ঈদ এলেই সবারই স্বপ্ন বাড়ি যাবে। কিন্তু ব্যতিক্রম শুধু প্রবাসীদের বেলায়। ইচ্ছে থাকলেও বাস আর ট্রেনের টিকিট কেটে দেশের বাড়িতে যাওয়া যায় না তাদের। দেখা হয় না মমতাময়ী মা বাবা পরিবার আর স্বজনদের সঙ্গে।
কানাডায় নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানি দেওয়া বাধ্যতামূলক। কেউ কেউ ছুটে যান শহরের অদূরের ফার্মগুলোতে। কারও কাওে অর্ডার থাকে গ্রোসারি দোকানে, যেখানে কোরবানির মাংস পেতে তিন চার দিন সময় লেগে যায়। আবার কারও কারও থাকে কর্মদিবস। তবুও খুব ভোরে নতুন পোশাক পরে আগেভাগে বের হয়ে পড়েন ঈদের নামাজ আদায় করতে।
যান্ত্রিকতাময় প্রবাস জীবনে ঈদের দিনে প্রবাসী বাঙালিরা মিলিত হন একে অপরের সঙ্গে। শ্রদ্ধা ভালবাসা আর সহমর্মিতায় পরিণত হয় মিলনমেলার।সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সবাই একত্রিত হয়ে মেতে ওঠেন নানা গল্প আর আড্ডায়।
আডডায় ঈদ আনন্দের সঙ্গে উঠে আসে দেশের সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার। আড্ডার পাশাপাশি চলে ঈদ উপলক্ষে নানা সুস্বাদু খাবার। বিরিয়ানি, পোলাও, কোর্মা, মাংসের চপ, রোস্ট, জর্দা আর গৃহবধূদের নিজ হাতের তৈরি দইসহ নানামাত্রিক রান্না করা খাবারের আয়োজন।
এই মহামিলনের পাশাপাশি প্রবাস থেকে দেশের আত্মীয় স্বজনের সঙ্গেও চলে টেলিফোনে আলাপচারিতা। এই আলাপে কারও কারও নয়ন ভেসে আসে জলে। অশ্রুসিক্ত নয়নে দেশে একসঙ্গে ঈদ না করতে পারার আক্ষেপও।
প্রবাসে ঈদ উদযাপন নিয়ে সেলেস্টিয়া প্রোডাক্শনস অ্যান্ড পিয়ারলেস কলেজের প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড সি ই ও ডা.
ইঞ্জিনিয়ার জাহিদ আলম বলেন, ঈদের দিন সময় বের করে বাংলাদেশের আত্মীয় স্বজন, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে ফোনে কথা হয়। বিশেষ এই দিনে দেশের কথা, স্বজনদের কথা খুব মনে পড়ে। শৈশবের সেই আনন্দের ঈদের দিন, সময় আর কখনই ফিরে পাওয়ার নয়, সেই সময়ের ঈদ এখন কেবলই স্মৃতি।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কেন্দ্রীয় কারাগারে ঈদের বিশেষ আয়োজন
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারসহ দেশের সব কারাগারে বিনোদন ও খাবারের বিশেষ আয়োজনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তিনটি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে কয়েদি ও হাজতিদের জন্য গরু ও খাসি জবাই করা হয়েছে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার জানান, শনিবার কারাগারে অনুষ্ঠিত তিনটি জামাতের মধ্যে একটি বন্দিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। অন্য দু'টি জামাত ছিল স্টাফদের জন্য।
তিনি আরও জানান, কেন্দ্রীয় কারাগারে দিনব্যাপী বিশেষ আয়োজনে থাকছে বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও খেলাধুলার আয়োজন। বিশেষ খাবারের জন্য ঠিকাদারের মাধ্যমে আটটি গরু ও ১০টি খাসি জবাই করা হয়েছে। এছাড়া ঈদুল আজহা উপলক্ষে শুক্রবার ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার দুঃস্থ বন্দিদের জন্য ৬০০টি লুঙ্গি এবং ৮৫০টি টি-শার্ট বিতরণ করা হয়।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার একেএএম মাসুদ বলেন, বন্দিরা শনিবার ঈদের দিনের শুরুতেই সকালে নাস্তায় পেয়েছেন পায়েস ও মুড়ি। দুপুরে মুরগির রোস্ট, গরু ও খাসি (যারা গরু খাবেন না) দেওয়া হবে। এছাড়া কোমল পানীয়, সালাদ, পান সুপারি ও মিষ্টান্ন থাকবে। রাতের আয়াজনে থাকবে ভাত, মাছ, এবং আলুর দম।
কারা অধিদপ্তর বলছে, প্রতি বছর দুই ঈদে সারাদেশের কারাগারগুলোতে বিশেষ আয়োজন থাকে। ঈদের নামাজ আদায়, বিশেষ খাবার এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও বিনোদন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ঈদ আনন্দে মেতে থাকেন কয়েদি ও হাজতিরা। স্বজনদের সঙ্গে অতিরিক্ত সময় দেখা করার সুযোগ ও বাড়ির রান্না করা খাবার গ্রহণের সুযোগও পান তারা। এবারের ঈদুল আজহায়ও এর ব্যতিক্রম হয়নি।
এর আগে বৃহস্পতিবার ঢাকা বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) মো. জাহাঙ্গীর কবির জানান, ঈদের দিন আরপি গেটে বন্দির আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে উপহার ও সুভেনিয়র বিতরণ করা হবে। ঈদের পরদিন বন্দিদের জন্য বাইরের রান্না করা খাবার গ্রহণ ও বিতরণ করা হবে।
এছাড়া ঈদের তৃতীয় দিন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাধারণের অংশগ্রহণে প্রিজন ম্যারাথন-২০২৫ আয়োজন ও পুরস্কার বিতরণ, কর্মকর্তা কর্মচারী ও তাদের পরিবারের অংশগ্রহণে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হচ্ছে।