আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ৪ থেকে ৬ জুন এবং ১২ থেকে ১৪ জুন মোট ৬ দিন মহাসড়কে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও লরি চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে পশুবাহী যানবাহন, নিত্যপ্রয়োজনীয় গৃহস্থালি ও খাদ্যদ্রব্য, পচনশীল দ্রব্য, গার্মেন্টসসামগ্রী, ওষুধ, সার ও জ্বালানি বহনকারী যানবাহন এর আওতামুক্ত থাকবে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো.

সাজ্জাত আলী স্বাক্ষরিত ঈদযাত্রা ও পশুর হাটকেন্দ্রিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিপুলসংখ্যক মানুষ ঢাকা মহানগর থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় যাত্রা করবেন। ১ কোটির বেশি মানুষ ঢাকা মহানগর ত্যাগ করেন এবং প্রায় ৩০ লাখ মানুষ ঢাকায় প্রবেশ করেন। ঘরমুখী মানুষের ঈদযাত্রা এবং কোরবানির পশুর হাটসংলগ্ন যানবাহনের চলাচল নির্বিঘ্ন করার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এমন অবস্থায় নিম্নবর্ণিত নির্দেশনা অনুসরণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে।

রুট পারমিটবিহীন বাস কোনোক্রমেই চলাচল করতে পারবে না। আন্তজেলা বাসগুলোকে টার্মিনালের ভেতরে যাত্রী উঠিয়ে সরাসরি গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই টার্মিনালের বাইরে সড়কের ওপর বাস দাঁড় করানো যাবে না। অনুমোদিত কাউন্টার ব্যতীত রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানো ও নামানো যাবে না।

ঢাকা মহানগরীতে প্রবেশ ও বের হওয়ার রাস্তাগুলোয় কোনোভাবেই যানবাহন পার্ক করা যাবে না। লক্কড়ঝক্কড়, ফিটনেসবিহীন, যান্ত্রিক ত্রুটিযুক্ত ও কালো ধোঁয়া নির্গমনকারী গাড়ি রাস্তায় নামানো যাবে না। ঢাকা-আশুলিয়া মহাসড়কের উত্তরার আব্দুল্লাহপুর থেকে কামারপাড়া হয়ে ধউর ব্রিজ পর্যন্ত সড়কটিতে ৪, ৫ ও ৬ জুন শুধু ঢাকা মহানগর থেকে বের হওয়ার জন্য (একমুখী) সব ধরনের যানবাহন চলাচল করবে। ওই রাস্তার আশুলিয়া-ধউর-কামারপাড়া-আব্দুল্লাহপুর হয়ে ঢাকায় প্রবেশ করবে—এমন যানবাহন আশুলিয়া-ধউর-পঞ্চবটি হয়ে মিরপুর বেড়িবাঁধ সড়ক দিয়ে গাবতলী ও অন্য এলাকায় প্রবেশ করবে।

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের এয়ারপোর্ট টু গাজীপুর আসা ও যাওয়ার লেন দুটিতে শুধু ঢাকা থেকে বের হওয়ার জন্য (একমুখী ডাইভারশন) সব ধরনের যানবাহন ৪, ৫ ও ৬ জুন ঢাকা থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তার দিকে চলাচল করবে। বিআরটি প্রবেশের লেন দিয়ে কোনো যানবাহন ঢাকা অভিমুখে (ইনকামিং) আসতে পারবে না। মহাসড়কের অন্যান্য লেনের গাড়ি আগের মতো স্বাভাবিকভাবে চলাচল করবে। বিআরটির ঢাকা অভিমুখী যানবাহনগুলো অন্যান্য যানবাহনের সঙ্গে নরমাল রাস্তায়, লেনে ঢাকায় আগমন করবে। ঢাকা শহরে ট্রাফিক জ্যাম কমানোর জন্য ঢাকা মেট্রো এলাকার বিআরটিসির বাসডিপোগুলোর বাস ঢাকা শহর অতিক্রম না করার ব্যবস্থা নিতে হবে।

ঈদযাত্রায় সংশ্লিষ্ট যানবাহনের চলাচল সুগম করার জন্য জরুরি প্রয়োজন ছাড়া অন্য যানবাহনগুলোকে ৪, ৫ ও ৬ জুন নিম্নবর্ণিত সড়কগুলো পরিহার করে বিকল্প সড়ক ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করা হলো। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক (বনানী টু আব্দুল্লাহপুর), ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক (যাত্রাবাড়ী টু সাইনবোর্ড), মিরপুর রোড (শ্যামলী টু গাবতলী), ঢাকা-কেরানীগঞ্জ সড়ক (ফুলবাড়িয়া টু বাবুবাজার ব্রিজ), ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক (যাত্রাবাড়ী টু বুড়িগঙ্গা ব্রিজ), মোহাম্মদপুর বছিলা ক্রসিং থেকে বছিলা ব্রিজ সড়ক, আব্দুল্লাহপুর টু ধউর ব্রিজ সড়ক।

