Samakal:
2025-06-06@08:48:41 GMT

যানবাহনের চাপ আছে যানজট নেই

Published: 5th, June 2025 GMT

যানবাহনের চাপ আছে যানজট নেই

ঈদযাত্রায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানচলাচল ও যাত্রীর চাপ বেড়েছে। তবে মহাসড়কের সোনারগাঁয়ের অংশে কোথাও যানজট দেখা যায়নি।

গতকাল বুধবার সকালে মহাসড়কের কাঁচপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে মদনপুর, মোগরাপাড়া চৌরাস্তা ও মেঘনা টোলপ্লাজায় এমন চিত্র দেখা যায়। গতকাল দিনভর মহাসড়কের এসব পয়েন্টে কোনো যানজট ছিল না। স্বাভাবিকভাবে যানবাহন চলাচল করেছে। স্বাভাবিক দিনগুলোর তুলনায় যানবাহনের চাপ অনেকটা বেড়েছে। একই সঙ্গে বাস কাউন্টারগুলোতে ঘরমুখী যাত্রীদের চাপও চোখ পড়েছে। 

এদিকে দূরপাল্লার কয়েকজন যাত্রীর অভিযোগ, নির্ধারিত ভাড়ার চেয়েও ১০০-২০০ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে। তবে, ভাড়া বেশি আদায়ের কথা অস্বীকার করেছে বাস কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা লোকজন।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কাঁচপুর বাসস্ট্যান্ডে ‘আল্লাহর দান’ বাস কাউন্টারে দাঁড়িয়ে রয়েছেন শহিদ মিয়া নামের এক যাত্রী। তিনি কুমিল্লা যাবেন। তিনি জানান, গ্রামে কোরবানি দেবেন, তাই গতকাল চলে যাচ্ছেন। রাস্তা ফাঁকা রয়েছে বলে জেনেছেন। কাউন্টার কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে ১০০ টাকা বেশি আদায় করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। 

তবে ‘আল্লাহর দান’ বাস কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা আশরাফ মিয়া বলেন, তাদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ সত্য নয়।

চাঁদপুরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে দুই সন্তান নিয়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছেন রোকেয়া আক্তার। তিনি বলেন, তারা প্রতিবছর গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে ঈদ উদযাপন করেন। গার্মেন্ট কারখানাগুলোর ছুটি ঘোষণা হলে ভোগান্তির আশঙ্কা আছে। তাই রাস্তা ফাঁকা থাকায় শ্বশুরবাড়ি চলে যাচ্ছেন। তাঁর স্বামী (আজ) বৃহস্পতিবার ছুটি পেয়ে বাড়ি যাবেন।

কাঁচপুর বাসস্ট্যান্ডের একুশে এক্সপ্রেস বাস কাউন্টারে টিকিট বিক্রির দায়িত্বে থাকা জুয়েল রানা বলেন, তাদের এখানে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হয় না। নির্ধারিত ভাড়াই দিতে চান না যাত্রীরা। ৯০০ টাকার ভাড়া বলে ৭০০ টাকা। তাদের এখানে আগের ভাড়াতেই টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে।

কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের ওসি কাজী ওয়াহিদ মোর্শেদ বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ফাঁকা রয়েছে। তবে ঢাকা-সিলেট সড়কে মেরামত কাজ করায় গাড়ি একটু ধীরগতিতে যাতায়াত করছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা রয়েছে। এ ছাড়া সেনাবাহিনীর সদস্যরাও টহল দিচ্ছে। মোট ৬০ জন পুলিশ সদস্য মহাসড়কে কাজ করবে। এবার ঈদযাত্রার মানুষ নির্বিঘ্নে তাদের গন্তব্য পৌঁছাতে পারবে বলে তিনি আশাবাদী। বাস কাউন্টারে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে তিনি বলেন, তাদের কাছে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেননি। এ বিষয়ে তারা খোঁজখবর নিচ্ছেন বলে জানান তিনি।

সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ মফিজুর রহমান বলেন, থানার পাশ দিয়ে মহাসড়ক থাকায় ঈদে ঘরমুখী মানুষের নিরাপত্তায় অতিরিক্ত টহল বাড়ানো হয়েছে। তাদের দল সর্বক্ষণ মহাসড়কে টহল দিচ্ছে। মানুষ নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ব স ক উন ট র

এছাড়াও পড়ুন:

মহাখালী টার্মিনালে বাস নেই, অনেক যাত্রীর টিকেট ফেরত

কোরবানির ঈদের মাত্র একটি রাত বাকি। বুধবার (৫ জুন) থেকে লম্বা ছুটি শুরু হওয়ায় গ্রামে ঈদ-আনন্দ ভাগাভাগি করতে মানুষ ঢাকা ছাড়তে শুরু করে। ঈদের আগের দিন শুক্রবার (৬ জুন) সকাল থেকে বাড়ি যেতে মহাখালী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে ভিড় করছেন। তবে সকাল থেকে উত্তরবঙ্গের রুটে বাস নেই। তাই অনেক যাত্রী টিকেট ফেরত দিচ্ছেন।

অন্যান্য রুটে বাস থাকলেও তা নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অনেক দেরিতে ছাড়ছে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। এতে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নারী ও শিশুদের।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পথে পথে ব্যাগ হাতে যাত্রীদের অবস্থান করতে দেখা গেছে। তারা সবাই ঈদ করার উদ্দেশ্যে বাড়ি যাচ্ছেন।

