চার বছরে এক রাতও আমরা আলাদা থাকিনি: সারিকা
Published: 1st, June 2025 GMT
গ্ল্যামার জগতের জনপ্রিয় মুখ সারিকা সাবরিন। মডেলিং ও অভিনয়ে দীর্ঘদিনের সরব উপস্থিতি তাকে করে তুলেছে দর্শকের প্রিয় তারকা। তবে সম্প্রতি এক বিস্ময়কর গুঞ্জনে সরগরম হয়েছে মিডিয়াপাড়া। সারিকা নাকি পরকীয়ায় জড়িয়েছেন, আর সে কারণেই ভাঙনের মুখে তার দ্বিতীয় সংসার!
এক সময়ের আলোচিত এই অভিনেত্রীর ঘরোয়া জীবনে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এমন গুঞ্জন নতুন নয়। শোনা যাচ্ছিল, স্বামী আহমেদ রাহীর সঙ্গে বিচ্ছেদ নাকি এখন কেবল সময়ের ব্যাপার। এবার যুক্ত হয়েছে নতুন মাত্রা। গুলশানের এক কেমিক্যাল ব্যবসায়ীর সঙ্গে সারিকার পরকীয়ার অভিযোগ।
তবে এসব গুঞ্জনের জবাব দিতে আর চুপ থাকলেন না সারিকা। সম্প্রতি এক বক্তব্যে তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, ‘আমাদের দাম্পত্য জীবনের চতুর্থ বছর চলছে। এই চার বছরে আমরা এক রাতও আলাদা থাকিনি, এটাই বাস্তবতা।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় চার বছরে কখনোই আমরা আলাদা থাকিনি। অনেক দম্পতির মতো আমাদের মধ্যেও স্বাভাবিক খুনসুটি বা ঝগড়া হয়েছে, কিন্তু তা কখনোই সম্পর্কের ভাঙনের পর্যায়ে যায়নি। আর সেইসব সামান্য বিষয় আমরা বহু আগেই পেছনে ফেলে এসেছি।’
পরকীয়া ও বিচ্ছেদের খবর সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন সারিকা। তার ভাষায়, ‘এই গুজব কোথা থেকে ছড়াল, কে শুরু করল—তা যদি জানতাম, তাহলে এর সমাধান করতে পারতাম। আমি তো স্বামী-সন্তানকে নিয়ে গাড়িতে ঘুরতে বের হয়েছিলাম, সেখানেই এমন খবর শুনে অবাক হয়েছি।’
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুই পরিবারের সম্মতিতে আহমেদ রাহীর সঙ্গে সারিকার দ্বিতীয় বিয়ে হয়। এর আগে ২০১৪ সালে ব্যবসায়ী মাহিম করিম খানকে ভালোবেসে প্রথম বিয়ে করেছিলেন তিনি। সেই সংসারে একটি কন্যাসন্তান থাকলেও ২০১৬ সালে বিচ্ছেদ ঘটে তাদের।
গুজব যতই উঠুক, সারিকা বলছেন—স্বামী-সন্তানকে নিয়ে তার সংসার ভালোই চলছে। এখন শুধু সময়ই বলবে, এই গুঞ্জনের পেছনে বাস্তবতা কতটা, আর কতটাই বা নিছক রটনা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ ঞ জন
এছাড়াও পড়ুন:
কোরবানির জন্য সেরা পশু কোনটি
কোরবানির জন্য পশু নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়; কারণ, এটি শরিয়াহর নির্দিষ্ট শর্ত ও গুণাবলির ওপর নির্ভর করে। কিন্তু প্রশ্ন জাগে, কোরবানির জন্য কোন পশু সবচেয়ে উত্তম? উট, গরু, ভেড়া, নাকি ছাগল? ইসলামি শরিয়াহ এবং হাদিসের আলোকে এই প্রশ্নের উত্তর আমাদের জন্য স্পষ্ট দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
কোরবানির জন্য উত্তম পশু
ইসলামি ফিকহ অনুযায়ী, কোরবানির জন্য পশুগুলোর মধ্যে একটি নির্দিষ্ট ক্রমানুসারে উত্তমতা রয়েছে। প্রখ্যাত আলেম সালেহ আল মুনাজ্জিদ পরিচালিত ইসলাম কিউ অ্যান্ড এ-এর ফতোয়া কেন্দ্রের মতে, কোরবানির জন্য পশুগুলোর ক্রম নিম্নরূপ:
পশুর আকার, মাংসের পরিমাণ এবং এর মাধ্যমে বেশি মানুষের উপকারের বিষয়টি বিবেচনা করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, উট বা গরুর মাধ্যমে বেশি মানুষের মাঝে মাংস বিতরণ করা সম্ভব।১. উট: একজন ব্যক্তির পক্ষ থেকে কোরবানির জন্য সবচেয়ে উত্তম পশু হলো উট।
২. গরু বা ষাঁড়: একজন ব্যক্তির পক্ষ থেকে সম্পূর্ণ গরু বা ষাঁড় দ্বিতীয় স্থানে।
৩. ভেড়া: এরপর রয়েছে ভেড়া।
৪. ছাগল: ভেড়ার পর ছাগল।
৫. উটের সাত ভাগের এক ভাগ: একাধিক ব্যক্তি মিলে উটের অংশে অংশগ্রহণ করলে।
৬. গরুর সাত ভাগের এক ভাগ: একাধিক ব্যক্তি মিলে গরুর অংশে অংশগ্রহণ করলে।
এই ক্রমানুসারে উত্তমতা নির্ধারণের পেছনে পশুর আকার, মাংসের পরিমাণ এবং এর মাধ্যমে বেশি মানুষের উপকারের বিষয়টি বিবেচনা করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, উট বা গরুর মাধ্যমে বেশি মানুষের মাঝে মাংস বিতরণ করা সম্ভব, যা দরিদ্রদের জন্য বেশি উপকারী।