পশুর হাটের ইজারায় উল্লিখিত সীমানা ও স্কেচ ম্যাপের বাইরে সড়কের ওপর কোনোভাবেই কোরবানির পশু কেনাবেচা এবং লোড-আনলোড করা যাবে না।

কোরবানির পশু পরিবহনকারী যানবাহন আনলোড করার জন্য এবং বিক্রি করা পশু লোড করার জন্য হাটের ভেতর পৃথক পৃথক জায়গা খালি রাখতে হবে। যদি হাটে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকে, তবে নিকটবর্তী কোনো জায়গায় পৃথক পৃথক আনলোড এবং বিক্রীত পশু লোড করার স্থান নির্ধারণ নিশ্চিত করতে হবে।

সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষায় কোরবানির পশু পরিবহনের ক্ষেত্রে কোনো হাটে পশু নেওয়া হবে—এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট হাটের নামসংবলিত ব্যানার ট্রাকের সম্মুখে টাঙাতে হবে। হাইওয়ে বা গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশে কোনো পশুর হাট ইজারা প্রদান না করা।

যদি কোনো পশুর হাট ঢাকা মহানগরের ফিডার রোড, সরু রোডের পাশে ইজারা দেওয়া হয়, তবে অবশ্যই সড়ক এবং হাটের মাঝে ছয় ফুট উঁচু প্রাচীর স্থাপন করতে হবে। সুবিধাজনক জায়গায় ‘এন্ট্রি’ ও পৃথক ‘এক্সিট’ রাখতে হবে।

পশুর হাটসংলগ্ন সড়কগুলোয় ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত পুলিশকে সহযোগিতার জন্য ইজারাদারেরা পর্যাপ্তসংখ্যক কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করবেন।

পশুর হাটে গমনাগমনকারী রাস্তায় কোনোক্রমেই ক্রেতাদের গাড়ি, পশুবাহী ট্রাক ও পিকআপ পার্ক করা যাবে না। কেউ পার্ক করলে তাৎক্ষণিকভাবে গাড়ি জব্দ করে ডাম্পিংয়ে পাঠানো হবে।

পশুর হাটের কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা না করা হলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সড়কের ওপরে যেখানে–সেখানে কোরবানির পশু জবাই না করে যথাসম্ভব নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি করতে হবে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের আওতাধীন এলাকায় যানবাহনের শৃঙ্খলা রক্ষা ও যানজট এড়ানোর জন্য উল্লিখিত নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট যানবাহনের চালক, পশুর হাট–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও নগরবাসীকে প্রতিপালন করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সবার সহযোগিতা কামনা করছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র র জন য ব যবস থ প রব শ ল ড কর সড়ক র ব আরট

এছাড়াও পড়ুন:

শুধু ঈদের ছুটি নয়, শ্রমিকদের বেতন-বোনাসও লাগবে

৭ জুন পবিত্র ঈদুল আজহা। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে সরকারি ছুটি শুরু হবে। সে ক্ষেত্রে কর্মদিবস আছে আর মাত্র দুই দিন, মঙ্গল ও বুধবার। এখনো অর্ধেকের বেশি কারখানায় শ্রমিকেরা বেতন-বোনাস পাননি। প্রতিবছর দুই ঈদের আগে শিল্প-অধ্যুষিত এলাকাগুলোয় শ্রম অসন্তোষ দেখা দেয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে এসব এলাকার কারখানাগুলোকে নিবিড় পর্যালোচনায় রেখেছে শিল্প পুলিশ। এই পর্যবেক্ষণ শ্রমিক অসন্তোষ ঠেকাতে, শ্রমিকদের ন্যায্য বেতন ও বোনাস পাওয়া নিশ্চিত করতে নয়।

১ জুন শিল্প পুলিশের পক্ষ থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মোট ৯ হাজারে ৬৮৩ কারখানার মধ্যে গত মে মাসের বেতন পরিশোধ করেছে মাত্রা ৮৪৯টি। বকেয়া আছে ৮ হাজার ৮৩৪টির। বেতন পরিশোধের হার ৮ দশমিক ৭৭। অপরিশোধের হার ৯১ দশমিক ২৩। অন্যদিকে বোনাস পরিশোধ করেছে ৯ হাজার ৬৮৩টি কারখানার মধ্যে ৪ হাজার ২৪২টি। পরিশোধের হার ৪৩ দশমিক ৮২। অপরিশোধের হার ৫৬ দশমিক ১৯।

