক্তি লাঠি দিয়ে তাঁদের পেটাচ্ছেন। বুধবার দুপুরে খবর পেয়ে সাজিয়াড়া গ্রামের ‘এম এস ছাত্রাবাস’ও পাশের একটি বাড়ি থেকে তালা ভেঙে ওই পাঁচ যুবককে উদ্ধার করা হয়। তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই গ্রামের ইশতিয়াক আহমেদের (শান্ত) বাড়ি থেকে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া ইলেকট্রনিক সামগ্রী উদ্ধার করে সেনাবাহিনী। পরে ওই মেসবাড়ি থেকে মাদক সেবনের বিভিন্ন সামগ্রী, লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র জব্দ করা হয়।
মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আইয়ুব আলী বলেন, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। পাশাপাশি জড়িত অন্য ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান চলছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
তানোরে চুরি হওয়া ১১ লাখ টাকা মাটি খুঁড়ে উদ্ধার
রাজশাহীর তানোর উপজেলায় মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করা হয়েছে চুরি হয়ে যাওয়া প্রায় ১১ লাখ টাকা। এসব টাকা চুরির অভিযোগে আরজেদ আলী ওরফে কুরহান (৩৫) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি উপজেলার জোড়পাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে কুরহানের বাড়ির পেছনে মাটি খুঁড়ে টাকার ব্যাগ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগেই কুরহানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। টাকা উদ্ধারের পর বুধবার বিকেলে কুরহানকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জেলা পুলিশের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, রাজশাহী নগরের শিরোইল মঠপুকুর এলাকার বাসিন্দা মাবিয়া খাতুন জমি বিক্রি করতে গত সোমবার তানোর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে যান। সঙ্গে ছিল জমি বিক্রির ১১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। অফিসে বসে মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় মাবিয়া খাতুন তার টাকার ব্যাগটি চেয়ারের পাশে রাখেন। এ সুযোগে কৌশলে ব্যাগটি নিয়ে সটকে পড়ে কুরহান।
মোবাইল ফোনে কথোপকথন শেষে ব্যাগটি না পেয়ে কান্নাকাটি শুরু করেন মাবিয়া খাতুন। এতে পুরো অফিসজুড়ে হইচই পড়ে যায়। পরে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, একজন ব্যক্তি ব্যাগ নিয়ে দ্রুত চলে যাচ্ছে। ঘটনার দিনই মাবিয়া খাতুন তানোর থানায় অভিযোগ করেন। এর ভিত্তিতে পুলিশ প্রযুক্তির ব্যবহার করে চোর শনাক্ত করে। মঙ্গলবার রাতেই কুরহানকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশকে কুরহান জানিয়েছেন, ব্যাগটি চুরি করে কাউকে কিছু না বলে তিনি বাড়ির পেছনে মাটি খুঁড়ে তা পুঁতে রাখেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে টাকা খরচের পরিকল্পনা ছিল তার। তবে, এত দ্রুত ধরা পড়বেন, সেটা ভাবেননি।
তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন জানিয়েছেন, কুরহান চুরির কথা স্বীকার করলে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বাড়ির পেছনের মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করা হয় ব্যাগভর্তি টাকা। আদালতের অনুমতি নিয়ে এই টাকা মালিক মাবিয়া খাতুনের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
ঢাকা/কেয়া/রফিক