সাধারণ মানুষ কষ্টে আছে। দারিদ্র্য বাড়ছে কি না, এটা তো পরিসংখ্যানের বিষয়। আসলে অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি বুঝতে পরিসংখ্যানগুলো খুব জরুরি।
বাস্তবে মানুষের কষ্ট বাড়ছে, এটা নিশ্চিত। আর সেটা বিশ্বব্যাংকের সম্প্রতি দেওয়া উপাত্তেও দেখা গেছে। সেখানে বলা আছে, ৩০ লাখ মানুষ নতুনভাবে দারিদ্র্যসীমার নিচে পড়বে।
সাধারণ মানুষ কষ্টে আছে। এই কষ্টের মধ্যেও অনেক সময় মানুষ পেট বেঁধে সাময়িকভাবে কিছু মেনে নিতেও পারে। মানুষ তখন কিছু বিষয় মানিয়ে নেয়। যেমন কম পণ্য কেনে, কম খায়। যাকে বলে ‘নেতিবাচকভাবে মানিয়ে’ নেওয়া। কিন্তু এখন যে প্রবণতা, তা দীর্ঘমেয়াদি হবে বলে মনে হচ্ছে। তাতে মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে।
এখানে স্মরণ করা যায়, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে খাতওয়ারি বিন্যাসগুলো কেমন, সেই দিকে দৃষ্টি দেওয়া জরুরি।
মনে রাখতে হবে, কোভিড–১৯–এর কারণে অনেকে গরিব হয়েছেন। আমরা সেই সময় গবেষণা করে তা তুলে ধরেছি। কয়েক বছর ধরেই ধারাবাহিক প্রবণতা ছিল—বিনিয়োগ নেই, কর্মসংস্থান হচ্ছে না, তরুণেরা কাজ পাচ্ছেন না। আর এখন একটা রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের বেসরকারি সংস্থা পিপিআরসি একটা কাজ করছে। অন্তত আট হাজার মানুষের ওপর জরিপ সম্প্রতি শেষ হয়েছে। এর ফলাফল আমরা আগামী জুন মাসের মধ্যেই প্রকাশ করতে পারব।
মানুষের নতুন করে দারিদ্র্য হওয়ার বিষয়টি অনেক সময় আপেক্ষিক। কখনো দারিদ্র্য বাড়ে, আবার তা কমে। কিন্তু সমস্যা তখনই হয়, যখন এটা কাঠামোগত বিষয় হয়ে যায়। সে অবস্থায় আমরা চলে যাচ্ছি কি না, তা বুঝতে উন্নত পরিসংখ্যান দরকার।
এখন দারিদ্র্য পরিস্থিতির এই যে অবনমন, তা থেকে উত্তরণে সাময়িক ও দীর্ঘ মেয়াদে কিছু কাজ করতে হবে। সাময়িকভাবে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিকে বিস্তৃত করতে হবে। সেগুলোকে জোরালো ও প্রায়োগিক করতে হবে। আরেকটা হচ্ছে যে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে আরও উৎসাহিত করতে হবে। সেখানে যদি সহায়তা করার দরকার হয়, তবে তা করতে হবে। সামগ্রিকভাবে আমাদের যে প্রবৃদ্ধির প্রক্রিয়া আছে, সেটাকে শক্তিশালী করতে হবে। তৈরি পোশাক খাত ও প্রবাসী আয়ের বাইরে আমাদের জরুরি ভিত্তিতে প্রবৃদ্ধির নতুন চালক অন্বেষণ করা দরকার। এখানে বিশেষ করে কৃষি ও এর বিভিন্ন উপখাত, আইটি পরিষেবা, চামড়া ও ওষুধশিল্প ইত্যাদির দিকে নজর দেওয়া যেতে পারে। বিনিয়োগ পরিস্থিতির উন্নয়ন দরকার। আর তা করতে হলে যে রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিত আছে, তা উন্নত হতে হবে। ইতিমধ্যে সৃষ্টি হওয়া অনিশ্চয়তাগুলো দূর করতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দরক র
এছাড়াও পড়ুন:
চার সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্কতা, ভারী বর্ষণের আশঙ্কা
দেশের উপকূলীয় এলাকায় সক্রিয় রয়েছে স্থানীয় মৌসুমী বায়ু। এর প্রভাবে চার সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রাকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়ার পূর্বভাসে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী পাঁচ দিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে। কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনাও রয়েছে।
আজ ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রামে কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী ও রংপুরে অনেক জায়গায় বৃষ্টিপাত হতে পারে। একইসঙ্গে কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
শনিবার রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ এলাকায় এবং খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রামে অনেক জায়গায় বৃষ্টিপাত হতে পারে। সারা দেশের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের আশঙ্কা রয়েছে। এই দিন থেকে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকবে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে, বিশেষ করে নদীতীরবর্তী ও নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের। একইসঙ্গে সম্ভাব্য জলাবদ্ধতা ও কৃষিক্ষেত্রে ক্ষতির বিষয়ে নজর রাখতে বলা হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে খুলনায় ৭৫ মিলিমিটার। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল নরসিংদীতে ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ঢাকা/ইভা