ভারতীয় প্রিমিয়ার লীগ (আইপিএল) জয়োৎসব পরিণত হয়েছে বিষাদে। বুধবার বেঙ্গালুরুর এম চিন্নস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে পদদলিত হয়ে অন্তত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে ছয় বছরের শিশুও রয়েছে। এছাড়া আহত অন্তত ২৫ জন। তাদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের বোরিং হাসপাতাল ও বৈদেহী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর (আরসিবি) ট্রফি জয় উপলক্ষে কর্ণাটক স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন যে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল তাতে লাখো লোক উপস্থিত হলে বিশৃঙ্খলা বেধে যায়।

কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া বলেন, “অত্যধিক ভিড় ছিল। জনতা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল। আমরা জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করার সময়ই পাইনি।” 

উপমুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমার বলেন, “আমরা পাঁচ হাজার পুলিশকর্মীর ব্যবস্থা করেছিলাম। কিন্তু বাচ্চা বাচ্চা উৎসাহী ছেলেমেয়ের উপর লাঠি চালানোর নির্দেশ দিতে পারিনি।”

বিকেলে হিন্দুস্থান অ্যারোনটিক্স লিমিটেডের বিমানবন্দরে এসে নামে টিম আরসিবি। সেখানে খেলোয়াড়দের স্বাগত জানাতে যান শিবকুমার। উচ্ছ্বসিত জনতাকে নিয়ন্ত্রণের জন্য মুখ্যমন্ত্রী, উপমুখ্যমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র সচিব ও পুলিশ কর্তারা নিরাপত্তা সংক্রান্ত জরুরি বৈঠকও সারেন। কিন্তু সকাল থেকে গোটা শহরজুড়ে ছিল তুমুল উন্মাদনা।

পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় জুড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক কাদা ছোড়াছুড়িও। কর্নাটকের কংগ্রেসি সরকারকে এই ঘটনার জন্য দায়ী করেছে বিরোধী দল বিজেপি। 

দলের পক্ষে অমিত মালব্য এক্স- লিখেছেন, “এই ট্র্যাজেডি অপরাধমূলক গাফিলতি। কংগ্রেস সরকার দু’হাতে রক্ত মেখেছে। শুধুমাত্র গাফিলতির কারণেই এতগুলো মানুষ জীবন দিয়েছেন। এটা কোনো দুর্ঘটনাই নয়, সরকারের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা।”
 

সুচরিতা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম খ যমন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী সরাসরি ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পক্ষে

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে আয়োজিত গণভোটে শিক্ষার্থীরা সরাসরি নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছেন। চার দিনব্যাপী এ গণভোটে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ৮৬ শতাংশ ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। আর বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন মাত্র ১১ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল এ গণভোটের আয়োজন করে।

গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল এ ফলাফল ঘোষণা করে। গণভোটে অংশ নিয়েছেন ১ হাজার ১৪৫ শিক্ষার্থী, যার মধ্যে ২৬টি ভোট (২ দশমিক ৫ শতাংশ) বাতিল হয়।

ফলাফল ঘোষণার জন্য আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র কাউন্সিলের সংগঠক ভূমিকা সরকার ও সঞ্চালনায় ছিলেন মৃত্যুঞ্জয় রায়। প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছায়েদুল হক (নিশান)। আরও বক্তব্য দেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সংগঠক আবদুর রহমান, সুদীপ্ত হালদার, শওকাত ওসমান স্বাক্ষর প্রমুখ।

ছায়েদুল হক বলেন, ‘এই গণরায় শুধু বরিশাল নয়, দেশের সব গণতন্ত্রকামী শিক্ষার্থীর আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। আমরা প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানাই, অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন সংস্কার করে দ্রুত ছাত্র সংসদ ও হল সংসদের নির্বাচনের রূপরেখা দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের এই গণরায়কে কোনোভাবেই উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে গণতন্ত্রের চর্চা, বিকাশ ও সুস্থ-সবল নেতৃত্বের বিকাশের আঁতুড়ঘর।’

ছায়েদুল হক আরও বলেন, ছাত্র সংসদ না থাকলে ক্যাম্পাসে দুর্বৃত্তায়ন ও গোপন রাজনৈতিক প্রভাব বাড়ে। গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব ছাড়া শিক্ষার্থীদের মতামত কোনো সিদ্ধান্তে প্রতিফলিত হয় না। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক সমস্যা। এসব সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থীদের ভূমিকাকে অগ্রাহ্য করলে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন অসম্ভব।

সভাপতির বক্তব্যে ভূমিকা সরকার বলেন, ‘এই গণভোট বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে একটি স্পষ্ট বার্তা, এখনই সময় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পথ সুগম করার। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ১৪ বছর পার হয়েছে। কিন্তু এখনো এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামো–সংকট প্রকট। শিক্ষার্থীদের পাঠদানের কক্ষ নেই, আবাসন নেই, পরিবহনসংকটও প্রকট। বিশ্ববিদ্যালয়ের গণগ্রন্থাগারে পর্যাপ্ত বই নেই, গবেষণা নেই। তাই পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া গণতন্ত্র বিকাশের জন্য ছাত্রদের সুস্থ রাজনীতির বিকাশের জন্য ছাত্র সংসদের বিকল্প নেই। তাই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানাতে চাই, অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংস্কার করে এখানে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হোক।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