প্রায় ৭ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে জাতিসংঘ। রয়টার্সের হাতে আসা একটি অভ্যন্তরীণ স্মারকলিপি অনুসারে, জাতিসংঘ সচিবালয় ৩.৭ বিলিয়ন ডলারের বাজেট ২০ শতাংশ কমানোর জন্য ৬ হাজার ৯০০ জনকে ছাঁটাইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এই নির্দেশনায় আগামী ১৩ জুনের মধ্যে কর্মীদের বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। জাতিসংঘের এই অর্থ সংকটের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের আংশিকভাবে সৃষ্ট আর্থিক সংকট অনেকটাই দায়ী। কেননা, দেশটি বিশ্ব সংস্থাটিকে বার্ষিক প্রায় এক-চতুর্থাংশ তহবিল প্রদান করে।
এমন একসময় এ নির্দেশনা দেওয়া হলো, যখন জাতিসংঘ তুমুল অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে, যার জন্য যুক্তরাষ্ট্রেরও দায় আছে। জাতিসংঘের মোট বার্ষিক বাজেটের প্রায় এক-চতুর্থাংশ তারাই দেয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এরই মধ্যে যে বৈদেশিক সহায়তা কমিয়েছে, তাতে বিপদে পড়েছে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থাগুলো। এর পাশাপাশি জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের দেনাও এখন প্রায় দেড়শ কোটি ডলারের কাছাকাছি।
জাতিসংঘের কন্ট্রোলার চন্দ্রমৌলি রামানাথনের নামে পাঠানো নথিটিতে অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অনাদায়ী অর্থকে সংকটের কারণ হিসেবে দেখাননি। উল্টো বলেছেন, মার্চে ‘ইউএন৮০’ নামের একটি অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনা শুরু হয়েছিল, এর অংশ হিসেবেই এ কাটছাঁটের দিকে হাঁটছে বৈশ্বিক সংস্থাটি। তহবিল কাটছাঁট ও কর্মী কমানোর এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে, নতুন বাজেটের শুরুতেই।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও চলতি মাসে কূটনীতিকদের সঙ্গে এক ব্রিফিংয়ে জানান, তিনি একটি বড় ধরনের কাঠামোগত সংস্কারের চিন্তা করছেন, যাতে বিভিন্ন বিভাগ একত্র করা, কিছু দপ্তর সরিয়ে নেওয়া এবং ব্যয় সাশ্রয়ের জন্য কর্মীদের অপেক্ষাকৃত কম খরচের শহরে স্থানান্তরের পরিকল্পনাও রয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
দুই জেলায় বজ্রপাতে প্রাণ গেল পাঁচজনের
দুই জেলায় বজ্রপাতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহে তিনজন এবং শেরপুরে দু’জনের প্রাণহানি হয়েছে। শনিবার এসব ঘটনা ঘটে। নিজেস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর–
জানা গেছে, ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাঁচবাগ ইউনিয়নের দক্ষিণ লামকাইন গ্রামের বাসিন্দা সোহাগ মিয়া ব্রহ্মপুত্র নদের চরে গরু চড়াতে গিয়ে বজ্রপাতের শিকার হন। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। এ সময় তাঁর দুটি গরুও বজ্রপাতে মারা গেছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পাগলা থানার ওসি ফেরদৌস আলম।
একই দিন নান্দাইল উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের বাসিন্দা সাইদুল হক বৃষ্টিতে ভিজে বাইরে খেলা করার সময় বজ্রপাতের শিকার হয়ে মারা গেছে।
নান্দাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাহেলুর রহমান জানান, দুপুরে হঠাৎ গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হয়। এ সময় বৃষ্টিতে ভিজে বাইরে খেলতে গিয়ে শিশু সাইদুল হক বজ্রপাতের শিকার হয়।
এ ছাড়া ফুলবাড়িয়ায় বজ্রপাতে শফিকুল ইসলাম নামে এক রাজমিস্ত্রির মৃত্যু হয়েছে। কালাদহ ইউনিয়নের বিদ্যানন্দ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, রাজমিস্ত্রি শফিকুল সন্ধ্যার আগে কাজ শেষ করে ফেরার পথে বাড়ির পাশে আমগাছের নিচে আশ্রয় নিলে বজ্রপাতের শিকার হন। কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে মারা যান তিনি। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ফুলবাড়িয়া থানার ওসি রোকনুজ্জামান।
একই দিনে শেরপুরের নকলা উপজেলার টালকী ইউনিয়নের পশ্চিম বড় পাগলা গ্রামে বজ্রপাতের শব্দে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কৃষক সমির উদ্দিন সমু নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
তাঁর পরিবার জানায়, ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হলে দুপুরে মাঠে গরু আনতে যান সমির। হঠাৎ বিকট শব্দে বজ্রপাত হলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তিনি। তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
এ ছাড়া নালিতাবাড়ী উপজেলার কাঁকরকান্দি ইউনিয়নের মানিককুড়া গ্রামে শনিবার দুপুরে বজ্রপাতে হাজেরা খাতুন নামে গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। তিনি একই গ্রামের খোরশেদ আলমের স্ত্রী।
জানা গেছে, স্থানীয় হাজিমোড় এলাকায় একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে তাঁর নাতনি। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে নাতনিকে আনতে মাদ্রাসায় যান তিনি। ফেরার পথে তাঁর ওপর বজ্রপাত হলে গুরুতর আহত হন। তবে সঙ্গে থাকা নাতনির কিছু হয়নি। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জানান, পথেই মারা গেছেন তিনি।