সীমান্তের শূন্যরেখায় শেষবার মায়ের মুখ দেখলেন দুই মেয়ে
Published: 3rd, June 2025 GMT
সীমান্তের ওপারে ভারতে মায়ের মৃত্যু হয়েছে। শেষবারের মতো প্রিয় মুখখানি দেখতে সেখানে ছুটে যেতে চান এপারে বসবাসকারী দুই মেয়ে। কিন্তু মাঝখানে বাধা হয়ে দাঁড়ায় দুই দেশের সীমান্ত, যা পাসপোর্ট–ভিসা ছাড়া পাড়ি দেওয়া যায় না।
তবে শেষ পর্যন্ত মায়ের লাশের কাছে পৌঁছাতে দুই মেয়ের ভিসা–পাসপোর্টের দরকার পড়েনি। দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মানবিক উদ্যোগে সীমান্তের শূন্যরেখায় শেষবারের মতো মায়ের মুখ দেখার সুযোগ মেলে তাঁদের।
আজ মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে। উপজেলার জগন্নাথপুর সীমান্তচৌকির বিপরীতে ভারতের নদীয়া জেলার চাপড়া থানার গোংরা এলাকায় লোজিনা বেগমের (৮০) লাশ দেখার জন্য এই সুযোগ করে দেওয়া হয়। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) এমন উদ্যোগে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
আজ দুপুরে বিজিবির চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়নের (৬ বিজিবি) পরিচালক, অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো.
বিজিবি আরও জানায়, ভারতীয় ভূখণ্ডে মৃত্যুবরণকারী মাকে শেষবারের মতো দেখতে দুই মেয়েসহ নিকটাত্মীয়রা বিজিবির জগন্নাথপুর সীমান্তচৌকির কমান্ডার নায়েক সুবেদার মো. আবুল হাসানকে অনুরোধ করেন। এমন অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বিজিবি ও বিএসএফের সমন্বয়ে মানবতামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সীমান্তের প্রধান খুঁটি ৯৬/৮–এসের কাছে শূন্যরেখায় আজ সকাল ৯টা ১০ মিনিট থেকে ৯টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত সৌহার্দ্য ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে লাশ দেখার সুযোগ করে দেওয়া হয়। মারা যাওয়া নারীর দুই মেয়েসহ দুই দেশের নাগরিক ও নিকটাত্মীয়দের উপস্থিতিতে সেখানে বেদনাবিধুর পরিবেশ তৈরি হয়।
বিজিবি–বিএসএফের পাহারায় সীমান্তের শূন্যরেখায় মায়ের লাশ দেখার সুযোগ পান দুই মেয়ে। আজ মঙ্গলবার সকালে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার জগন্নাথপুর সীমান্তেউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে। এরপর তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে।
ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভারত থেকে নিজের দেশে ফিরে যাননি মাসুদ। তিনি অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কাটাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। সম্প্রতি তার বেশ কিছু কর্মকান্ডে সন্দেহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই মাসুদকে ইসলামী উগ্রপন্থী বলে দাবি করে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। যেহেতু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই পুলিশ তাকে একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
বিষয়টি সামনে আসার পরই যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পক্ষে কিছুই জানানো হয়নি।
অন্যদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত বাংলাদেশের দিনাজপুর সীমান্ত ও ভোমরা ঘোজাডাঙা সীমান্তে এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরো ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিক।
পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এক বাংলাদেশি নাগরিককে। আটককৃতে ওই ব্যক্তির নাম পঞ্চানন পাল। তিনি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গা থানার বাসিন্দা। ভারতে তিনি পরিচয় বদল করে রূপায়ণ পাল নামে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াও ভারতের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও এমনকি ভারতীয় পাসপোর্ট পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে।
একইদিনে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ঘোজাডাঙ্গা ভোমরা সীমান্তের কাছে সরুপনগর এলাকার তারালি সীমান্ত থেকে বিএসএফের ১৪৩নম্বর ব্যাটালিয়নের হাতে আটক হয়েছেন আরো বাংলাদেশি নাগরিক।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে আটকের পর তাদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু, তিনজন পুরুষ ও চারজন নারী। এর সবাই বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এবং খুলনার বাগেরহাটের বাসিন্দা।
সুচরিতা/শাহেদ