বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করতে আশার বাণী আছে বাজেটে
Published: 2nd, June 2025 GMT
প্রস্তাবিত নতুন বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চট্টগ্রাম চেম্বার। সোমবার রাতে গণমাধ্যমে তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা বলেন, ‘এই বাজেটের ফলে পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য, এলএনজি এবং আমদানি করা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের শুল্ক হ্রাস করায় দ্রব্যমূল্য কমার পাশাপাশি বাজারে স্বস্তি ফিরে আসবে। সেই সঙ্গে সরকারের মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রাও অর্জিত হবে। একই সঙ্গে এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী দেশীয় শিল্পকে সুরক্ষার সর্বোচ্চ প্রতিফলন ঘটেছে এবারের বাজেটে। দেশীয় পুঁজি বাজারকে চাঙ্গা করতে এবং বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করতে আশার বাণী আছে এই বাজেটে।’
ঘাটতি বাজেট মোকাবিলায় বৈদেশিক ঋণের চেয়ে অভ্যন্তরীণ উৎসে গুরুত্ব দেওয়াকে দেশীয় সক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ মন্তব্য করে বলেন, ‘বাজেটে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে মানবসম্পদ উন্নয়ন তথা শিক্ষা খাতকে। এ খাতে মোট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৬৯ হাজার ৪শত ৭৩ কোটি টাকা, কৃষি ও পল্লী উন্নয়নে ৫৫ হাজার ৭ শত কোটি টাকা এবং জ্বালানি অবকাঠামোগত খাতে ২২ হাজার ৩শত ৭০ কোটি টাকাসহ মোট ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি হিসেবে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাজেটে স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতাদের ক্ষেত্রে টার্নওভার করের আওতামুক্ত সীমা ৩ কোটি থেকে বাড়িয়ে ৪ কোটি এবং ব্যাংকে আবগারি শুল্কের ক্ষেত্রে ১ লাখ টাকার পরিবর্তে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যাংক স্থিতির ওপর আবগারি শুল্ক অব্যাহতি প্রদান করায় সাধারণ মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখতে উৎসাহী হবে। এছাড়া বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর উপকারভোগীদের ভাতার হার বৃদ্ধির পাশাপাশি যৌক্তিক পরিমাণে উপকারভোগীর সংখ্যাও বাড়ানোর প্রস্তাব রাখা হয়েছে।’
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত শহীদ পরিবার ও আহত পরিবারের পুনর্বাসনের জন্য ৪ শত ৫ কোটি ২০ লাখ টাকা বাজেটে বরাদ্দ রাখায় ধন্যবাদ জানান চেম্বার প্রশাসক। তিনি বলেন, ‘ব্যবসা-বাণিজ্য সহজীকরণের লক্ষ্যে আগাম কর সমন্বয়, রিফান্ড আবেদন ও রেয়াত গ্রহণের সময়সীমা ৪ মাসের পরিবর্তে ৬ মাস এবং বিদ্যমান ৪৫টি সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা শিথিল করে ১২টি ক্ষেত্রে রিটার্ন দাখিলের বিষয়টিকে আরও বিনিয়োগ ও শিল্পবান্ধব হবে। বাজেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে কোনো কোনো ক্ষেত্রে শুল্ক প্রত্যাহার ও কিছু ক্ষেত্রে হ্রাস করা হয়েছে। আবার দেশীয় শিল্পকে সুরক্ষা দিতে শিল্পের কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে আগাম করের হার ৩ শতাংশ থেকে ২ শতাংশে নির্ধারণ এবং বাণিজ্যিক আমদানিকারকের ক্ষেত্রে আগাম কর ৫ শতাংশের পরিবর্তে ৭.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব জ ট ২০২৪ ২৫ প রস ত ব ত ব জ ট আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
কোহলির আইপিএল জয়ের আনন্দ ‘১০ গুণ’ বাড়িয়েছেন যে দুই কিংবদন্তি
আইপিএল ফাইনাল দেখতে ভারতে যাওয়ার ছবি উড়োজাহাজে থাকতেই পোস্ট করেছিলেন ক্রিস গেইল। এবি ডি ভিলিয়ার্স তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হ্যান্ডলে কোনো ছবি পোস্ট করেননি। চুপি চুপি চলে যান ভারতে। কাল রাতে আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে দেখা গেল দুজনকেই। ম্যাচ শেষে মাঠেও দেখা গেল। বিরাট কোহলির সঙ্গে এ দুই কিংবদন্তির ফ্রেমবন্দী ছবি দেখে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর নষ্টালজিক সমর্থকেরা বলতেই পারেন ‘হলি ট্রিনিটি!’