আরও পড়ুনকোরবানি যাঁর জন্য ওয়াজিব, যেভাবে করতে হবে১৭ জুলাই ২০২০উত্তম পশুর বৈশিষ্ট্য
শুধু পশুর ধরনই নয়, কোরবানির পশুর কিছু নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যও গুরুত্বপূর্ণ। হাদিসের আলোকে এই বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:
মোটা ও মাংসল: পশুটি মোটা, স্বাস্থ্যবান এবং মাংসে পরিপূর্ণ হওয়া উচিত। আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেছেন, রাসুল (সা.) দুটি শিংওয়ালা, সাদা-কালো মিশ্রিত ভেড়া কোরবানি করতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫,৫৫৭)
শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ: পশুটি শারীরিকভাবে সুস্থ ও অক্ষত হতে হবে। আবু সাঈদ আল-খুদরি (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) একটি সম্পূর্ণ (খাসি না করা), শিংওয়ালা, কালো মুখ, চোখের চারপাশে কালো বৃত্ত এবং কালো পা বিশিষ্ট পুরুষ ভেড়া কোরবানি করেছিলেন। (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস: ১১,৩১৫)
যদি পশু জন্মগতভাবে এই ত্রুটি নিয়ে জন্মায়, তবে তা কোরবানির জন্য গ্রহণযোগ্য।আরও পড়ুনঈদ যেভাবে এল১১ এপ্রিল ২০২৪মোটা বা খাসি করা: আবু রাফি (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) কোরবানির জন্য দুটি মোটা ভেড়া কিনতেন, যার মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে খাসি করা ভেড়াও ছিল। (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস: ২৩,৪৫৩)
খাসি করা পশুর মাংস সাধারণত সুস্বাদু হয়, তবে শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ পশু বেশি মর্যাদাপূর্ণ।
মাকরুহ বা অপছন্দনীয় পশু
কিছু পশু কোরবানির জন্য মাকরুহ বা অপছন্দনীয়; কারণ, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ত্রুটি রয়েছে। বারা ইবনে আজিব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘চার ধরনের পশু কোরবানির জন্য এড়ানো উচিত: স্পষ্ট খোঁড়া পশু, স্পষ্ট এক চোখ বিশিষ্ট পশু, স্পষ্ট রোগাক্রান্ত পশু এবং এমন কৃশ পশু যা কেউ পছন্দ করবে না।’ (মুয়াত্তা মালিক, হাদিস: ১,০০৪)
এ ছাড়া নিম্নলিখিত ত্রুটিযুক্ত পশুগুলো মাকরুহ:
১. যার শিংয়ের অর্ধেক বা তার বেশি কাটা বা যার শিং পুরোপুরি উপড়ে ফেলা হয়েছে।
২. যার কান সামনে বা পেছনে ক্রস করে কাটা বা লম্বালম্বি কাটা বা ছিদ্র করা, কিংবা এতটাই কাটা যে কানের নালি দৃশ্যমান।
৩. যে পশু এতটাই কৃশ যে তার হাড়ে মজ্জা নেই।
৪. যে পুরোপুরি অন্ধ, যদিও চোখ উপস্থিত।
৫. যে পশু পালের সঙ্গে না চলে, যতক্ষণ না তাকে তাড়ানো হয়।
রাসুল (সা.) একটি সম্পূর্ণ (খাসি না করা), শিংওয়ালা, কালো মুখ, চোখের চারপাশে কালো বৃত্ত এবং কালো পা বিশিষ্ট পুরুষ ভেড়া কোরবানি করেছিলেন। (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস: ১১,৩১৫)৬. যার লেজের অর্ধেক বা তার বেশি কাটা।
৭. যার জননাঙ্গ কাটা।
৮. যার দাঁত (সামনের বা পেছনের) কিছু হারিয়েছে (জন্মগতভাবে না হলে)।
৯. যার স্তনবৃন্ত কাটা (জন্মগতভাবে না হলে) বা যার দুধ বন্ধ হয়ে গেছে।
এই ত্রুটিগুলো পশুর শারীরিক অখণ্ডতা বা স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে, যা কোরবানির মানকে হ্রাস করে। তবে যদি পশু জন্মগতভাবে এই ত্রুটি নিয়ে জন্মায়, তবে তা কোরবানির জন্য গ্রহণযোগ্য।
কোরবানির পশু নির্বাচনের ক্ষেত্রে শরিয়াহর নির্দেশনা আমাদের শিক্ষা দেয় যে এটি কেবল একটি ধর্মীয় রীতি নয় বরং আল্লাহর প্রতি আনুগত্য ও সমাজের প্রতি দায়িত্বশীলতার প্রকাশ। উত্তম পশু নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পাশাপাশি দরিদ্র ও অভাবী মানুষের জন্য বেশি মাংস বিতরণ করতে পারি।
সূত্র: ইসলাম কিউএ ডটইনফো
আরও পড়ুনঈদুল আজহা ও হজ যখন প্রতিবাদের ক্ষেত্র১২ মে ২০২৫