কৃষি খাতে বিনিয়োগে সরকারি-বেসরকারি বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি
Published: 31st, May 2025 GMT
দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে ও গ্রামীণ অর্থনীতিকে বাঁচাতে কৃষি খাতের বিনিয়োগে সরকারি ও বেসরকারি বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ কৃষক–মজুর সংহতি। সংগঠনটির নেতারা বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষকদের অবদান এখনো অনেক গুরুত্বপূর্ণ হলেও গত ৫৩ বছরে কৃষক–মজুরদের স্বার্থ রক্ষায় বড় কোনো সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আবারও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কৃষি খাত সংস্কারের যে সুযোগ এসেছে, তা কাজে লাগাতে হবে।
রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে আজ শনিবার আয়োজিত প্রাক–বাজেট সেমিনারে এসব কথা বলেছেন কৃষক–মজুর সংহতির নেতারা। ‘কৃষি খাতে বিনিয়োগে সরকারি ও বেসরকারি বরাদ্দ বৃদ্ধি’ শিরোনামে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়। অবিলম্বে ‘কৃষিপণ্য মূল্য কমিশন গঠন’ করে কৃষকের ফসলের লাভজনক দাম নিশ্চিত করার দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি অর্থনীতিবিদ জাহাঙ্গীর আলম খান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অবদান হয়েছে কৃষি খাতে। গত ৫৪ বছরের উন্নয়ন পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, প্রতিবছরই ৩ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যা বৈশ্বিক গড়ের অনেক বেশি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক কৃষিসচিব আনোয়ার ফারুক বলেন, বহুদিন ধরে কৃষি খাতে ব্যবস্থাগত বদলের লক্ষ্যে সরকারের ভেতরে–বাইরে চেষ্টা চলছে, কিন্তু সরকারি ব্যবস্থার অদক্ষতা ও দুর্নীতির কারণে কার্যকর সংস্কার কাজ করে না। কৃষিতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে, তবে তা বেসরকারি খাতের মাধ্যমেই। কারণ কৃষি খাতের শতকরা ৯০ ভাগ এখন বেসরকারি খাতের হাতে।
সেমিনারে কৃষক–মজুর সংহতির কেন্দ্রীয় সভাপতি ও প্রবীণ কৃষক নেতা দেওয়ান আবদুর রশীদ বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষকদের অবদান এখনো অনেক গুরুত্বপূর্ণ হলেও গত ৫৩ বছরে কৃষক–মজুরদের স্বার্থ রক্ষায় বড় কোনো সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আবারও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কৃষি খাত সংস্কারের যে সুযোগ এসেছে তাকে কাজে লাগাতে হবে।
সেমিনারে কৃষি খাতে বিনিয়োগে বাড়ানোর বিষয়ে একটি ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন সংগঠনটির যুগ্ম সম্পাদক তৌহিদুর রহমান। সেমিনারের শুরুতেই জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে কৃষক পরিবারের শহীদ সদস্য আবু সাঈদসহ সব শহীদের প্রতি দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
কৃষক–মজুর সংহতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলিমের সঞ্চালনায় সেমিনারে অন্যদের মধ্যে গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভুঁইয়া, বাংলাদেশ কৃষক সমিতির সভাপতি এস এম সবুর, সমাজতান্ত্রিক কৃষক ও ক্ষেতমজুর ফ্রন্টের সভাপতি বজলুর রশিদ ফিরোজ, জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের যুগ্ম সম্পাদক ওবায়দুর রহমান, জাতীয় কৃষক জোটের সাধারণ সম্পাদক আশেক ই ইলাহি, প্রাকৃতিক কৃষি আন্দোলনের সংগঠক ইফতেখার আলী, কৃষক–মজুর সংহতির সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুল আলম, ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
মে মাসে রাজনৈতিক সহিংসতায় ৮ মৃত্যু
মে মাসে সারাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতায় অন্তত আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বিএনপির অন্তর্দ্বন্দ্বে এক কিশোরসহ ছয়জন নিহত হন। পাশাপাশি দলীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগের অন্তর্দ্বন্দ্বে এক কিশোর আর দলটির সঙ্গে সংঘর্ষে জামায়াতে ইসলামীর একজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ওই মাসে রাজনৈতিক সহিংসতার ৫৪টি ঘটনায় অন্তত ৩৫১ জন আহত হন। মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) মে মাসের মানবাধিকার প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। গতকাল শনিবার মানবাধিকার সংগঠনটি এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন এবং এমএসএফের সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে প্রতি মাসে সংগঠনটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
নির্যাতনের শিকার ৩৬৮ নারী ও শিশু
মে মাসে নারী ও শিশু নির্যাতনের ৩৬৮টি ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে এমএসএফ। সংগঠনটি বলছে, ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৫৯টি। এর মধ্যে দলবদ্ধ ধর্ষণ ১৬টি, ধর্ষণ ও হত্যা ৫টি। ছয়জন প্রতিবন্ধী কিশোরী ও নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।
এ মাসে ২১ কিশোরীসহ ৪২ নারী আত্মহত্যা করেছেন। অপহরণের শিকার হয়েছেন পাঁচ কিশোরী ও দুই নারী। এ ছাড়া দুই শিশু ও দুই কিশোরী নিখোঁজ রয়েছে। মে মাসে এক শিশু, পাঁচ কিশোরী ও ১০ নারীর অস্বাভাবিক মৃত্যুসহ ৮৬ শিশু, কিশোরী ও নারী হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ১৯ শিশু ও কিশোরী রয়েছে।
৩৪ গণপিটুনির ঘটনা
এমএসএফ জানায়, মে মাসে অন্তত ৩৪টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় সাতজন নিহত ও ৩৮ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।