পাবনার ঈশ্বরদী ইপিজেডে ডায়রিয়া পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। রোববার রাতে একজনের মৃত্যুর পর গতকাল মঙ্গলবার আরও এক শ্রমিক মারা গেছেন। ঈশ্বরদী ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক এ বি এম শহীদুল ইসলাম দুই শ্রমিকের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 
মঙ্গলবার ডায়রিয়ায় মৃত্যু হওয়া শ্রমিকের নাম মাহফুজা খাতুন। তিনি ঈশ্বরদীর সাগর হোসেনের স্ত্রী ও ইপিজেডের নাকানো ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির শ্রমিক। এর আগে রোববার গভীর রাতে কণা খাতুন নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। তিনি ইপিজেডের আইএইচএম কোম্পানির শ্রমিক ও উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের তিলকপুর গ্রামের খমিন ইসলামের স্ত্রী।  
এদিকে ঈশ্বরদী ইপিজেডে ডায়রিয়ায় শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি সোমবার বিকেল থেকে ঈশ্বরদীতে তদন্তের প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে। ছয় সদস্যের এ কমিটিতে টিম লিডার করা হয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) চিকিৎসক এ এইচ এম মোস্তফা কামালকে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন– টেকনিক্যাল অফিসার শরিফ উদ্দিন হাসনাত, চাঁদপুর উত্তর মতলব ষাটনল ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ফাহমিদা ফাইজা, খাগড়াছড়ি চেঙ্গির সহকারী সার্জন রাজেশ দেব, আইইডিসিআরের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট সোহেল রানা এবং ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট সজিবুল ইসলাম।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৬০০ ছাড়িয়েছে। অধিকাংশ রোগীই ঈশ্বরদী ইপিজেডের নাকানো ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি, আইএমবিডি কোম্পানি, ভিনটেজ ডেনিম স্টুডিও লিমিটেড (অ্যাবা) ও রেনেসা বারিন্দ লিমিটেডে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারী। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও অন্যান্য বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ৩৭৫ জন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.

মো. আলী এহসান জানান, ডায়রিয়ায় 
আক্রান্ত অনেক নতুন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছেন। মঙ্গলবার প্রচুর রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। 
তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করে ঈশ্বরদী ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক এ বি এম শহীদুল ইসলাম জানান, দূষিত পানি পান করার কারণেই গণহারে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ জন্য ইপিজেডের সাপ্লাই পানির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।

জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’

জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