কসমেটিকস আমদানিতে ট্যারিফ ভ্যালু কমানোর দাবি
Published: 4th, June 2025 GMT
প্রসাধনী সামগ্রী আমদানিতে ট্যারিফ ভ্যালু কমানোর দাবি জানিয়েছে এ খাতের সংগঠন বাংলাদেশ কসমেটিকস অ্যান্ড টয়লেট্রিজ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন। আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পৃথিবীর সব দেশের তুলনায় বাংলাদেশে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক সবচেয়ে বেশি। অস্বাভাবিক শুল্কায়ন মূল্যের কারণে ভোক্তারা কম মূল্যে পণ্য কিনতে পারছেন না। গত তিন বছর ধরেই বিভিন্ন পণ্যে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক, আমদানি শুল্ক ও ভ্যাট বাড়ানোর কারণে আমদানিকারকরা ব্যবসায়িক হুমকির মুখে রয়েছেন।
এরমধ্যে প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে কিছু পণ্যের ওপর অস্বাভাবিক ট্যারিফ ভ্যালু আরোপ করা হয়েছে। বিশেষ করে মেকআপ, লিপস্টিক, পাউডার, ফেসওয়াশসহ কয়েকটি প্রসাধনী-সামগ্রী আমদানি পর্যায়ে ট্যারিফ ভ্যালু দ্বিগুণ বা দ্বিগুণেরও বেশি বাড়ানো হয়েছে। এটি অস্বাভাবিক ও অসঙ্গতিপূর্ণ। এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রা পাচার হবে, আমদানি ও রাজস্ব কমবে, চোরাচালান ও নকল পণ্যের সরবরাহ বেড়ে যাবে। একই সঙ্গে এ খাতের আমদানিকারক ও শ্রমিকরা বেকার হবেন।
শুল্কায়ন মূল্য কমানোর দাবি জানিয়ে সংগঠনটি বলেছে, শুল্কায়ন মূল্য কমালে লাগেজ পার্টি ও চোরাচালানীর দৌরাত্ম কমে আসবে। তাতে আমদানি ও সরকারের রাজস্ব বাড়বে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অবাস্তব: আইবিএফবি
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পরিকল্পনার অভাব আছে। লক্ষ্য নির্ধারিত; কিন্তু বাস্তবধর্মী পদক্ষেপ নেই। বাজেটে রাজস্ব আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে, সেটি অবাস্তব। কার্যকর কর সংস্কার ছাড়া ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয়।
এ ছাড়া কালোটাকা সাদা করার যে সুযোগ রাখা হয়েছে, তাতে সৎ করদাতাদের প্রতি অন্যায় করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ (আইবিএফবি)। সংগঠনটি বলেছে, এই প্রস্তাব আর্থিক শৃঙ্খলা ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
গতকাল মঙ্গলবার বাজেট প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেছে আইবিএফবি। গতকাল সোমবার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
প্রস্তাবিত বাজেটে কাঠামোগত সংস্কারের অভাব আছে বলে উল্লেখ করে আইবিএফবি বলেছে, বাজেট প্রস্তাবে কর প্রশাসন, ঋণ টেকসই করা ও সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনার মৌলিক সংস্কারের প্রস্তাব নেই। ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ, সুদহারজনিত সমস্যা ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার বিষয়েও দিকনির্দেশনা নেই।
আইবিএফবি বলেছে, প্রস্তাবিত বাজেটে বেসরকারি খাত উপেক্ষিত। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা, রপ্তানিকারক ও স্টার্টআপদের জন্য কার্যকর প্রণোদনা নেই। গবেষণা, কারিগরি প্রশিক্ষণ ও ডিজিটাল রূপান্তরে উল্লেখযোগ্য বরাদ্দ নেই। সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমও অপ্রতুল।
বাজেটে বিবেচনার জন্য বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছে আইবিএফবি। সংগঠনটি বলেছে, রাজস্ব আদায়ে ডিজিটাল পদ্ধতি ও ন্যায্য করনীতি নিশ্চিত করতে হবে। বেসরকারি খাতকে উদ্দীপ্ত করতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ ঋণ, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা প্রয়োজন।
ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ কমানো, সুশাসন নিশ্চিত করা ও কম সুদে ঋণ সহজলভ্য করার পরামর্শ দিয়েছে আইবিএফবি। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির স্বচ্ছতা বাড়ানো, পুনরাবৃত্তি রোধ ও প্রকৃত দরিদ্রদের কাছে সহায়তা পৌঁছানোর দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। এ ছাড়া সরকারি ক্রয়ে স্বচ্ছতা, ভর্তুকির যৌক্তিকীকরণ ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহি নিশ্চিত করার কথা বলেছে তারা।
প্রস্তাবিত বাজেটের কয়েকটি বিষয় ইতিবাচক উল্লেখ করে এর প্রশংসা করেছে আইবিএফবি। সংগঠনটি বলেছে, সরকার ২০২৬-২৭ অর্থবছরে করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধির কথা জানিয়েছে। কম আয়ের মানুষের জন্য এটি স্বস্তির খবর। পাশাপাশি জুলাই যোদ্ধাদের জন্য করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ ২৫ হাজার করাকে সম্মানজনক পদক্ষেপ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে সংগঠনটি।
প্রস্তাবিত বাজেটে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য এক হাজার কোটি টাকার তহবিল করা হয়েছে। এই তহবিল নারীর অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি উৎসাহিত করবে বলে জানায় আইবিএফবি। এ ছাড়া কাঁচামাল ও ওষুধে শুল্ক কমানো, পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ হিসেবে ই-বাইকে প্রণোদনা দেওয়া, ই-কমার্স খাতকে কর ও নিয়ন্ত্রণের আওতায় আনা ও সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে (পিপিপি) পাঁচ হাজার ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া ইতিবাচক হিসেবে আখ্যা দিয়েছে সংগঠনটি।