বিরল এক মহাজাগতিক ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেছেন বিজ্ঞানীরা। প্রায় ২০ বছর ঘুমন্ত অবস্থায় থাকার পর সুপার ম্যাসিভ বা বড় আকারের একটি ব্ল্যাকহোলকে (কৃষ্ণগহ্বর) সক্রিয় হতে দেখেছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, এবারই প্রথম কোনো ব্ল্যাকহোলকে রিয়েল টাইম পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সুপ্ত অবস্থা থেকে সক্রিয় অবস্থায় রূপান্তরের ঘটনা শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।

জার্মানির বিজ্ঞানী পাউলা সানচেজ সায়েজ বলেন, সর্বদা শান্ত ও নিষ্ক্রিয় বলে মনে হওয়া এই গ্যালাক্সি একদিন আলো ছড়াতে শুরু করে। উজ্জ্বলতায় নাটকীয় পরিবর্তন দেখা যায়। এমনটা আমরা আগে কখনো দেখিনি। এ ঘটনা একটি কৃষ্ণগহ্বরের নিস্তব্ধ অবস্থা থেকে সক্রিয় অবস্থায় রূপান্তরের প্রথম রিয়েল-টাইম পর্যবেক্ষণ। এই মহাজাগতিক ঘটনা ব্ল্যাকহোলের আচরণ সম্পর্কে নতুন তথ্য দিচ্ছে। আরেক বিজ্ঞানী ক্লাউডিও রিকি বলেন, এ ধরনের দৈত্য দানব সাধারণত সুপ্ত ও অদৃশ্য থাকে। পর্যবেক্ষণ করা ঘটনা ব্ল্যাকহোল যে সক্রিয় হতে পারে, তার একটি বিরল আভাস দেয়।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, এসডিএসএস১৩৩৫+০৭২৮ নামের গ্যালাক্সিতে প্রায় ২০ বছর পর নাটকীয়ভাবে আলো জ্বলতে দেখা গেছে। বিশাল এই ব্ল্যাকহোল জাগ্রত হওয়ার ঘটনা এবারই প্রথম সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। ভারগো তারকামণ্ডলে প্রায় ৩০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত এই গ্যালাক্সি। ২০১৯ সালের শেষের দিক থেকে গ্যালাক্সির উজ্জ্বলতায় নাটকীয় পরিবর্তন দেখা যায়। সূর্যের ভরের ১০ লাখ গুণ বেশি ভরযুক্ত ব্ল্যাকহোলের কেন্দ্রটি অতিবেগুনি, অপটিক্যাল ও ইনফ্রারেড তরঙ্গদৈর্ঘ্যের তীব্র আলো বিকিরণ করতে শুরু করেছে। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে সেখান থেকে এক্স-রে নির্গত হতে শুরু করে।

বিজ্ঞানীদের ধারণা, ব্ল্যাকহোলটির চারপাশে প্রচুর গ্যাস রয়েছে। এ ফলে গ্যালাক্সিটি একটি সক্রিয় গ্যালাকটিক নিউক্লিয়াসে রূপান্তরিত হয়েছে। এই পর্যবেক্ষণ ব্ল্যাকহোলের বৃদ্ধি ও গ্যালাক্সি বিবর্তনের বিষয়ে নতুন তথ্য জানতে সহায়তা করবে।

সূত্র: এনডিটিভি

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