সুনামগঞ্জে ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নামা ঢলে জেলার নদ-নদী ও হাওরে পানি বেড়েছে। আগামী তিন দিন মাঝারি ও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকলেও বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

সুনামগঞ্জ পাউবো সূত্রে জানা গেছে, জেলায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে আজ শুক্রবার দুপুর ১২ পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ১৭১ মিলিমিটার। উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জিতেও বৃষ্টি হচ্ছে, তবে সেটি স্বাভাবিক মাত্রায়। মূলত চেরাপুঞ্জিতে বেশি বৃষ্টি হলে ভাটির সুনামগঞ্জে পাহাড়ি ঢল নামে। সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর এলাকায় আজ সকাল ৯টায় সুরমা নদীর পানির উচ্চতা ছিল ৫ দশমিক ৮৮ মিটার, যা বিপৎসীমার ১৯২ সেন্টিমিটার নিচে। বর্ষা মৌসুমে এখানে সুরমা নদীর পানির বিপৎসীমা ৮ দশমিক ৮০ মিটার।

এ ছাড়া জেলার পাটনাই, কুশিয়ারা, নলজুর, চেলা, চলতি, রক্তি, বৌলাই, খাসিয়ামারাসহ সব নদ–নদীর পানি বেড়েছে। পানি বাড়লেও সুনামগঞ্জে আপাতত বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির কোনো আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন পাউবো কর্মকর্তারা। তাঁরা বলছেন, পানি বাড়বে। তবে বড় কোনো বন্যার আশঙ্কা নেই। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে স্বল্প মেয়াদে বন্যা হতে পারে।

পাউবো ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাহাড়ি ঢল নেমে প্রথমেই সীমান্তবর্তী জেলার ছাতক, সুনামগঞ্জ সদর দোয়ারাবাজার, তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা বন্যাকবলিত হয়। এবারও বৃষ্টি শুরু হওয়ায় এই পাঁচ উপজেলার নদ-নদী ও হাওরে পানি বাড়ছে। তবে হাওরে এখনো পানি কম থাকায় বন্যার পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা কম।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এখন হাওরে কোনো ধান নেই। ধান কাটা শেষ। তাই বন্যা হলেও ধানের ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই। তবে সীমান্তবর্তী উঁচু এলাকায় সবজির চাষ করা হচ্ছে। অতিবৃষ্টি ও ঢলের পানিতে সেগুলোর ক্ষতির আশঙ্কা আছে। বন্যায় সড়ক প্লাবিত হলে গ্রামাঞ্চলের লোকজন যাতায়াতে বিড়ম্বনায় পড়েন। আবার গবাদিপশু নিয়ে ভোগান্তি বেড়েছে।

সদর উপজেলার সুরমা নদীর উত্তরপাড়ের ইব্রাহিমপুর গ্রামের গ্রামের বাসিন্দা আকরাম উদ্দিন বলেন, তাঁদের এলাকায় সবজি হয় বেশি। পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় সবজির ক্ষতি হয় বেশি। একই সঙ্গে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে অনেকেই মৌসুমি গবাদিপশু পালন করেন। বন্যা হলে তাঁরা ভোগান্তিতে পড়েন বেশি।

বন্যা সতর্কতায় প্রস্তুতি

সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলোতে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ১৫ মে এ–সংক্রান্ত একটি চিঠি তাঁদের দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা হয়েছে। যেকোনো প্রয়োজনে সেখানে যোগাযোগ করতে নাগরিকদের অনুরোধ করা হয়েছে।

পাউবোর সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, আবহাওয়া বিভাগের তথ্য অনুযায়ী সুনামগঞ্জে আগামী তিন দিন মাঝারি ও ভারী বৃষ্টি হবে। এই মৌসুমে এমন বৃষ্টি হওয়াটা স্বাভাবিক। বৃষ্টি হবে, পানি বাড়বে এটাও স্বাভাবিক। তাই বিষয়টি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ন মগঞ জ র আশঙ ক বন য র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশ ক্রিকেটের সমস্যা কী, সমাধান কোথায়: শুনুন তামিমের মুখে

এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় সমস্যা কী? কোন বিষয়টি সবার আগে সমাধান করা উচিত?

দুটি প্রশ্নের উত্তরে অনেকেই অনেক কথাই বলবেন। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত কারও বিষয়টি ভালো জানার কথা। যেমন তামিম ইকবাল। প্রথম আলোর প্রধান ক্রীড়া সম্পাদক উৎপল শুভ্র তামিমের সামনে দুটি প্রশ্ন রেখেছিলেন। তামিমের উত্তর, ‘আমার কাছে মনে হয় যে আমাদের ফ্যাসিলিটিজ (অনুশীলনের পর্যাপ্ত সুযোগ–সুবিধা) নাই।’

প্রথম আলোর কার্যালয়ে উৎপল শুভ্রকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে আড্ডার মেজাজে তামিম বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে অনেক কথাই বলেছেন। নিজের ক্যারিয়ার, ভবিষ্যৎ লক্ষ্য—এসব নিয়েও বেশ খোলামেলা কথা বলেন সাবেক এই ওপেনার।

আলাপচারিতার একপর্যায়েই বাংলাদেশ ক্রিকেটে এ মুহূর্তের সমস্যার প্রসঙ্গ উঠেছিল। অনুশীলনের পর্যাপ্ত সুযোগ–সুবিধার অভাবকে সামনে টেনে এনে তামিম বলেছেন, ‘একটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দলের যে ফ্যাসিলিটিজ দরকার হয় কিংবা বাংলাদেশের মতো দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলার একটি (ক্রিকেট), যে ফ্যাসিলিটিজ থাকা উচিত, তার আশপাশেও নেই। পৃথিবীর তৃতীয়, চতুর্থ ধনী বোর্ডের যে ফ্যাসিলিটিজ থাকা উচিত, আমরা এর আশপাশেও নেই।’

তামিম বিষয়টি ভালোভাবে ব্যাখ্যা করলেন, ‘ক্রিকেট দলের প্রতি ভক্তদের যে প্রত্যাশা, সেটা পূরণের জন্য যে ফ্যাসিলিটিজ দরকার, আমরা তার আশপাশেও নেই। আপনি মাঝারি মানের ক্রিকেটার হতে পারেন কিংবা মাঝারি মানের ব্যাটসম্যান হতে পারেন, সঠিক অনুশীলনের মাধ্যমে কিন্তু আপনি মাঝারি মান থেকে দুই ধাপ ওপরে উঠতে পারবেন।’

মুশফিকুর রহিম

সম্পর্কিত নিবন্ধ