আরও পড়ুন১৮ বছর, ২৬৭ ম্যাচ ও ৮৬৬১ রানের বিনিময়ে পাওয়া কোহলির এই ট্রফি৩ ঘণ্টা আগেডি ভিলিয়ার্স ও গেইল বেঙ্গালুরুতে খেলাকালীন সময়ে তিনজনকে একসঙ্গে এ নামেই ডেকেছেন সমর্থকেরা। ২০১১ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত বেঙ্গালুরুতে খেলে ৮৪ ইনিংসে ৩১৬৩ রান করেন গেইল। ৫ সেঞ্চুরির সঙ্গে ফিফটি ১৯টি। গেইল অবশ্য পাঞ্জাবের হয়েও খেলেছেন। কাল রাতের ফাইনালে তিনি বেঙ্গালুরুকে সমর্থন দেওয়ার পাশাপাশি পাঞ্জাবকেও সমর্থন দেন। বেঙ্গালুরুর জার্সি পরার পাশাপাশি পাঞ্জাবি পাগড়িও পরে মাঠে গিয়েছিলেন গেইল।
ডি ভিলিয়ার্স ২০১১ থেকে ২০২১ পর্যন্ত খেলেন বেঙ্গালুরুতে। ১৫৬ ম্যাচে ৪৪৯১ রান করেন। কাল ম্যাচের শেষ দুই ওভারে বাউন্ডারি সীমানার বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন এই প্রোটিয়া কিংবদন্তি। মাঠ থেকে তাঁকে দেখে আবেগাক্রান্ত হয়ে পড়েন কোহলি। বেঙ্গালুরুর জয়ের পর মাঠে তাঁদের উদ্যাপনে যোগ দেন ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি গেইলও। মাঠেই সম্প্রচারক চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ দুজনের উপস্থিতি নিয়ে কোহলি বলেছেন, তাতে শিরোপা জয়ের আনন্দটা ‘১০ গুণ বেড়ে বিশেষ’ হয়েছে।
সম্প্রচারক চ্যানেলের ক্যামেরার সামনে তিন কিংবদন্তি মিলে দারুণ এক উদ্যাপনও করেন। বেঙ্গালুরুর দীর্ঘদিনের স্লোগান ছিল ‘এ সালা কাপ নামদে (এবার কাপটা হবে আমাদের)!’ ১৮ বছর অপেক্ষার পর শিরোপা জিতে ক্যামেরা ও মাইক্রোফোনের সামনে চিৎকার করে স্লোগানটি পাল্টে দেন তিন কিংবদন্তি, ‘এ সালা কাপ নামদু (এবার কাপ আমাদের)!’
