সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে জয়ই হবে কাবরেরার ঈদ উপহার
Published: 6th, June 2025 GMT
আগামীকাল পবিত্র ঈদুল আজহা। দেশজুড়ে ঈদের আমেজ, ছুটির ফাঁকে অনেকেই গ্রামে বা প্রিয়জনের কাছে পাড়ি জমিয়েছেন। তবে জাতীয় দলের ফুটবলারদের ছুটি নেই। ঈদের তিন দিন পর ১০ জুন জাতীয় স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ–সিঙ্গাপুর।
এই ম্যাচে জয় চাইছেন হাভিয়ের কাবরেরা। তাঁর ভাষায়, এটিই হতে পারে দেশবাসীর জন্য ‘ঈদের উপহার’। শুক্রবার বিকেলে জাতীয় স্টেডিয়ামে জাতীয় দলের অনুশীলনের আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বাংলাদেশ কোচ বলেন, ‘অবশ্যই, আমরা সিঙ্গাপুরকে হারিয়ে দেশবাসীকে ঈদের উপহার দিতে চাই।’
কাবরেরার কণ্ঠে ছিল আত্মবিশ্বাসের পাশাপাশি বাস্তবতা। ভুটানের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে জামালের কর্নার থেকে হামজা চৌধুরীর হেডে ম্যাচের প্রথম গোল এসেছিল ষষ্ঠ মিনিটেই।
হামজার সেই হেড, যেটায় গোল হয়েছে।.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
লতাগুল্ম কেটে আকাশমণি রোপণ, খাদ্যসংকটে হাতি
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ঈদগড় বাজার থেকে ঈদগড় সড়ক ধরে চার কিলোমিটার এগোলে ভোমরিয়াঘোনা সংরক্ষিত বন। কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় অবস্থিত এই বন এশিয়ান হাতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি চলাচলের ক্ষেত্র (করিডোর)। ২০২৩ সাল পর্যন্ত শতবর্ষী গর্জন, বৈলাম, চাপালিশগাছে ভরপুর বনটিতে ঘন ঝোপঝাড়, লতাগুল্মের প্রাচুর্য ছিল। দেখা যেত হাতির পালের বিচরণ। তবে টেকসই বন ও জীবিকা প্রকল্পের (এসইউএফএএল বা ‘সুফল’) আওতায় বনায়ন করতে গিয়ে ঝোপঝাড়-লতাগুল্ম কেটে ফেলা হয়েছে। এতে বনের এই অংশে হাতির খাদ্য কমে গেছে। ফলে প্রাণীগুলোর বিচরণও কমে গেছে।
১৪ মে ভোমরিয়াঘোনায় গিয়ে ঈদগড় সড়কের পাশেই বন বিভাগের সুফল প্রকল্পের একটি ফলক চোখে পড়ল। তাতে লেখা আছে, এখানে ১০ হেক্টর জায়গায় ১৫ হাজার চারা রোপণ করা হয়েছে। ফলকে এই বনায়নকে এএনআর (অ্যাসিস্টেড ন্যাচারাল রিজেনারেশন) বলা হয়েছে। অর্থাৎ প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো চারাকে বড় হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করার জন্য এই বনায়ন। তবে বনের ভেতরে ঢুকতেই দেখা গেল, সম্প্রতি নিষিদ্ধঘোষিত আকাশমণিগাছের চারা। এই প্রতিবেদক বনের আধা কিলোমিটারের মতো ভেতরে যান। পুরো পথে আকাশমণির চারা দেখতে পাওয়া যায়। বনের আন্ডারগ্রোথ অর্থাৎ গাছের নিচে জন্ম নেওয়া নানা ধরনের লতাগুল্ম, ছোট উদ্ভিদ—সেগুলো কেটে ফেলা হয়েছে।
কোথায় কোন ধরনের বনায়ন করতে হবে, তা বলা আছে সুফল প্রকল্পের ‘বন পুনরুদ্ধার ও বিভিন্ন বনায়ন পদ্ধতির নির্দেশিকা’য়। এতে এএনআর, এফজিএস (ফাস্ট গ্রোয়িং স্পেসিজ বা দ্রুত বর্ধনশীল প্রজাতি), এসজিএস (স্লো গ্রোয়িং স্পেসিজ বা দীর্ঘ মেয়াদে বর্ধনশীল প্রজাতি) চারা রোপণের মতো ৩২ রকমের বনায়নের কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতি হেক্টরে চারার সংখ্যা কত হবে, তা–ও নির্ধারণ করে দেওয়া আছে। যেমন এএনআর বনায়ন করতে হবে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো চারাকে সুরক্ষা দিয়ে। অথচ ভোমরিয়াঘোনায় বনের ঈদগড় সড়ক লাগোয়া অংশে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো চারার দেখা পাওয়া গেল না। বন কেটে লাগানো হয়েছে ১৫ প্রজাতির গাছের ১৫ হাজার চারা। নির্দেশিকা অনুযায়ী এএনআর বনায়নে হেক্টরপ্রতি ৫০০ চারা রোপণের কথা; এখানে লাগানো হয়েছে ১ হাজার ৫০০ করে।
প্রাকৃতিক বনে হস্তক্ষেপ করলে হাতি কেন, অন্যান্য বন্য প্রাণীও সংকটে পড়ে যাবে। প্রকৃতিই আসলে নির্ধারণ করবে কে কীভাবে বেঁচে থাকবে। মানুষের হস্তক্ষেপ যত কমানো যায়, তত ভালো। অধ্যাপক এম এ আজিজ, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সরেজমিনে দেখা যায়, ভোমরিয়াঘোনার সংরক্ষিত বনের এক পাশে পুরোটাই কেটে নতুন বনায়ন করা হয়েছে। অন্য পাশে রয়ে গেছে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো ঘন বন। বন রক্ষার মাঠপর্যায়ের একজন কর্মকর্তা (ফরেস্টার) নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, প্রচণ্ড রোদে হাতিরা বনের এই অংশের ছায়ায় বিশ্রাম নেয়। রোদের তেজ কমলে বের হয়ে বনের ডোবায় পানি আর নলখাগড়া খায়।
অথচ সুফল প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে বৃক্ষশূন্য ও অবক্ষয়িত বনাঞ্চলে বনায়নের জন্য। অর্থাৎ বনের যে অংশে গাছপালা নেই এবং যেসব অংশে গাছপালা কমে যাচ্ছে, সেসব অংশে নতুন করে গাছের চারা লাগানো হবে।
প্রকল্পের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, বনায়নে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, সে অনুযায়ী বৃক্ষশূন্য বা অবক্ষয়িত বনাঞ্চল নেই বন বিভাগের অধীনে। তাই বনের গহিনে এসব বনায়ন করেছে কেউ কেউ। তিনটি জেলা থেকে এফজিএস (দ্রুত বর্ধনশীল প্রজাতি) বনায়নের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ভোমরিয়াঘোনা বনের কিছুটা ভেতরে লাগানো আকাশমণিগাছের চারা। ১৪ মে