পঞ্চগড় সদর উপজেলার কাগজিয়াপাড়া কবরস্থান থেকে এক রাতেই ৫টি কঙ্কাল চুরি হয়েছে। সোমবার (২ জুন) সকালে কবরের মাটি খোঁড়া দেখে কঙ্কাল চুরির ঘটনা প্রকাশ পায়। এর আগে, রবিবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে।
চুরিকৃত কঙ্কালগুলো হলো- তসিরুল আলম, রাইয়ান আজমি বিজয়, হামিদা বেগম, তোজো ও আব্দুস সাত্তারের।
এলাকাবাসী বলেন, সোমবার সকালে তেলিপাড়ার বাসিন্দা আব্দুল কাদের তার বাবার কবর জিয়ারত করতে এসে কবরের মাটি খোঁড়া দেখতে পান। তাৎক্ষণিক কবরস্থান কমিটি ও স্থানীয়দের বিষয়টি জানান তিনি। পরে মাটি খোঁড়া কবরের মাটি সরিয়ে সেগুলোতে কোনো মরদেহ ও কঙ্কালের চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায়নি।
আরো পড়ুন:
সাইকেল চোরকে ঝুলিয়ে মারধর, থানায় গিয়ে চাইলেন বিচার
সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে ট্রাকসহ ১৭ গরু লুট
কাগজিয়াপাড়া কবরস্থান কমিটির সহ-সভাপতি হাসিবুল করিম বলেন, ‘‘কবরস্থানটি পুরোপুরি অরক্ষিত। ধারণা করছি, গভীর রাতে দুর্বৃত্তরা কবরস্থানে প্রবেশ করে পাঁচটি কবর থেকে কঙ্কাল চুরি করে নিয়ে গেছে।’’
পঞ্চগড় সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ হিল জামান বলেন, ‘‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ঢাকা/নাঈম/রাজীব
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কবরস থ ন কবর র
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদযাত্রায় বাবা ও দুই ছেলে নিহত, স্তব্ধ পুরো গ্রাম
একসঙ্গে রাখা হয়েছে তিনটি খাটিয়া। অদূরেই পারিবারিক কবরস্থানে খোঁড়া হচ্ছে তিনটি কবর। মরদেহের অপেক্ষায় স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে পরিবেশ, স্তব্ধ গ্রামবাসীও। সড়ক দুর্ঘটনায় শেরপুরে বাবা ও দুই ছেলের মৃত্যুতে শোকে স্তব্ধ পুরো গ্রাম।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বাসাইল উপজেলার করটিয়া বাইপাসে আজ মঙ্গলবার সকালে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত হন। তাঁরা হলেন শেরপুরের চরমোচারিয়া ইউনিয়নের কামারের চর গ্রামের আমজাদ মণ্ডল (৫৫) এবং তাঁর দুই ছেলে রাহাত মণ্ডল (২৬) ও অতুল মণ্ডল (১৪)। আহত হয়েছেন আমজাদ মণ্ডলের স্ত্রী মাকসুদা বেগম (৩৫) ও ছেলে রাহাতের স্ত্রী মরিয়ম (১৮)। নিহত আমজাদ ঢাকায় ঠিকাদারি ব্যবসা করতেন।
আরও পড়ুনঈদযাত্রায় সড়কে ৩ সদস্যকে হারিয়ে পরিবারটির সামনে এখন ‘শুধুই অন্ধকার’৪ ঘণ্টা আগেনিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা জানান, আমজাদ মণ্ডল দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার মাদারটেক এলাকায় সপরিবার বসবাস করতেন। ঈদ উপলক্ষে পরিবারের সবাইকে নিয়ে সকাল ছয়টার দিকে মাইক্রোবাসযোগে শেরপুরের উদ্দেশে রওনা দেন। সকাল ৯টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বাসাইল উপজেলার করটিয়া বাইপাসে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পেছনে মাইক্রোবাসটি ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই আমজাদ মণ্ডল ও তাঁর দুই ছেলে রাহাত ও অতুল নিহত হন। আহত হন আমজাদের স্ত্রী মাকসুদা বেগম ও ছেলে রাহাতের স্ত্রী মরিয়ম আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
বিকেল সাড়ে চারটার দিকে নিহত ব্যক্তিদের বাড়িতে সরেজমিনে দেখা যায়, স্বজন ও গ্রামবাসী মরদেহের অপেক্ষায় আছেন। বাড়ির ভেতর চলছে আহাজারি। মানসিক ভারসাম্যহীন মা বুঝতে পারছেন না, ছেলে ও দুই নাতি আর ফিরে আসবেন না। ছোট ভাই ও দুই ভাতিজাকে হারিয়ে কিছুক্ষণ পরপর মূর্ছা যাচ্ছিলেন সফর উদ্দিন মণ্ডল। এ সময় তাঁদের স্বজন ও গ্রামের নারী–পুরুষ বাড়িতে ভিড় করছিলেন।
সফর উদ্দিন মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঈদ করার জন্য আমার ভাই ও তার পরিবার আসছিল। কোরবানির জন্য গরু কিনবে বলে জানিয়ে ছিল। ওরা বাড়ি আসলে গরু কিনতে হাটে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু একটা দুর্ঘনায় সব শেষ হয়ে গেছে।’
কিছুক্ষণের মধ্যে আসে মরদেহ। গ্রামে একাধিক খাটিয়া না থাকায় পাশের দুই গ্রাম থেকে খাটিয়া এনে মরদেহ রাখার ব্যবস্থা করা হয়। অদূরেই পারিবারিক কবরস্থানে খোঁড়া হচ্ছিল একে একে তিনটি কবর। কামারের চর গ্রামের বাসিন্দা মজনু মিয়া বলেন, ঈদ করতে পরিবার নিয়ে বাড়ি আসছিলেন আমজাদ মণ্ডল। কিন্তু একটি দুর্ঘটনায় সব শেষ। একসঙ্গে তিনটি কবর খোঁড়া হচ্ছে। রাতেই নিহত ব্যক্তিদের দাফন করা হবে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে নিহত আমজাদ মণ্ডলের ছোট বোন মোর্শেদা বেগম বলেন, ‘হঠাৎ পুলিশের ফোনে আসে। সেখান থেকে জানানো হয়, আমার ভাই ও তার দুই ছেলে আর নেই। প্রতিবছর আমার ভাই এসে আমাদের সঙ্গে ঈদ করত। এবার সব উলট–পালট হয়ে গেল। আল্লাহ আমাদের এই কষ্ট কেমনে দিলা। আমগর তো আর ঈদ করা অইলো না। ভাইরে ছাড়া কেমনে ঈদ পার করমু।’