কানাডায় ভয়াবহ দাবানল, ম্যানিটোবায় জরুরি অবস্থা জারি
Published: 29th, May 2025 GMT
কানাডার মধ্য ও পশ্চিমাঞ্চলে ভয়াবহ দাবানল দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় দেশটির ম্যানিটোবা প্রদেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। এমন অবস্থায় সেখান থেকে হাজারো মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আলবার্টা প্রদেশের কিছু এলাকা থেকে তেল ও গ্যাস উত্তোলন বন্ধ রাখা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কানাডার মধ্য ও পশ্চিমাঞ্চলে দাবানল ছড়িয়ে পড়ায় ম্যানিটোবা প্রদেশে বুধবার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। একইসঙ্গে উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের প্রায় ১৭ হাজার মানুষকে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ফ্লিন ফ্লন শহরের বাসিন্দারাও রয়েছেন।
ম্যানিটোবার প্রিমিয়ার ওয়াব কিনিউ এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, এটি প্রদেশটির সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মানববসতি সরিয়ে নেওয়ার ঘটনা। বাস্তুচ্যুত মানুষদের উইনিপেগসহ অন্যান্য শহরের ফুটবল মাঠ ও কমিউনিটি সেন্টারে আশ্রয় দেওয়া হবে। পাশাপাশি প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরাও উদ্ধার কাজে অংশ নিচ্ছেন।
তিনি জানান, এটি প্রদেশটির সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মানববসতি সরিয়ে নেওয়ার ঘটনা।
প্রিমিয়ার কিনিউ বলেন, এই বিপর্যয় মোকাবিলায় সরকারের সব স্তরের সহযোগিতা ও বিপুল পরিমাণ সম্পদের প্রয়োজন হবে।
অন্যদিকে দাবানলের কারণে আলবার্টা প্রদেশের কিছু এলাকা থেকে তেল ও গ্যাস উত্তোলন বন্ধ রাখা হয়েছে এবং একটি ছোট শহরের মানুষদের সরে যেতে বলা হয়েছে। তেল উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান সিনোভাস এনার্জি জানিয়েছে, আলবার্টার উত্তরে ফস্টার ক্রিক এলাকায় তাদের কিছু কর্মীকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আলবার্টার উত্তরাঞ্চলের চিপেওইয়ান লেক এলাকায় প্রায় ২৯০০ হেক্টর এলাকা জুড়ে দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। এটি তেলসমৃদ্ধ ফোর্ট ম্যাকমারির কাছাকাছি এবং এই দাবানলের কারণে সেখানকার তেল কোম্পানিগুলো সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
আলবার্টা সরকার জানিয়েছে, চিপেওইয়ান লেক এলাকায় আপাতত সরাসরি কোনও ঝুঁকি না থাকলেও বাতাসের দিক পরিবর্তন হলে তা মারাত্মক হতে পারে, এজন্য এলাকার বাসিন্দাদের এক ঘণ্টার মধ্যে সরে যেতে বলা হয়েছে।
এছাড়া স্বান হিলস শহরের উত্তরে আরেকটি ভয়াবহ দাবানলে প্রায় ১৬০০ হেক্টর এলাকা জ্বলছে। শহরটির প্রায় ১২০০ বাসিন্দাকে সোমবার রাতেই সরে যেতে বলা হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আলব র ট শহর র অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’
জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’