এক ঘণ্টা দেরিতে ছেড়েছে ট্রেন, ছোট্ট আরিফুলের কষ্ট
Published: 5th, June 2025 GMT
চট্টগ্রাম নগরে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আমিরুল ইসলামের বাড়ি চাঁদপুরে। পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটি কাটাতে আজ বৃহস্পতিবার তিনি বাড়ি যাচ্ছিলেন। বেলা আড়াইটায় চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছান। চাঁদপুরগামী বিশেষ ট্রেনের টিকিট কেটেছিলেন। ট্রেন ছাড়ার কথা ছিল বেলা ৩টা ২০ মিনিটে। অথচ এটি ছেড়েছে ৪ টা ১২ মিনিটে, প্রায় ১ ঘণ্টা দেরিতে।
বিকেল ৪টার দিকে আমিরুল ইসলাম ট্রেনের একটি বগিতে দাঁড়িয়ে ১৭ মাস বয়সী ছেলে আরিফুল ইসলামকে বাতাস করছিলেন। তাঁর একমাত্র সন্তানকে কোলে নিয়ে ট্রেনের আসনে বসতে পেরেছেন স্ত্রী। আমিরুল ইসলাম আসন পাননি। ছেলেকে বাতাস করতে করতে এই বাবা বলেন, বগিতে ফ্যান নেই। গরমে ছেলেটা কাহিল হয়ে পড়েছে। ঠিক সময়ে ট্রেন ছাড়লে এত ভোগান্তি পোহাতে হতো না।
শুধু আমিরুল নয়, দেরিতে ট্রেন ছাড়ার কারণে তার মতো অনেক শিশুকেই ভোগান্তি পোহাতে দেখা গেল। ট্রেনটির সব বগিতেই গাদাগাদি করে ঘরমুখী যাত্রীরা উঠেছিলেন।
স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে ট্রেন ছাড়ার অপেক্ষায় ছিলেন সৈয়দ মোহাম্মদ আরাফাত। তিনি চট্টগ্রামের একটি শিপিং প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। থাকেন নগরের ইপিজেড এলাকায়। তাঁর বাড়িও চাঁদপুর সদরে। আরাফাত প্রথম আলোকে বলেন, ঝক্কিঝামেলা এড়াতে ট্রেনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু স্টেশনে এসে ভোগান্তি পোহাতে হলো।
স্টেশনে কথা হয় মোজাম্মেল হকের সঙ্গে। তাঁর বাড়ি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে। তাঁর মেয়ের বয়স ৩ বছর। মেয়েকে নিয়ে স্ত্রী সালমা হক বেশ ভোগান্তিতেই পড়েছিলেন। কোনোভাবেই মেয়েকে ট্রেনের ভেতর রাখা যাচ্ছিল না। পরে কোলে নিয়ে বাবা দাঁড়িয়ে ছিলেন স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ফ্যানের নিচে।
চাঁদপুরগামী বিশেষ ট্রেনের প্রতিটি বগিই ছিল যাত্রীতে ঠাসা। আজ বিকেলে চারটায় চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’
জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’