সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১৫ কিলোমিটার গাড়ির চাপ
Published: 5th, June 2025 GMT
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড অংশে প্রায় ১৫ কিলোমিটার জুড়ে গাড়ির চাপ রয়েছে। ফলে ঈদযাত্রায় ঘরমুখো মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন।
মূলত ভাটিয়ারি এলাকায় ঢাকামুখী লেনে একটি দুর্ঘটনার কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সীতাকুণ্ডের বার আউলিয়া হাইওয়ে থানার ওসি আবদুল মুমিন জানান, বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকাল ৯টার দিকে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকায় ঢাকামুখী লেনে একটি ট্রাকে পেছন থেকে দুইটি গাড়ি একের পর এক ধাক্কা দেয়। প্রায় আধঘণ্টার মতো সড়ক যান চলাচল বন্ধ ছিল। পরে পুলিশ গিয়ে দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িগুলো সরিয়ে নিলে যানবাহন স্বাভাবিক গতিতে চলতে শুরু করে।
আরো পড়ুন:
ঈদযাত্রা: বাস টার্মিনালে ভিড়, পথে পথে ঘরমুখো মানুষ
গাজীপুরের সড়কে ধীরে চলছে গাড়ি, ভোগান্তি
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের হানিফ পরিবহনের একটি বাসের সুপারভাইজার মোজাম্মেল হোসেন বলেন, “চট্টগ্রামের সিটি গেইট থেকে সীতাকুণ্ড পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার যানজট রয়েছে। যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।”
চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা অভিমুখী শ্যামলী পরিবহনের যাত্রী মোহাম্মদ পারভেজ বলেন, “সীতাকুণ্ডে আটকে ছিলাম। দুপুর ১২টার পর থেকে বাস ধীর গতিতে থেমে থেমে চলছে।”
হাইওয়ে পুলিশ জানিয়েছে, পুলিশের একাধিক টিম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন প্রান্তে কাজ করছে। চট্টগ্রাম জেলা পুলিশও রয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যেই সীতাকুণ্ড মিরসরাই অংশে যানজট পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন
এছাড়াও পড়ুন:
মাঝরাতে সরকারি কর্মকাণ্ড কতটা স্বাভাবিক
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের রাতের কর্মকাণ্ড নিয়ে বোধকরি একটা মহাকাব্য লিখে ফেলা সম্ভব। তাঁরা যেভাবে গভীর কিংবা শেষ রাতে নানা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, ফেসবুকে বার্তা দিচ্ছেন; তাতে তো মনে হচ্ছে সরকারের কর্তা-ব্যক্তিরা দিনে কাজ না করে রাতেই মনে হয় বেশি কাজ করেন! কয়েকটা উদাহরণ বরং দেওয়া যাক।
মাস কয়েক আগে যখন দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্বাভাবিক ভাবে খারাপ হয়ে গেল, আমাদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী রাত তিনটার সময় সংবাদ সম্মেলন ডাকলেন! বাংলাদেশের ইতিহাসে রাত তিনটার সময় আর কোনো মন্ত্রী এ ধরনের সম্মেলনের আয়োজন করেছেন কি না, আমার অন্তত জানা নেই। আমরা সবাই ভাবলাম, তিনি হয়তো বড় কোনো ঘোষণা দেবেন। এরপর কী দেখলাম?
তিনি খুব সাধারণভাবে বললেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য সরকার নিজেদের উদ্যোগকে কঠিন ও শক্তিশালী করার চেষ্টা করবে।
সপ্তাহখানেক আগে হঠাৎ আকাশ থেকে একটি যুদ্ধবিমান ঢাকা শহরের উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল বিল্ডিংয়ে ভেঙে পড়ল। আগুনে দগ্ধ শিশুরা ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে নিজেরা উঠে এসে হাঁটছে; এমন দৃশ্যও আমাদের দেখতে হয়েছে। যে দৃশ্য দেখলে যে কেউ হয়তো ট্রমায় চলে যাবে। ওই স্কুলের এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা হয়তো সরাসরি সেই দৃশ্য দেখেছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই চলতে থাকে—এইচএসসি পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া সময়ের দাবি ছিল। এ সিদ্ধান্ত সরকার দিনের বেলাতেই নিতে পারত। অথচ আমরা কী দেখলাম?