আরো পড়ুন:

আজ সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা

ভিড় বেড়েছে রাজধানীর পশুর হাটে

ঈদযাত্রা সহজ করতে মহাখালী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে ভিজিলেন্স টিমের দায়িত্বরত সদস্যরা জানান, এখন যাত্রীর চাপ বেশি, বাসের সংখ্যা কম। বিভিন্ন জেলায় যানজট থাকায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাস ঢাকায় ঢুকতে পারছে না। তাই টার্মিনাল থেকে বাস ছাড়তে সময় লাগছে। এ সব অভিযোগ নিয়ে কেউ কেউ ভিজিলেন্স টিমের সঙ্গে কথা বলছেন।

বাস কাউন্টার থেকে বলা হচ্ছে, যমুনা সেতুর পূর্বপ্রান্ত থেকে টাঙ্গাইল শহর বাইপাস পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটারে যানজট হয়েছে। এছাড়াও গাজীপুরসহ মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে যানজটের কারণে ঢাকায় বাস আসতে দেরি হচ্ছে। বিভিন্ন বিভাগ ও জেলা থেকে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মহাখালীর উদ্দেশে ছেড়ে আসা বাস এখনো পৌঁছায়নি। আবার মহাখালী থেকে শুক্রবার (৬ জুন) সকালে ছেড়ে গেছে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাতের শিডিউলের বাস। ফলে শুক্রবার (৬ জুন) সকালের শিডিউলের বাস কখন ছাড়া হবে তার নিশ্চয়তা দেয়া যাচ্ছে না।

শুক্রবার (৬ জুন) সকালে রাজধানীর মহাখালী থেকে ময়মনসিংহগামী বাস ছেড়ে যাচ্ছে। দূরপাল্লার বাসের টিকিটের জন্যেও ছিল দীর্ঘ লাইন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রী সংখ্যাও বাড়ছে। তবে যানবাহনের চেয়ে মানুষ বেশি। যাত্রীদের তুলনায় বাসের কিছুটা সংকট রয়েছে। এ টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যাওয়া বেশিরভাগ বাসের কাউন্টার থেকে অগ্রিম টিকেট বিক্রি করছে না। বাস ছাড়ার আগে টিকেট বিক্রি করছে।

শুক্রবার সকালে মহাখালী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের সামনের সড়ক, টার্মিনাল ভবন ও মেঝেতে এবং ফাঁকা জায়গায় শত শত নারী, পুরুষ ও শিশুকে বাসের অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে অনেকে ব্যাগের ওপর বা নিচে কাগজ বিছিয়ে বসে পড়েন। এদিন সকাল থেকে রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া থাকায় গরমে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে যাত্রীদের। বিশেষ করে শিশু ও নারীদের বেশি কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছে। অনেক নারীদের হাতে ছিল হাত পাখা, তবু স্বস্তি লক্ষ্য করা যায়নি।

ঢাকা থেকে ময়মনসিংহগামী বাসের কাউন্টারের সামনে যাত্রীদের দীর্ঘ অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। ঢাকা থেকে হবিগঞ্জ ও সিলেটগামী বাসের কাউন্টারের সামনেও যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে।

একতা পরিবহনের বাসে চাঁপাইনবাবগঞ্জে যাওয়ার জন্য সকাল ৮টার টিকেট কেটে ছিলেন সেলিম মিয়। কিন্তু সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত বাস ঢাকায় ফেরেনি। ভারাক্রান্ত মন নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘কখন বাস আসবে এবং কখন ছাড়বে, তা বলতে পারছেন না কাউন্টারে দায়িত্বরা। তারা শুধু বলছেন, ঢাকায় বাস আসলেই দ্রুত ছেড়ে দেয়া হবে।’’ 

একতা পরিবহনের টিকেট কাউন্টারে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা জানান, শুক্রবার সকালে যে বাস ঢাকা ছেড়ে গেছে, সেটা বৃহস্পতিবার রাতে ছাড়ার কথা ছিল। বাস ঢাকায় আসলে শুক্রবারের সকালের যাত্রীদের পাঠানো হবে। মূলত যমুনা সেতুর পূর্বপ্রান্ত থেকে টাঙ্গাইলে অনেক যানজট থাকার কারণে বাস ঢাকায় ফিরে আসতে পারছে না। ফলে ঢাকা থেকে সেটা ফিরে যেতেও সময় লাগছে।

ইউনাইটেড পরিবহনে করে ময়মনসিংহ যাবেন ফাতেমা বেগম। তিনি বলেন, ‘‘প্রায় এক ঘণ্টা ধরে বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। শুনতেছি, একটু পরে বাস চলে আসছে। একটুপর একটুপর বলতে বলতে ঘণ্টা পেরিয়ে যাচ্ছে। বাস আসার নাম নেই। বাসের অপেক্ষা করতে করতে বাচ্চারা কষ্ট পাচ্ছে।’’ 

রাজধানীর মহাখালী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে থেকে ময়মনসিংহ, জামালপুর, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর, শেরপুর, টাঙ্গাইল এবং উত্তরবঙ্গের কয়েকটি রুটের বাস চলাচল করে।

ঢাকা/এনটি/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