বণিক বার্তার প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের আট শিল্প এলাকায় ৩১ মে বিকেল ৪টা পর্যন্ত প্রায় ৬৭ শতাংশ কারখানায় বোনাস পরিশোধ হয়নি। দেশে শিল্প-অধ্যুষিত আট এলাকা—আশুলিয়া, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, খুলনা, কুমিল্লা ও সিলেটে মোট কারখানার সংখ্যা ৯ হাজার ৬৮৩।

শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক গাজী জসীম উদ্দিনের দাবি, তাঁরা বড় দুটি সমস্যা নিষ্পত্তি করতে পেরেছেন। টিএনজেড গ্রুপ ও মাহমুদ ফ্যাশনের শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করেছেন। ভালো খবর। কিন্তু কেবল এই দুই শিল্প গ্রুপেই তো সমস্যা নেই। আরও অনেক শিল্প গ্রুপে সমস্যা আছে। কারখানা বন্ধ থাকায় শ্রমিকেরা বেকার হয়ে পড়েছেন। গত ১০ মাসে নতুন কারখানায় যত শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে, তার চেয়ে বেশি শ্রমিক বেকার হয়েছেন।

শিল্প পুলিশ জানিয়েছে, কালিয়াকৈর থানাধীন সূত্রাপুর এলাকায় জিএমএস টেক্সটাইল লিমিটেড ফ্যাক্টরির শ্রমিকদের সঙ্গে শিল্প পুলিশ আলোচনা করে সমস্যা নিরসনের চেষ্টা করলে শ্রমিকেরা পুলিশের ওপর আক্রমণ করেন। ইটপাটকেল ও লাঠিসোঁটা নিক্ষেপ করতে থাকলে শিল্প পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। শ্রমিকেরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। সমস্যা কেবল কালিয়াকৈরে নয়, আরও অনেক স্থানে শ্রমিকেরা আন্দোলন করছেন বেতন-বোনাসের দাবিতে।

অনেক মালিক ঈদের আগে শ্রমিকদের বোনাস দিলেও মাসের পুরো বেতন দেন না, অর্ধেক দেন। তাঁরা মনে করেন, পুরো বেতন দিলে শ্রমিকেরা আর দ্রুত কাজে ফিরে আসবেন না। তখন কারখানা চালানো কঠিন হয়ে পড়বে। দু-একজন শ্রমিক এই কাজ করতে পারেন, কিন্তু তাই বলে গণহারে তাঁদের বেতন আটকে রাখার যুক্তি নেই। এটা তো অগ্রিম দেওয়া হচ্ছে না। পুরো মাস কাজ করার পর তাঁর যে প্রাপ্য, সেটা থেকে কেন বঞ্চিত করা হবে?

২৮ মে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদ (টিসিসি) ও আরএমজি-বিষয়ক ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদের (আরএমজি-বিষয়ক টিসিসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) আওতাধীন কারখানা বা শিল্পপ্রতিষ্ঠান এবং চামড়া প্রক্রিয়াকরণ ট্যানারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীদের ঈদে ছুটির বিষয়ে আলোচনা হয়।

সভায় শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ও বোনাস ৩১ মের মধ্যে এবং মে মাসের বেতন ৩ জুনের মধ্যে পরিশোধ করার কথা বলা হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যেসব কারখানা, প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা ও বোনাস পরিশোধ করতে ব্যর্থ হবে, সেসব কারখানা বা প্রতিষ্ঠানের মালিক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণায়ের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়।

১৯ মে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ঈদুল আজহা উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত কমিটির সভা শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছিলেন, ৩ জুনের মধ্যে পোশাক কারখানার কর্মীদের মে মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস দিতে হবে। তবে শ্রমিকেরা অযৌক্তিক কোনো দাবি নিয়ে রাস্তায় নামলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যবস্থা নেবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার জানা উচিত যে শ্রমিকেরা সাধারণত অযৌক্তিক কোনো দাবি নিয়ে মাঠে নামেন না। তাঁরা মাঠে নামেন বকেয়া পাওনার দাবিতে। মালিকেরা যখন বেআইনিভাবে তাঁদের চাকরি খেয়ে দেন, তখন।

