ট্রাম্পের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা, যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি পণ্যে শুল্কছাড়ের উদ্যোগ
Published: 3rd, June 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক নিয়ে সমঝোতার অংশ হিসেবে বিভিন্ন আমদানি পণ্যে করছাড়ের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সেই আলোকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানির ক্ষেত্রে কিছু পণ্যে আমদানি ও সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং কিছু পণ্যে আমদানি ও সম্পূরক শুল্ক কমানো হয়েছে।
গতকাল সোমবার বিকেলে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণায় এ তথ্য জানান অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমদানি পণ্যের শুল্ক-কর পর্যায়ক্রমে কমানো এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সংলাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ১১০টি পণ্যের আমদানি শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার ও ৬৫টি পণ্যের আমদানি শুল্ক কমানো হবে। পাশাপাশি ৯টি পণ্যের সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার ও ৪৪২টি পণ্যের সম্পূরক শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এতে জনসাধারণের করের ভার কিছুটা লাঘব হবে এবং পণ্য রপ্তানিতে রপ্তানিবিরোধী পক্ষপাত কমবে। এর অর্থ হলো, এমন কোনো নীতি যা রপ্তানির তুলনায় আমদানিকে বেশি সুবিধা দেয় বা রপ্তানিকে নিরুৎসাহিত করে। ফলে দেশীয় উৎপাদকেরা রপ্তানিতে আগ্রহ হারাতে পারেন।
গত এপ্রিল মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের পণ্যে নতুন করে শুল্ক আরোপ করেন। ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ৩৭ শতাংশ করা হয়। এর কয়েক দিনের মাথায় বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের পণ্যে আরোপিত পাল্টা শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেন ট্রাম্প। তবে এ সময় পাল্টা শুল্ক ন্যূনতম ১০ শতাংশ কার্যকর রাখা হয়।
এই ৯০ দিন সময়ের মধ্যে বিভিন্ন দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক নিয়ে সমঝোতার আলোচনা করছে। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের বাজেটে বেশ কিছু পণ্যের শুল্ক প্রত্যাহার ও কমানোর ঘোষণা দেওয়া হলো।
বাজেট বক্তৃতায় ট্যারিফ ও ন্যূনতম মূল্য যৌক্তিকীকরণ নিয়েও কথা বলেন অর্থ উপদেষ্টা। সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, শুল্ক যৌক্তিকীকরণের অন্যতম শর্ত হলো, বর্তমানে বলবৎ ন্যূনতম ও ট্যারিফ মূল্য পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহার করা। এ লক্ষ্যে বিদ্যমান সব শুল্ক মূল্য প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়েছে।
সালেহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, একই সঙ্গে ৮৪টি পণ্যের ন্যূনতম মূল্য প্রত্যাহার এবং ২৩টি পণ্যের ন্যূনতম মূল্য বাড়িয়ে শুল্কমূল্য যৌক্তিক করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পর বিদ্যমান ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি সম্পূর্ণভাবে বাতিলের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ল হউদ দ ন আহম দ য ক তর ষ ট র র ন য নতম ম ল য র প রস ত আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ব্লগার অভিজিৎ হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ফারাবীর জামিন
ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত শফিউর রহমান ফারাবী অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেয়েছেন। বিচারপতি মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ জামিন দেন।
বিচারিক আদালতের দেওয়া দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে ২০২১ সালে হাইকোর্টে আপিল করেন ফারাবী। ২০২২ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। বিচারাধীন আপিলে জামিন চেয়ে আবেদন করেন ফারাবী, যা আজ আদালতের কার্যতালিকায় ১৭৯ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
আদালতে ফারাবীর পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও আইনজীবী মুহাম্মদ হুজ্জাতুল ইসলাম খান শুনানিতে ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. এমরান খান।
পরে আইনজীবী মুহাম্মদ হুজ্জাতুল ইসলাম খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০১৫ সালের ৩ মার্চ থেকে কারাগারে আছেন ফারাবী। ফারাবী ১৬৪ ধারায় কোনো স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। মামলায় চারজন আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁদের কেউই ফারাবীর নাম উল্লেখ করেননি। তদন্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কোনো সাক্ষীর বক্তব্যেও তাঁর নাম আসেনি। এসব যুক্তিতে ফারাবীর জামিন চাওয়া হয়। বিচারাধীন আপিলে ফারাবীকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।’
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে গ্রন্থমেলা প্রাঙ্গণ থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় কুপিয়ে হত্যা করা হয় অভিজিৎকে। হামলায় অভিজিতের স্ত্রী রাফিদা আহমেদও গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় অভিজিতের বাবা অধ্যাপক অজয় রায় বাদী হয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত করে ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ২০১৯ সালের ৬ আগস্ট ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এই মামলায় ২৮ জন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয়।
এই মামলায় ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান রায় দেন। রায়ে পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং এক আসামিকে (শফিউর রহমান ফারাবী) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরই হাইকোর্টে আপিল করেন ফারাবী।