ইউক্রেনকে এক লাখ ড্রোন দিচ্ছে যুক্তরাজ্য
Published: 4th, June 2025 GMT
সামরিক সহায়তার অংশ হিসেবে ইউক্রেনকে ১ লাখ ড্রোন দিচ্ছে যুক্তরাজ্য। দেশটির সরকার জানায়, ২০২৬ সালের এপ্রিলের মধ্যে ইউক্রেনকে এসব ড্রোন সরবরাহ করা হবে, যা গত বছর দেশটিকে দেওয়া ড্রোনের সংখ্যার ১০ গুণ। বুধবার ব্রাসেলসে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী জন হ্যালির আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দেওয়ার কথা রয়েছে।
রয়টার্স জানায়, জন হ্যালি বুধবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ৫০ জাতি ইউক্রেন প্রতিরক্ষা যোগাযোগ গ্রুপের বৈঠকে ড্রোন দেওয়ার ঘোষণা দিতে পারেন। ৩৫০ মিলিয়ন পাউন্ডের এ ড্রোন প্যাকেজটি ইউক্রেনের জন্য বৃহত্তর সাড়ে ৪ বিলিয়ন পাউন্ড সামরিক সহায়তা উদ্যোগের অংশ। এ বছর ইউক্রেনের সেনাদের প্রশিক্ষণের জন্য যুক্তরাজ্য আরও ২৪৭ মিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় করবে। গত সোমবার প্রকাশিত স্ট্র্যাটেজিক ডিফেন্স রিভিউর অংশ হিসেবে ব্রিটিশ সরকার ইউক্রেনের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে যুক্তরাজ্য সশস্ত্র বাহিনীর জন্য স্বায়ত্তশাসিত ব্যবস্থা ও ড্রোনের জন্য ৪ বিলিয়ন পাউন্ডের বেশি বরাদ্দ ঘোষণা করে।
এর আগে ২ জুন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার জানান, বিশ্বে ক্রমবর্ধমান অস্থিরতা ও রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে দেশকে ‘যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত অবস্থায়’ নিয়ে যেতে হবে। নতুন প্রতিরক্ষা কৌশলের অংশ হিসেবে তিনি ১২টি সাবমেরিন প্রস্তুতের পরিকল্পনা ছাড়াও পারমাণবিক ও অন্যান্য অস্ত্রে অর্থ ব্যয়ের ঘোষণা দেন।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লেভিট বলেছেন, প্রয়োজনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারেন। বুধবার সামা টিভি জানায়, এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে লেভিট বলেন, ফিলিস্তিনিদের খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য গাজা রিলিফ ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়েছে। সাহায্যের জন্য অপেক্ষমাণ মানুষের ওপর গুলিবর্ষণের খবরকেও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়েছে।
লেভিট জানান, ইউক্রেনের ড্রোন হামলার বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আগে থেকে জানতেন না। তবে ইউক্রেন যুদ্ধের শান্তিপূর্ণ সমাধান নিয়ে তিনি এখনও আশাবাদী। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আসন্ন ন্যাটো সম্মেলনে অংশ নেবেন এবং বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ইতিবাচক বাণিজ্যচুক্তিতে যুক্ত রয়েছে। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ইরানকে একটি পারমাণবিক চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছেন। ইরান যদি এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে, তবে তা মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনবে।
পানির নিচে বিস্ফোরক রেখে রাশিয়ার কার্চ সেতুতে হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। দেশটির নিরাপত্তা সংস্থা (এসবিইউ) বলছে, ‘কয়েক মাস’ প্রস্তুতির পর মঙ্গলবার সেতুটিকে নিশানা করে তারা। এসবিইউর বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, তারা ক্রিমিয়া সেতুর ভিত্তিস্তম্ভগুলোর নিচের অংশে প্রায় ১ হাজার ১০০ কেজি টিএনটির সমপরিমাণ শক্তির বিস্ফোরক স্থাপন করেছিল। এতে সেতুর ভিত্তির নিচের দিকের অংশ গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, হঠাৎ সেতুর একটি পিলারের কাছে বড় বিস্ফোরণ হয়। এতে পিলারটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইউক র ন য ক তর জ য ইউক র ন র প রস ত র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’
জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’