আরও পড়ুনআইপিএলে কে কোন পুরস্কার পেলেন২ ঘণ্টা আগেডি ভিলিয়ার্সের সঙ্গে আইপিএলে দারুণ কিছু ম্যাচ জেতানো জুটি রয়েছে কোহলির। তাঁকে নিয়ে কোহলি বলেন, ‘সে ফ্র্যাঞ্চাইজির (বেঙ্গালুরু) হয়ে যা করেছে, সেটা অসাধারণ। ম্যাচের আগে বলেছি তাকে, এই ম্যাচটা আমাদের জন্য যা, তোমার জন্যও তা–ই এবং আমি চাই যখন আমরা ট্রফি উঁচিয়ে ধরব, তখন তুমি আমাদের সঙ্গে উদ্যাপন করবে। কারণ, সে আরসিবির জন্য যা করেছে, সেটা সত্যিই বিশেষ কিছু।’
প্রোটিয়া কিংবদন্তিকে নিয়ে কোহলি আরও বলেন, ‘সে সবচেয়ে বেশি ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছে এবং চার বছর হলো অবসর নিয়েছে। এই দলে তার প্রভাবটা এতেই স্পষ্ট...বেঙ্গালুরুর মানুষ এবং এই দলের কাছে সে কতখানি, সেটা আসলে ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। তাই আমি বলেছি, আমাদের সঙ্গে বিজয়মঞ্চে দাঁড়িয়ে ট্রফি উঁচিয়ে ধরাটা তার প্রাপ্য।’
শেষ দুই ওভারে সীমানার বাইরে ডি ভিলিয়ার্সকে দেখে আবেগাপ্লুত হওয়া নিয়েও কথা বলেন কোহলি। ডি ভিলিয়ার্সকে উদ্দেশ করে কিংবদন্তি বলেন, ‘শেষ দুই ওভারে সীমানার বাইরে তোমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখাটা ছিল আরও বিশেষ কিছু। (শেষ ওভারে) হফের (হ্যাজলউড) দ্বিতীয় বলটি ছক্কা না হওয়ার পর তাদের পাঁচ ছক্কার দরকার ছিল। (ডি ভিলিয়ার্সকে দেখিয়ে) আমি জানি না ইনিংসের শেষ তিন বলে কীভাবে অশ্রু আটকে রাখতে পেরেছি। কিন্তু তুমি জানো, তখন কেমন লাগে। সেও (গেইলকে দেখিয়ে) জানে কেমন লাগে।’
আরও পড়ুনদেড় যুগ পর আইপিএলজয়ী কোহলিকে ১৫ বছর পর ট্রফিজয়ী কেইনের শুভেচ্ছা ১ ঘণ্টা আগেগেইল সে মুহূর্তে জড়িয়ে ধরেন কোহলিকে। তারপর মুখে হাসি ফুটিয়ে বলেন, ‘১৮ বছর! কী সৌভাগ্যের নম্বর (কোহলির জার্সি নম্বরও ১৮)! তোমার জন্য খুশি লাগছে। আমি তোমার জন্যই। ফ্র্যাঞ্চাইজির জন্যও খুশি লাগছে।’
কোহলি এরপর বলেন, ‘এটা (আইপিএল ট্রফি) আমার কাছে খুব বিশেষ কিছু হওয়ার কারণ হলো তাদের সঙ্গে এটা ভাগ করে নিতে পারছি। কারণ, নিজের সেরা সময় আমি তাদের সঙ্গে ভাগ করেছি এবং আমি জানি (ট্রফি) জয়ের জন্য আমরা কী পরিমাণ চেষ্টা করেছি...আমরা সবাই কষ্ট (ট্রফি না জেতায়) পেয়েছি, কারণ, আমরা সবাই নিজেদের সেরা সময়টা এই ফ্র্যাঞ্চাইজিকে দিয়েছি। আমরা একদম অন্তরের অন্তস্থল থেকে আরসিবির জন্য শিরোপাটি জিততে চেয়েছিলাম। হলফ করে বলছি, এটাকে (ট্রফি জয়) এখন ১০ গুণ বেশি বিশেষ কিছু মনে হচ্ছে, কারণ, তারা আমার পাশে দাঁড়িয়ে। এ শিরোপা আমার জন্য যতটা প্রাপ্য, তাদেরও ততটাই। আমি জানি, মানুষ আবেগপ্রবণ এবং তারাও নিজেদের সর্বস্ব নিংড়ে দিয়েছে। তাই এটায় তাদেরও সমান ভাগ।’