সরকারের পক্ষ থেকে রাত তিনটার দিকে ফেসবুকে এসে ঘোষণা করা হলো, পরের দিনের এইচএসসি পরীক্ষা পেছানো হয়েছে।
যখনই আপনি সরকারের অস্বাভাবিক আচরণ নিয়ে প্রশ্ন করবেন কিংবা আপনার মনে এই প্রশ্ন জাগবে; তখনই কিন্তু রাষ্ট্র ভালো আছে কি না; সেই প্রশ্নও সামনে আসবে।দিন দু-এক আগে এ সরকারকেই যাঁরা চাকরি দিয়েছেন, এ কথা বলছি কারণ, সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিজেই বলেছিলেন, ‘ছাত্ররা আমার নিয়োগকর্তা’—সেই ছাত্রদের সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা গভীর রাতে ফেসবুক এসে লাইভ করেন প্রায় আড়াই ঘণ্টা।
এই আড়াই ঘণ্টার লাইভে মূল যে বক্তব্য তিনি তুলে ধরেছেন, সারমর্ম করলে দাঁড়ায়: বৈষম্যবিরোধী প্ল্যাটফর্ম মানি মেকিং মেশিনে পরিণত হয়েছে এবং অনেকেই এর সঙ্গে জড়িত। তিনি এটাও বলেছেন, এই সংগঠনের সব সিদ্ধান্ত হেয়ার রোড থেকে আসে। অর্থাৎ উপদেষ্টারা যেখানে থাকেন।
এদিকে সোমবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম একটা ফেসবুক পোস্ট করেছেন। যদিও ফেসবুক স্ট্যাটাসটি তিনি বেশ কয়েকবার এডিট করেছেন। তবে প্রথমে যা লিখেছেন, সেটা হচ্ছে, নতুন একটি দলের মহারথীদের কয়েকজন দুর্নীতিতে জড়িত। এ ছাড়া তিনি এটাও বলেছেন, একটা সার্কেলের সবাই দুর্নীতিগ্রস্ত!
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে তাঁদের কেন প্রশ্রয় দেওয়া হলো? আপনারা যদি জানেনই কিছু মানুষ দুর্নীতিগ্রস্ত। তাহলে সরকারের অংশ হিসেবে আপনাদের তো দায়িত্ব তাঁদের আইনের আওতায় আনা। সেটা না করে ফেসবুকে পোস্ট করতে হচ্ছে কেন? তা–ও আবার রাত তিনটায়!
এই সরকার কি মাঝরাতের ফেসবুকীয় সরকারে পরিণত হয়েছে? পরীক্ষা পেছানোর মতো সিদ্ধান্ত যখন মাঝরাতে নিতে হয়, সংবাদ সম্মেলন যখন রাত তিনটায় করতে হয়, তখন তো প্রশ্ন জাগতেই পারে। কারণ এটা তো স্বাভাবিক কোনো বিষয় নয়।
যখনই আপনি সরকারের অস্বাভাবিক আচরণ নিয়ে প্রশ্ন করবেন কিংবা আপনার মনে এই প্রশ্ন জাগবে; তখনই কিন্তু রাষ্ট্র ভালো আছে কি না; সেই প্রশ্নও সামনে আসবে।
রাষ্ট্র যদি ভালো না থাকে তবে তার মাত্রা কতটুকু, সেটা নির্ণয় এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।
আমিনুল ইসলাম প্রভাষক, এস্তোনিয়ান এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ ইউনিভার্সিটি
[email protected]