রাজধানীর ধানমন্ডি লেক, হাতিরঝিল ও সদরঘাটের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন জাদুকর। হঠাৎ সড়ক থেকে উঠে যান ৪০ ফুট উপরে, ভাসেন বাতাসে। এমনই ভিন্নধর্মী অভিজ্ঞতা নিয়ে মুক্তি পাচ্ছে তরুণ ম্যাজিশিয়ান রাজুর নতুন সিরিজ ‘লাইফ ইজ ম্যাজিক’। বৃহস্পতিবার এ সিরিজের টিজার প্রকাশিত হয়।
ম্যাজিশিয়ান রাজু বলেন, জাদুর এই সিরিজ এক স্বপ্নের বাস্তবায়ন। এটা নিছক জাদু নয়, আমার ভালোবাসা ও জীবন দর্শন।
তিনি বলেন, প্রায় এক বছরের প্রস্তুতি ও সাধনার ফসল এই ম্যাজিক সিরিজ। প্রস্তুতির পর ছয় মাস ধরে কাজ করেছে একটি পূর্ণাঙ্গ টেকনিক্যাল টিম। আমি চেয়েছি ম্যাজিক জীবনের অংশ হোক। রাস্তায়, ট্রাফিকে, বাজারে। শত শত মানুষের সামনে। চেয়েছি, মঞ্চের গণ্ডি পেরিয়ে ম্যাজিক ঢুকে পড়ুক যাপিত জীবনে৷ সেই চাওয়া পূর্ণ হলো। মানুষের বিস্ময়মাখা আনন্দিত মুখ দেখে প্রাণ জুড়িয়েছে।
রাজু আরও বলেন, ম্যাজিকে এরকম কাজ বাংলাদেশে আগে কেউ করেনি। পথে পথে হাজার মানুষের ভিড়ে এমন ম্যাজিক দেখানো মানে শুধুই টেকনিক নয়। এজন্য সাহস লাগে, নিরাপত্তা লাগে আর লাগে দৃঢ় প্যাশন ও পরিকল্পনা।
তিনি বলেন, ম্যাজিক সিরিজে আলাদা কোনো পরিচালক নেই। কারণ, এখানে দৃশ্যগুলো ঘটেছে ভিড়ের সড়কে, হাজারও মানুষের সামনে। তাই পুরো টিমই এখানে যৌথভাবে কাজ করে।
সিরিজটির ডিওপি ছিলেন স্বনামধন্য সিনেমাটোগ্রাফার হৃদয় সরকার। প্রযোজনা করেছে উইচিং এন্টারটেইনমেন্ট। শুটিং হয়েছে রাজধানীর ধানমন্ডি লেক, হাতিরঝিল, সদরঘাট, কাওরান বাজার, পুরান ঢাকা ও ওয়ারীতে।
ম্যাজিশিয়ান রাজু বলেন, আমি একা নই। আমার সঙ্গে ছিল একদল মানুষ— ক্যামেরা ক্রু, প্রোডাকশন বয়, সহকারী সবাই। তারা না থাকলে এটা সম্ভব হতো না। তাদের পরিশ্রম, ধৈর্য ও বিশ্বাস আমাকে সাহস দিয়েছে। ‘লাইফ ইজ ম্যাজিক’ শিগগিরই মুক্তি পাবে একটি অনলাইন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে। তবে নির্দিষ্ট তারিখ ও প্ল্যাটফর্মের নাম এখনও ঘোষণা করা হয়নি।
রাজু বলেন, মানুষ যেভাবে সিনেমা-নাটক দেখে, তেমন করে ম্যাজিকও একদিন আমাদের বিনোদনের অংশ হয়ে উঠুক—সেই চেষ্টাই করছি। ম্যাজিক মানে শুধু শো নয়। এটা আমার ভালোবাসা, জীবনের অংশ।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’
জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’