এর আগে ২১ মে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে আয়োজিত প্রস্তুতিমূলক সভায় শ্রম উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন বলেছিলেন, ‘ঈদ সামনে রেখে শ্রমিকের পাওনা ২৮ তারিখের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। সেটি না করলে যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা আছে, তাঁরা গ্রেপ্তার হবেন। যেসব মালিকের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি হয়েছে, তাঁরা বিদেশে থাকলে রেড অ্যালার্ট জারি করতে বলেছি। হয় পাওনা শোধ করতে হবে, না হলে জেলে যেতে হবে। বেতন পরিশোধ না করলে দেশের বাইরে তো দূরের কথা, ঢাকার বাইরে যেতে পারবেন না মালিকেরা।’

শ্রম উপদেষ্টার এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে এক ব্যবসায়ী নেতা বলেছেন, ‘সরকার থেকে ধমক দেওয়া হচ্ছে, নির্ধারিত সময়ে বেতন-ভাতা না দিলে মালিকদের জেলে দেবে। অথচ তাঁরা গ্যাস দেবেন না, ব্যাংকের সুদহার বাড়াবেন। আবার আমাকে গ্যাসের বিল দিতে হবে, ব্যাংকের ঋণ দিতে হবে। কোথা থেকে দেব।...সরকার যদি প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাখতে না পারে, তাহলে শিল্পমালিকেরা দায়ভার কেন নেবেন।’

শ্রম উপদেষ্টার হুঁশিয়ারির পরও অনেক কারখানার মালিক শ্রমিকদের বেতন ও বোনাস দেননি। তাঁরা হয়তো নিজেদের উপদেষ্টা বা সরকারের চেয়েও বেশি ক্ষমতাবান মনে করেন।

অনেক মালিক ঈদের আগে শ্রমিকদের বোনাস দিলেও মাসের পুরো বেতন দেন না, অর্ধেক দেন। তাঁরা মনে করেন, পুরো বেতন দিলে শ্রমিকেরা আর দ্রুত কাজে ফিরে আসবেন না। তখন কারখানা চালানো কঠিন হয়ে পড়বে। দু-একজন শ্রমিক এই কাজ করতে পারেন, কিন্তু তাই বলে গণহারে তাঁদের বেতন আটকে রাখার যুক্তি নেই। এটা তো অগ্রিম দেওয়া হচ্ছে না। পুরো মাস কাজ করার পর তাঁর যে প্রাপ্য, সেটা থেকে কেন বঞ্চিত করা হবে?

শিল্প বিকাশের পেছনে যেমন মালিকের পুঁজি থাকে, তেমনি থাকে শ্রমিকের শ্রম। শ্রমিককে বাদ দিয়ে শিল্পকারখানা চলবে না। যেসব কারখানার মালিক মাসের পর মাস শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করছেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে। কেবল শিল্পখাত নয়, আরও অনেক খাতের কর্মীরা ঈদের আগে বেতন বোনাস থেকে বঞ্চিত থাকেন।

সরকার এবার ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১০ দিন ছুটি ঘোষণা করেছে। আশা করা যায়, এতে মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে বাড়ি যেতে পারবে। কিন্তু শ্রমিকেরা যদি ঈদের আগে তাঁদের বেতন ও বোনাস-ই না পান, তাঁরা বাড়ি যাবেন কী করে?

এ বিষয়ে এক শ্রমিক নেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, এখনো দুদিন সময় আছে। আমরা আশা করি,  ছুটির আগে যাতে সব শ্রমিক যাতে মে মাসের বেতন ও ঈদের বোনাস পান, সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। তারা মালিকদের বাধ্য করবে। কেননা, শ্রমিকদের কেবল ছুটি হলেই চলবে না, ‘তাঁদের বেতন-বোনাসও লাগব’।

সোহরাব হাসান প্রথম আলোর যুগ্মসম্পাদক ও কবি

(মতামত লেখকের নিজস্ব)

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শেষ কর্মদিবসেও সচিবালয়ে কর্মচাঞ্চল্য 
  • সোহেল আলমের ‘বড্ড ভালোবাসি’,মডেল হয়েছেন শ্যামল-চমক
  • ঈদের দিন বন্ধ থাকবে মেট্রোরেল
  • ঈদের ছুটিতে সিএনজি-ফিলিং স্টেশন সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে
  • ঈদের দিন কম খরচে অন্দর সাজাতে চান?
  • বিআরটিসির ‌‘ঈদ স্পেশাল সার্ভিসের’ উদ্বোধন আজ
  • বিআরটিসির ‘ঈদ স্পেশাল সার্ভিস’ শুরু
  • বরিশালে ঈদ উপহার পেলেন সংবাদপত্র হকার্সরা
  • শুধু ঈদের ছুটি নয়, শ্রমিকদের বেতন-বোনাসও লাগবে