হাট মাতাচ্ছে ‘জিল্লু’, এক দাম সাড়ে পাঁচ লাখ
Published: 5th, June 2025 GMT
‘মামু হাট ঘুরি চঅ, এরহম গরু আর নঅ পাইবা। নাম অইলদে জিল্লু। এব্বেরে ফার্স্টক্লাস। এক দাম সাড়ে ৫ লাখ।’ এভাবেই চট্টগ্রামের ভাষায় এক ক্রেতার মনোযোগ আকর্ষণ করছিলেন ব্যাপারী মোহাম্মদ লানু। তাঁর কথা বাংলায় দাঁড়ায়, ‘হাট ঘুরে দেখেন, এ রকম গরু আর পাবেন না। নাম হলো জিল্লু। একেবারে ফার্স্টক্লাস। এক দাম সাড়ে ৫ লাখ।’
জিল্লুর দেখা পাওয়া গেল আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাটের এক কিলোমিটার এলাকায় বসা কর্ণফুলী পশুর হাটে। হাটে ঢুকতেই এক পাশে খুঁটিতে বেঁধে রাখা হয়েছে জিল্লুকে। শিশুরা গরুটির মাথায় কখনো হাত বোলাচ্ছিল। কেউ সেলফি তুলছিল।
ব্যাপারী মোহাম্মদ লানু জানালেন, চন্দনাইশ থেকে ১০টি গরু নিয়ে এসেছেন তাঁরা। মাত্র দুটি বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে জিল্লুর দাম চাইছেন সাড়ে ৫ লাখ টাকা। এটি ওজনে প্রায় ১৪ মণ। প্রতি বেলায় ভাত, ভুসি, মিষ্টিকুমড়া, ছোলা, সবুজ ঘাসসহ নানা খাবার খাওয়াতে হয়। জিল্লুর বয়স প্রায় তিন বছর।
আক্ষেপ করে এ ব্যাপারী বলেন, ‘সবাই দেখে দেখে চলে যাচ্ছেন। কেউ কেউ ছবি তুলছেন। কিন্তু কাছাকাছি দামও কেউ বলছেন না। তবে আমরা আশাবাদী, কাল শুক্রবারের মধ্যেই জিল্লুসহ বাকি সব গরু বিক্রি হয়ে যাবে।’
কিছুদিন আগে শাকিব খান অভিনীত বরবাদ নামের একটি সিনেমা মুক্তি পায়। ওই সিনেমায় অভিনয় করে ভারতীয় অভিনেতা স্যাম ভট্টাচার্য ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন। সিনেমাটিতে শাকিব খানের ব্যক্তিগত সহকারী ‘জিল্লু’ চরিত্রে দেখা গেছে তাঁকে। মূলত তাঁর উদ্দেশে শাকিব খানের একটি সংলাপ বেশ ভাইরাল হয়েছে। এটি হলো, ‘ওই জিল্লু, মাল দে’। ব্যাপারী মোহাম্মদ লানু মূলত ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য গরুটির নাম দিয়েছেন ‘জিল্লু’।
পশুর হাটে ক্রেতার ভিড়। আজ বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের কর্ণফুলী পশুর হাটে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’
জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’